[ দুষ্ট লোকের স্বরূপ উন্মোচন ]
كشف الاستار
عن كيد الاشرار
'ফত্ওয়া'
কাশফুল আসতার
'আন কায়দিল আশরার
[ দুষ্ট লোকের স্বরূপ উন্মোচন ]
লিখেছেন
আলহাজ্ব মাওলানা মুহাম্মদ ইব্রাহীম আল–কাদেরী
টেক্সট রেডীঃ মুহাম্মদ আব্দুল খালেক
প্রকাশনায়
করিম'স প্রকাশন, চট্টগ্রাম
ভূমিকা
﷽
حامدا و مصليأ و مسلمأ
আহলে সুন্নাত ওয়া জমা'আতের ওলামায়ে কেরাম যুগে যুগে যথাযথভাবে বাতিল পন্থীদের মোকাবেলায় যে দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়ে আসছেন, তা অস্বীকার করার জো নেই। সুতরাং দেখা গেছে যে, বারংবারই বাতিল পন্থীরা ইলমী জেহাদে ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে তারা রাজনৈতিকভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের দিকে ধাবিত হয়ে আসছে। রাজনৈতিক অঙ্গনেও তারা বিভিন্ন কুট-কৌশলের আশ্রয় নিয়ে যেকোনোভাবেই তাদের একটা অবস্থান গড়ে নেয়ার অপপ্রয়াস চালিয়ে আসছে।
এমতাবস্থায়, সুন্নী ওলামায়ে কেরামও ওইসব বাতিলের ওই চক্রান্তটাকেও ব্যর্থ করে দিতে সচেষ্ট হন। গ্রহণ করেছেন বাস্তব পদক্ষেপও। আমাদের বাংলাদেশের দিকে নজর দেয়া যাক। ১৯৮০ সালে সুন্নী মতাদর্শের পতাকাবাহী একক ছাত্র সংগঠন 'বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা' গঠিত হয়ে তা ছাত্ররাজনীতির অঙ্গনে সত্য প্রতিষ্ঠার এক কার্যতঃ আদর্শ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এরই পরম্পরায় ১৯৯০ ইং সালে জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক দল 'বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট' গঠিত হয়ে আজ আপামর সুন্নী-জনতার মধ্যে দ্রুত আশার সঞ্চার করছে। আরো সুখের বিষয় যে, সুন্নীয়াতের মূল ধারার এ দু'টি সংগঠন ও দলের শীর্ষে, পরোক্ষ কিংবা প্রত্যক্ষভাবে, সারা দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরাম, হক্কানী পীর-মাশাইখ, বুদ্ধিজীবি ও পেশাজীবিরাও সম্পৃক্ত হয়ে গেছেন।
অন্যদিকে, বাতিল পন্থীরাও বসে নেই। তাদের একটা অংশকে সুকৌশলে সুন্নীয়তের মূলধারার ঐ অগ্রযাত্রাকে রুখে দিয়ে, নিজেদের স্বার্থোদ্ধারের পরিকল্পনা করে নেয়। তাদের ধূর্ত ব্যক্তিরা নিজেদের আসল চেহারা ও অন্তরের বাস্তব ভ্রান্ত আক্বিদাকে গোপন করে পরপর ঐ দু'টি দলে ঢুকে পড়েছে। আর অতিভক্তির আদলে বিশেষ করে রাজনৈতিক দলটির প্রাথমিক অবস্থায় সুযোগ পেয়ে নিজেদের একটা অবস্থান সুকৌশলে গড়ে নিয়েছিলো বৈ-কি। কিন্তু আল্লাহ পাকের মেহেরবাণীতে, অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে, সেই মূলধারার অতন্দ্র নবীন কর্মী ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মুরব্বীদের চোখে