দেওয়ানবাগীর মুখোশ উন্মোচন

ভণ্ডপীর দেওয়ানবাগীর মুখোশ উন্মোচন ও কুফরী আক্বিদাসমূহ

টেক্সট্ রেডীঃ মুহাম্মদ আব্দুল খালেক

একটু কষ্ট করে পড়ুন, সবার মাঝে এই ভণ্ডপীরের ভণ্ডামির অজানা কালো অধ্যায়ের তথ্য কথা জ্ঞাপন করুন ও মুখোশ খুলে দিন। নাম মাহবুবে খোদা, সর্বস্তরে দেওয়ানবাগী নামে পরিচিত। জম্ম ২৭ শে অগ্রহায়ণ ১৩৫৬ বাংলা মোতাবেক ১৪ ই ডিসেম্বর ১৯৪৯ ইংরেজী। জন্মস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থানাধীন বাহাদুরপুর গ্রামে। পিতা সৈয়দ আব্দুর রশিদ সরদার ও মাতা জোবেদা খাতুন। ছয় ভাই দুই বোন। ভাইদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। একনজরে দেওয়ানবাগীর লেখা এবং বলা কিছু আক্বিদা ও উক্তি এবং একই সাথে আক্বিদা ও উক্তিগুলোর রেফারেন্সও দেয়া হলঃ

বিঃদ্রঃ দয়া করে প্রতিটা আক্বিদা ও উক্তি শুনার পর "নাউজুবিল্লাহ" বলতে ভুলবেন না।

দেওয়ানবাগীর কুফরী আক্বিদাসমূহঃ
১. "আমার অসংখ্য মুরিদান স্বপ্ন ও কাশফের মাধ্যমে আল্লাহর দিদার লাভ করেছে। আমার স্ত্রী হামিদা বেগম ও আমার কন্যা তাহমিনা একদা স্বপ্নের মাধ্যমে আল্লাহকে দাড়ি-গোঁফ বিহীন যুবকের ন্যায় দেখতে পায়।"- (সূত্রঃ আল্লাহ কোন পথেঃ ২৩)

২. সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, "শুধু আমি নই, আমার স্ত্রী-কন্যাসহ লক্ষ লক্ষ মুরিদানও আল্লাহকে দেখেছেন।" (সূত্রঃ সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগ)

৩. "দেওয়ানবাগে আল্লাহ ও সমস্ত নবী-রাসূল, ফেরেস্তারা মিছিল করে এবং আল্লাহ নিজে স্লোগান দেয়।"- (সূত্রঃ সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগ, মার্চ ১৯৯৯ ইংরেজী)

৪. "আমি এক ভিন্নধর্মের লোককে অজিফা ও আমল বাতলে দিলাম। ক'দিন পর ঐ বিধর্মী স্বপ্নযোগে মদিনায় গেল। নবীজির হাতে হাতে মিলালো। নিজের সর্বাঙ্গে জিকির অনুভব করতে লাগলো। তারপর থেকে ওই বিধর্মী প্রত্যেক কাজেই অন্তরে আল্লাহর নির্দেশ পেয়ে থাকে।"- (সূত্রঃ মানতের নির্দেশিকাঃ ২৩ সূফী ফাউন্ডেশন, ১৪৭ আরামবাগ, ঢাকা)

৫. "কোনো লোক যখন নফসির মাকামে গিয়ে পৌঁছে, তখন তার আর কোনো ইবাদত লাগেনা।"- (সূত্রঃ দেওয়ানবাগী রচিত, আল্লাহ কোন পথে, পৃষ্ঠা-৯০)

৬. "জিব্রাঈল বলতে আর কেউ নন, স্বয়ং আল্লাহই জিব্রাঈল।"- (সূত্রঃ মাসিক আত্মার বাণী, ৫ম বর্ষ ১ম সংখ্যা ২১)

৭. "সূর্যোদয় পর্যন্ত সেহরি খাওয়ার সময়। সুবহে সাদিক অর্থ প্রভাতকাল। হুজুরেরা ঘুমানোর জন্য তাড়াতাড়ি আজান দিয়ে দেয়। আপনি কিন্তু খাওয়া বন্ধ করবেন না। আজান দিয়েছে নামাজের জন্য; খাবার বন্ধের জন্য আজান দেয়া হয় না।"- (সূত্রঃ মাসিক আত্মার বাণী, সংখ্যাঃ নভেম্বরঃ ৯৯, পৃষ্ঠাঃ ৯)