ওই স্বার্থান্বেষীদের আসল চেহারা ভেসে ওঠে; কারণ, ওই স্বার্থান্বেষী মহলটির নিকট একদিকে যেমন দলের অগ্রযাত্রার পথে সেই যুগান্তকারী 'কাউন্সিল ২০০০ সাল' অসহনীয় ঠেকলো, তেমনি দলে অভিজ্ঞ ও সর্বস্তরে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিবর্গের সম্পৃক্ততাকে তারা তাদের উচ্চাভিলাষকে চরিতার্তকরণ ও স্বার্থোদ্ধারের পথে বাধা মনে করতে লাগলো। তাদের এ অসহনীয় গা-জ্বালা প্রকাশ পেতে লাগলো তাদের নানা অসাংগঠনিক কার্যকলাপের মাধ্যমে। ইত্যবসরে, তারা দল থেকে বের হয়ে আলাদা অবস্থান গ্রহণ করে সেখান থেকে সুন্নীয়াতের অগ্রযাত্রার পথে বাধা সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলো। শেষ পর্যন্ত তারা তাই করলো, যা' সুন্নীয়াতের সাংগঠনিক যাত্রাপথে তাদের 'দ্বিতীয় হামলা' বলে প্রমাণিত হলো। (উল্লেখ্য, তাদের প্রথম হামলা ছিলো ছাত্রসেনার বিরুদ্ধে - বিগত আশির দশকে।)
তারপর তাদের কর্মকাণ্ডের মধ্যে দেখা যাচ্ছে - একদিকে, সুন্নী-সাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো, সুন্নী ওলামা-মাশাইখদের বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা ও কথাবার্তায় অশালীনতা প্রদর্শন, আর অন্যদিকে আল্লাহর কুদরত দেখুন! ক্রমশঃ তাদের 'বদ-আক্বীদা'ও প্রকাশ পেতে থাকে। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অন্যতম প্রধান বলে পরিচিত মৌং জয়নাল আবেদীন জুবাইরের বক্তব্যে শানে রেসালতে জঘন্য বেয়াদবী ও কুফরী পর্যন্ত প্রকাশ পেয়ে যায়, যার উপর লোকটি এখনো হঠ ধরে আছেন, ভুল স্বীকার কিংবা তাওবা- কোনটিই করেননি, যার ফলে
তাকে সমর্থনকারীদের ঈমান পর্যন্ত হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। কারণ, কুফরকে সমর্থন করাও কুফর।
ঘটনার বিবরণ প্রকাশ, বিগত ০৫.০৯.২০০২ইং তারিখে (৪ঠা সেপ্টেম্বর, ২০০২ইং দিবাগত রাত) চট্টগ্রাম জেলাধীন হাটহাজারী থানার অন্তর্গত ফরহাদাবাদ এলাকায় অনুষ্ঠিত মাহফিলে মৌং জয়নাল আবেদীন জুবাইর বক্তব্য রেখেছেন। তার বক্তব্যে তিনটি বাতিল তথা আহলে সুন্নাত ওয়া জমা'আতের আক্বীদার পরিপন্থী ভ্রান্ত ধারণা প্রকাশ পেয়ে যায়, যার কারণে স্থানীয় লোকদেরকেও ফাত্ওয়া তলব করতে হয়। সুতরাং উক্ত এলাকার গণ্যমান্য কতিপয় ব্যক্তির স্বাক্ষরযুক্ত একটা ফাত্ওয়া তলবের চিঠি ও উক্ত বক্তার বক্তব্য সম্বলিত একখানা ক্যাসেট, গহিরা আলিয়া মাদ্রাসার সিনিয়র সহকারী শিক্ষক জনাব মাষ্টার মুহাম্মদ ইকবাল (বি.এ.বি.এড্)-এর মাধ্যমে, আমার নিকট প্রেরণ করে তার ফাত্ওয়া তলব করা হয়। ক্যাসেট শুনে অবাক হলাম, কীভাবে একজন মুহাদ্দিস পদে নিয়োজিত ও সুন্নী বলে দাবীদার ব্যক্তি এহেন বক্তব্য রাখতে পারলেন! এরপর চট্টগ্রামের রাউজান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব আলহাজ্ব আনোয়ারুল আজীমের বাড়ীতে 'মজমু'আহ্-ই-সালাওয়াতুর্ রসূল' (সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর খতমে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার উপাধ্যক্ষ, মুহাদ্দিসগণ ও আরবী বিষয়ের শিক্ষকবৃন্দ আমন্ত্রিত হন। আমি তখন সেখানে উক্ত ক্যাসেটে ধারণ করা উক্ত বক্তব্যটি তাঁদেরকে শুনালাম ও তাঁদের মতামত জানতে চাইলাম। কেসেট শুনে সবাই একযোগে উক্ত বক্তব্য প্রদানকারী 'কাফির হয়ে গেছে' মর্মে ফতোয়া দেন। পরবর্তীতে ক্যাসেটটি দেশবরেণ্য বেশ কিছু ওলামায়ে কেরামকেও শুনালাম। তাঁদের মধ্যে ইমামে আহলে সুন্নাত পীরে ত্বরীক্বত হযরতুল আল্লামা আলহাজ্ব কাজী মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম হাশেমী সাহেব (মদ্দাযিল্লুহুল আলী), গাযযালী-ই-যমান হযরতুলহাজ্জ আল্লামা অধ্যক্ষ মুসলেহ উদ্দীন সাহেব, পীরে তরীক্বত আলহাজ্ব মুফতী কাজী মুহাম্মদ আমীনুল ইসলাম হাশেমী সাহেব, উপাধ্যক্ষ হযরতুলহাজ্জ্ মাওলানা মুহাম্মদ সগীর ওসমানী সাহেব, হযরতুলহাজ্জ মাওলানা ছৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান আলক্বাদেরী সাহেব, হযরতুলহাজ্জ মাওলানা কাজী আবদুল ওয়াজেদ সাহেব, হযরতুলহাজ্জ মাওলানা হাফেয মুহাম্মদ সুলায়মান আনসারী সাহেব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ক্যাসেট শুনা মাত্রই প্রত্যেকে একই মন্তব্য করেছেন। (অর্থাৎ বক্তা উক্ত বক্তব্যের জন্য কাফির হয়ে গেছে।)
ওলামা-ই কেরামের মধ্যে হযরতুলহাজ্জ্ আল্লামা অধ্যক্ষ মুসলেহ্ উদ্দীন সাহেব পরামর্শ দিয়ে বললেন, "বক্তার নিকট একটা চিঠি দেয়া হোক, যাতে তার বক্তব্যেকে ভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করার কোন পথ বের হয়ে আসে কিনা দেখা যাক।" সুতরাং গত ১৬.০৯.২০০২ইং তারিখে নাজির হাট আহমদিয়া আলীয়া মাদ্রাসার প্রধান মুহাদ্দিস মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুস্ সালাম সাহেব মারফৎ বক্তার নিকট ভদ্রোচিত ভাষায় ও যথাযোগ্য সম্বোধন সহকারে পত্র দেয়া হলো। (কপি মুদ্রিত) অতঃপর জানা গেলো যে, তিনি পত্রের প্রাপ্তি স্বীকার করছেন না। সুতরাং রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে তাকে পুনরায় পত্র দেয়া হলো। (A/D REGISTERED- DTD. 24.09.2002) বক্তা তা গত ২৬.০৯.২০০২ ইংরেজী তারিখে গ্রহণ করেছেন। কিন্তু পরবর্তী দীর্ঘ একমাস অর্থাৎ অক্টোবর ২০০২ ইং পর্যন্ত অপেক্ষা করা হলো। বক্তা নীরব রইলেন- না জবাব দিলেন, না ভুল স্বীকার করলেন, না তওবা করলেন; বরং তাকে নিজের কথায় হঠ ধরে থাকতে দেখা গেলো। এরপরও আমি তার জবাবের অপেক্ষায় রইলাম। কিন্তু ওদিকে অকুস্থল ফরহাদাবাদের ফাত্ওয়া প্রার্থীরা ফত্ওয়ার জন্য আমাকে বারংবার অনুরোধ করতে রইলেন।