৮. "মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হায়াতে জিন্দেগীকে পুলসিরাত বলা হয়।"- (সূত্রঃ দেওয়ানবাগী রচিত, আল্লাহ কোন পথে, তৃতীয় সংস্করণঃ ৬০)

৯. "আল্লাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে আত্মা এক বিচ্ছেদ যাতনা ভোগ করতে থাকে। প্রভুর পরিচয় নিজের মাঝে না পাওয়া অবস্থায় মৃত্যু হলে সে বেঈমান হয়ে যাবে। তখন তার আত্মা এমন এক অবস্থায় আটকে পড়ে যে, পুনরায় আল্লাহর সাথে মিলনের পথ খুঁজে পায় না। আর তা আত্মার জন্য কঠিন যন্ত্রণাদায়ক। আত্মার এরূপ চিরস্থায়ী যন্ত্রণাদায়ক অবস্থাকেই জাহান্নাম বা দোযখ বলা হয়।"- (সূত্রঃ দেওয়ানবাগী রচিত আল্লাহ কোন পথেঃ ৪৪)

১০. দেওয়ানবাগী নিজেকে ইমাম মাহদী দাবি করেন। অতঃপর দরূদে মাহদী রচনা করেন।

দরূদে মাহদীঃ
"আল্লাহুম্মা ছাল্লি আ'লা সাইয়্ ওয়ালা আ'লা ইমাম মাহদী রাহমাতল্লিল আলামীন ওয়ালিহী ওয়াছাল্লীম।" ময়লার স্তূপে অর্ধমৃত ও বিবস্ত্র অবস্থায় রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি।"

১১. দেওয়ানবাগী ১৯৮৯ সালে নাকি একটি ব্যতিক্রমধর দেখে ফেলেন। এ স্বপ্ন সম্পর্কে তিনি বলেন, "আমি দেখি ঢাকা ও ফরিদপুরের মধ্যবর্তী স্থান জুড়ে এক বিশাল বাগান ফুলে-ফলে সুশোভিত। ঐ বাগানে আমি একা একা হাঁটছি। হঠাৎ বাগানের এক স্থানে একটি ময়লার স্তূপ আমার চোখে পড়ে। আমি দেখতে পাই ঐ ময়লার স্তূপে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রাণহীন দেহ মোবারক পড়ে আছে। তাঁর মাথা মোবারক দক্ষিণ দিকে আর পা মোবারক উত্তর দিকে প্রসারিত। বাম পা মোবারক হাঁটুতে ভাজ হয়ে খাড়া অবস্থায় রয়েছে। আমি তাঁকে উদ্ধার করার জন্য পেরেশান হয়ে গেলাম। আমি এগিয়ে গিয়ে তাঁর বাম পায়ের হাঁটুতে আমার ডান হাত দ্বারা স্পর্শ করলাম। সাথে সাথেই তাঁর দেহ মোবারকে প্রাণ ফিরে এলো। তিনি চোখ খুলে আমার দিকে তাকালেন। মুহুর্তের মধ্যেই রাসুল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুন্দর পোশাকে সুসজ্জিত হয়ে গেলেন। তিনি উঠে বসে হাসিমুখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, "হে ধর্মপূর্ণজীবন দানকারী! ইতোমধ্যেই আমার ধর্ম আরও পাঁচবার পূনর্জীবন লাভ করেছে। একথা বলে রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে দাঁড়িয়ে হেঁটে হেঁটে সাথে চলে এলেন। এরপর আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল।" (সূত্রঃ দেওয়ানবাগীর স্বরচিত গ্রন্থ "রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্যিই কি গরীব ছিলেন?" ১১-১২ প্রকাশকালঃ জুন ১৯৯৯।)