আমিও ফাত্ওয়া প্রণয়ণে বিলম্বের যুক্তিসঙ্গত কারণগুলো বলে তাদেরকে অপেক্ষা করার পরামর্শ দিলাম।
অবশেষে, আমি হযরতুল আল্লামা গাযী শেরে বাংলা (রাহমাতুল্লাহি তা'আলা আলাইহি)'র বার্ষিক ওরস শরীফের মাহফিলে অংশগ্রহণকারী দেশের বহু সম্মানিত ওলামায়ে কেরাম ও প্রচুর সুন্নী-জনতার সামনে বিষয়টি তুলে ধরলাম। তখন সেখানেও সবাই একবাক্যে বক্তার কুফরীর কথা ঘোষণা করলেন। এর পরদিন, আমি চট্টগ্রাম জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়ার অধ্যক্ষ হযরতুলহাজ্জ্ আল্লামা জালাল উদ্দীন আল্-ক্বাদেরী সাহেবের সামনে উক্ত চিঠির অনুলিপি পেশ করে বিষয়টি আলোচনা করলাম। সেখানে তখন বাকলিয়াস্থ আহমদিয়া করীমিয়া সুন্নিয়া সিনিয়র (ফাযিল) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জনাব মাওলানা আব্দুর রহীম আল-ক্বাদেরী সাহেব এবং জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার মুফাসসির আলহাজ্ব মাওলানা আব্দুল আলিম রেযভী সাহেবও উপস্থিত ছিলেন। পত্রটি পড়ে বিষয়টি জানা মাত্রই জনাব অধ্যক্ষ সাহেব অত্যন্ত ব্যথিত অন্তর নিয়ে আক্ষেপ করে বললেন, "সেতো(বক্তা জুবাইর সাহেব) দেখি বড়ই বে-আদব। এমন কথাতো ওহাবীরাও বলতে সাহস পায়নি! নবীর শানে এতোবড়ো মানহানিকর উক্তি?"
এরপর একদিন আমার অতি শ্রদ্ধেয় শিক্ষাগুরু ছিপাতলী জামেয়া গাউসিয়া মঈনিয়া (বহুমুখী) আলিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ হযরতুল আল্লামা আলহাজ্ব আজিজুল হক আল্-ক্বাদেরী সাহেবের খেদমতে উপস্থিত হলাম। হাটহাজারীস্থ আনোয়ারুল উলুম নো'মানিয়া মাদ্রাসায় তাঁর সাথে সাক্ষাত করে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। তাঁকেও উক্ত চিঠির অনুলিপি দিলাম। সেখানে তখন হাফেয মাওলানা নূর মুহাম্মদ সাহেব (আরবী প্রভাষক, ছিপাতলী আলিয়া মাদ্রাসা), মাইজভান্ডার নিবাসী ও আবূ ধাবী প্রবাসী জনাব মফজল আহমদ সওদাগর, ধর্মপুর নিবাসী ও আবূ ধাবী প্রবাসী জনাব ইউনুছ সওদাগর উপস্থিত ছিলেন। পত্রের বিষয়বস্তু ও মর্মকথাটি এবং বক্তার উক্ত বক্তব্য সম্পর্কে অবগত হতেই জনাব ক্বাদেরী সাহেব হুযূর ক্বেবলা অত্যন্ত দুঃখের সাথে মন্তব্য করলেন, "সে (আলোচ্য বক্তা) তো দেখি একেবারে মূর্খ! আমিতো মনে করতাম সে কিছু জানে। এহেন বেয়াদবী করার সাহস পেলো কোত্থেকে? কোন বাতিল পন্থীওতো এতবড় বেয়াদবী করার সাহস করেনি? একজন মুহাদ্দিস পদে নিয়োজিত ব্যক্তি কীভাবে এমন উক্তি করতে পারলো? এসব কথার প্রমাণতো কোন 'মওযূ' (মনগড়া) হাদীসেও নেই!"
এভাবে শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরামের মতামত নেয়ার পর আমি ফাত্ওয়া লিখতে আরম্ভ করলাম। উল্লেখ্য যে, উপরোল্লেখিত বক্তার তিনটি কুফরীর মধ্যে বক্তার একটি উক্তি সবাইকে সর্বাপেক্ষা বেশী ব্যথিত করেছে। তা হচ্ছে, (বক্তা বলেছেন,) "দোয়া করার সময় রসূলের অন্তরের নজর ছিলো মুরব্বী ওমরের দিকে, কিন্তু আল্লাহ্ কবূল করলেন জুনিয়র ওমরকে।" তার বাকী দু'টি উক্তিও কম জঘন্য নয়। ফাত্ওয়ার মধ্যে সে সম্পর্কে বিস্তারিত উদ্ধৃতি সহকারে লেখা হয়েছে। আঞ্জুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়ার সহ-সভাপতি ও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার চেয়ারম্যান জনাব আলহাজ্ব আব্দুল ওহাব আল্-ক্বাদেরীর ছেলের বিয়েতে উক্ত বক্তা আমন্ত্রিত হয়ে আসলে জামেয়ারই মুহাদ্দিস হযরতুলহাজ্জ্ মাওলানা মুহাম্মদ সুলাইমান আনসারী সাহেব বক্তা সাহেবকে বললেন, "জুবাইর সাহেব! আপনি ওসব কথা কোত্থেকে বলেছেন? ওগুলো কোথায় পেয়েছেন? বক্তা তাঁকে বললেন, "মানুষের কি ভুল হতে পারেনা? "তদুত্তরে জনাব আনসারী সাহেব বললেন, "আপনি যেখানে ভুল স্বীকার করে ও তওবা করে ছাড় পাওয়া মুশকিল হবে, সেখানে এখনো কি প্রশ্নের সুরে কথা বলছেন?" এরপর বক্তাজি নির্বাক হয়ে পড়লেন।
এভাবে, আলোচ্য বক্তা মৌং জয়নাল আবেদীন জুবাইরকে তার জঘন্য উক্তিগুলো সম্পর্কে জানিয়ে তার জবাবের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেও তাকে তার বক্তব্যের উপর হঠ ধরে থাকতে দেখে একথা বুঝা গেলো যে, তার বক্তব্যগুলো তার ইচ্ছাকৃত, তা কোন ধরণের তা'ভীল বা ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণেরও অবকাশ রাখেনা। সুতরাং এতদ্ভিত্তিতে ও দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরাম ও সর্বস্তরের সুন্নী জনতার সাথে উপরোক্ত বিষয়ে মত বিনিময়ের উপর ভিত্তি করে, আমার ঈমানী দায়িত্ব হিসেবে, আলোচ্য বক্তার বক্তব্যগুলোর, ইসলামের চার দলীল তথা অতি নির্ভরযোগ্য কিতাবাদির আলোকে উক্ত বিষয়ে ফাত্ওয়া প্রণয়ণের প্রয়াস পেলাম। ফাত্ওয়াটার বিশুদ্ধতার পক্ষে দেশবরেণ্য ওলামা কেরাম মতামত প্রকাশ করে সই করেছেন।
আশাকরি, ফাত্ওয়াটা পাঠ করে উক্ত বক্তা সম্পর্কে প্রত্যেকে শরীয়ত-সম্মত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। আর তাকে ভবিষ্যতে সুন্নী অঙ্গনে, এমনকি ইসলামের গণ্ডি থেকে বয়কট করবেন।
কারণ, কুফর করা যেমন কুফরী, কারো কুফরকে সমর্থন কিংবা সেক্ষেত্রে সহায়তা করাও কুফরী। পরিশেষে, 'আমাদের নিকট আমাদের ঈমান-আক্বীদাই সর্বাপেক্ষা বেশী গুরুত্বপূর্ণ, কারো অন্ধ অনুসরণে কারো ঈমান যেনো বিনষ্ট না হয়।' এ বিষয়টি সবার নিকট গুরুত্বপূর্ণ হোক - এ আশাবাদটুকু ব্যক্ত করছি।