১২. দেওয়ানবাগী এবং তার মুরিদদের মাহফিলে স্বয়ং আল্লাহ, সমস্ত নবী, রাসূল সাল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম, ফেরেশতা, দেওয়ানবাগী ও তার মুর্শিদ চন্দ্রপাড়ার মৃত আবুল ফজলসহ সমস্ত ওলি-আউলিয়া এক বিশাল ময়দানে সমবেত হয়ে সর্বসম্মতিক্রমে দেওয়ানবাগীকে মোহাম্মদী প্রচারক নির্বাচিত করা হয়। অতঃপর আল্লাহ সবাইকে নিয়ে এক মিছিল বের করে। মোহাম্মদী ইসলামের চারটি পতাকা চারজনের। যথাক্রমে- আল্লাহ, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, দেওয়ানবাগী এবং তার পীরের হাতে ছিল। আল্লাহ, দেওয়ানবাগী ও তার পীর প্রথম সারিতে ছিলেন। বাকিরা সবাই পিছনের সারিতে। আল্লাহ নিজেই স্লোগান দিয়েছিলেন- "মোহাম্মদী ইসলামের আলো ঘরে ঘরে জ্বালো।" (সূত্রঃ সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগী পত্রিকা-১২/০৩/৯৯)

১৩. দেওয়ানবাগীর এক পাছাটা গোলাম বলে, (নাম মাওলানা আহমদ উল্লাহ যুক্তিবাদী) আমি স্বপ্নে দেখলাম হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্ সালাম নির্মিত মক্কার কা'বা ঘর এবং স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাবে রহমতে হাজির হয়েছেন। আমাকে উদ্দেশ্য করে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেন- তুমি যে ধারণা করছ যে, শাহ দেওয়ানবাগী হজ্ব করেনি, আসলে এটা ভূল। আমি স্বয়ং আল্লাহর নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে আছি এবং সর্বক্ষণ থাকি। আর কা'বা ঘরও তার সামনে উপস্থিত আছে। আমার মুহাম্মদী ইসলাম শাহে দেওয়ানবাগী প্রচার করতেছেন।

এই হলো দেওয়ানবাগীর ভণ্ড আক্বিদা ও উক্তিসমূহ, বলুনঃ নাউজুবিল্লাহ!! আস্তাগফিরুল্লাহ্!! একজন খুব সাধারণ মানুষও এই কুৎসিত, নোংরা এবং শিরকি কথাগুলো পড়ে ও শুনে বুঝতে পারবে যে, এই শয়তানটার সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। এই শয়তানটা আসলে ধর্মের নামে ব্যবসা খুলে বসেছে। দয়া করে কেউ এই শয়তানটার পিছে গিয়ে নিজের ঈমানকে নষ্ট করবেন না।

বাংলার জমিন তথা শাহ্জালাল, শাহ্ পরান, শাহ্ আমানত, শেরে-বাংলা রাহমাতুল্লাহি তা'য়ালা আলাইহি এর বাংলায় এই তথাকথিত ভণ্ডপীরদের কোনো ঠাঁই নেই। আসুন; সবাই মিলে এই শয়তানটাকে জুতা মেরে বাংলার জমিন হতে বিতাড়িত করি। আর একজন মুসলিম হিসেবে এই ভণ্ডের ভণ্ডামি অন্য সবাইকে জানিয়ে দেয়ার মাধ্যমে তাদেরকে এই শয়তান থেকে সতর্ক করে দেয়া আমাদের একান্ত ঈমানী দায়িত্ব। সুতরাং একজন মুসলিম হিসাবে এই ভণ্ডের ভণ্ডামি সম্পর্কে অন্যকে জানার সুযোগ করে দিন, আশা করি সবাই একে অন্যের মাঝে শেয়ার করবেন।

বিঃদ্রঃ- দেওয়ানবাগী নিজেকে মা ফাতেমার স্বামী দাবিদার কথাটি সবার জানা তাই এখানে পূণর্ব্যক্ত করলাম না।


--------------- সমাপ্ত ---------------




Comments

Popular posts from this blog

বালাকোট আন্দোলনের হাকীকত

সৈয়দ আহমদ বেরলভীর জম্ম ও পরিচয়

মওদুদীর ভ্রান্ত আক্বিদা ও ইসলামী আক্বিদা