[মুহাম্মদ ইব্রাহীম আল-ক্বাদেরী]
শায়খুল হাদীস,
গহিরা এফ.কে. জামেউল উলূম (কামিল) মাদরাসা,
রাউজান, চট্টগ্রাম।
بسم الله الرحمن الرحيم
الاستفتاء
ফাত্ওয়া তলব
প্রশ্নঃ সম্মানিত দ্বীনদার ওলামায়ে কেরাম ও শরীয়তের নির্ভরযোগ্য মুফতীগণ! নিম্নোক্ত মাসআলার ব্যাপারে কি ফয়সালা দেবেন?
জনৈক আলেম (বক্তা)* নিজে তার উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্যে, আমীরুল মু'মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ওমর ফারূক (রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু)-এর ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, "আল্লাহর রসূল দো'আ করলেন, 'আল্লাহুম্মা আয়্যিদিল ইসলামা বেওমরাঈন।' (আর অর্থ এভাবে করেন যে,) আল্লাহ! দুই ওমরের যে কোন একজন ওমরকে দিয়ে ইসলামকে সাহায্য করুন! (আরো ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন,) দো'আ করার সময় রসূলের অন্তরের নজর ছিল মুরব্বী ওমরের দিকে; কিন্তু আল্লাহ্ কবূল করলেন জুনিয়র ওমরকে। মুরব্বী ওমর, সিনিয়র নেতা ওমর - সে'তো আরবের নেতা। আল্লাহ্ কবূল করলেন, তরুণদের নেতা ওমরকে। মুরব্বী ওমর "দারুন্ নাদ্ওয়া' থেকে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলো, 'কে মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহর শির বিচ্ছেদ করে নিয়ে আসবা? আর জুনিয়র ওমর খোলা তরবারী হাতে নিয়ে বের হলো।.........…………"
বিস্তারিত জানিয়ে কৃতার্থ করবেন। আল্লাহ্ আপনাদের প্রতিদান দিন!
:উত্তর:
بسم الله الرحمن الرحيم
،،،حامدًا و مصليًا و مسلمًا أمَّا بعدُ
হামদ, সালাত ও সালামের পর - ওলামা-ই কেরাম ও মুফতীগণের দৃষ্টিতে বক্তার উল্লেখিত বক্তব্যের মধ্যে কয়েকটি 'কুফরী উক্তি' ব্যক্ত হয়েছে। (আল্লাহরই পানাহ্!) সুতরাং ইসলামী শরীয়তের ফয়সালা মোতাবেক বক্তাকে কাফির/মুরতাদ্দ্ বলা হবে। আর সেই কুফরীগুলো হচ্ছেঃ
১) বক্তা তার বক্তব্যের মধ্যে পরিস্কার ভাষায় রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দো'আ কবূল হয়নি বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
২) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যথাযোগ্য ইলমকে অস্বীকার করা হয়েছে। যেহেতু হযরত ওমর ফারূক্ব রাদ্বিয়াল্লাহ আনহু ইসলাম গ্রহণ করবেন এবং আবূ জাহল কাফির অবস্থায় মরে জাহান্নামী হবে- একথা হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জানা থাকা সত্ত্বেও উক্ত বক্তা তার বক্তব্যে রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বিষয়ে জ্ঞাত নন বলে বুঝিয়েছেন এবং হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ইলমকে যথাযোগ্যভাবে মেনে না নিয়ে তাঁর ইলম ও শানে কমতি করে দেখিয়েছেন। যেহেতু বক্তা বললেন, "দো'আ করার সময় রসূলের অন্তরের নজর ছিলো মুরব্বী ওমরের দিকে; কিন্তু আল্লাহ্ কবূল করলেন জুনিয়র ওমরকে।" এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, (উক্ত বক্তার উক্তি থেকে বুঝা যাচ্ছে,) রসূল করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি জানতেন ওমর বিন খাত্তাব ইসলাম গ্রহণ করবেন,তাহলে অন্য কারো দিকে হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অন্তর মুবারকের নজর যাবার প্রশ্নই ওঠেনা।
৩) উল্লেখিত বক্তা তার বক্তব্যে রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি একটা ডাহা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বলেছেন যে, 'রসূলের অন্তরের নজর ছিল মুরব্বী ওমরের দিকে।' এ ছাড়া 'দারুন্ নাদ্ওয়া' থেকে সিদ্ধান্ত প্রদানকারী সেই কুখ্যাত কাফির আবূ জাহলকে 'মুরব্বী ওমর' ও হযরত ফারূক্বে আ'যম রাদ্বিয়াল্লাহ আনহু-কে 'জুনিয়র ওমর' বলার মাধ্যমে আবূ জাহলকে 'প্রাধান্যের মর্যাদা' দেয়া হয়েছে।
উপরোক্ত বিষয়ে বক্তার উদ্দেশ্য নির্ণয় করে কিংবা অন্য কোন উপায়ে কাফির না বলার উপায় খোঁজার নিমিত্তে তার নিকট পত্র দিয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু বক্তা তার উক্তিতে হঠকারিতার আশ্রয় নিয়ে আছেন। সুতরাং তার পক্ষ থেকে 'অনিচ্ছাকৃতভাবে বলা' বা 'ভুল স্বীকার করা' অথবা 'তাওবা করা' কোনটাই জানা যায়নি। এমতাবস্থায় শরীয়তের নির্ভরযোগ্য দলীল সহকারে বক্তার কুফরীর বিবরণ নিম্নে লিপিবদ্ধ করা হলোঃ
১) ইসলামী শরীয়তে ঈমান যেমন একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, তেমনি 'কুফরী কালাম' বা কুফরী উক্তিও একটা জটিল বা জঘন্য বিষয়। খাওয়ার মধ্যে যেভাবে বিষ ও মধুর মধ্যে পার্থক্য না করলে বিপদ নিশ্চিত, তেমনিভাবে ঈমান আনার পর কুফরী উক্তি বা কাজ থেকে বিরত থাকাও নেহায়ৎ জরুরী। 'শরীয়তের ফয়সালা' তথা 'ফিকাহ্ - ফতোয়ার কিতাবগুলো'তে 'মুরতাদ্দ্' বা ধর্ম-ত্যাগীদের ব্যাপারে একটা স্বতন্ত্র অধ্যায় সন্নিবিষ্ট হয়েছে। 'কিতাবুল ফিক্বহে আলাল্ মাযাহিবিল আরবা'আহ্' (চার মাযহাবের ফিক্হ-এর কিতাব) ৫ম খণ্ডঃ ৪২৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ্য করা হয়েছে যে, কুফরীকে অনিবার্য (لازم) করে এমন উক্তিও কুফরী।..................
এক মাদ্রাসার আরবী প্রভাষক তিনটা প্রশ্ন সম্বলিত একখানা পত্র দিয়েছেন
উত্তরঃ- মূল বই-এর সাথে সংযোজিতঃ
(১) জনাব মুফতি সাহেব হুজুর! আপনার ফাতওয়া পড়ে খুশী হয়েছি যে, আপনি সাধারণ সুন্নী মুসলমানদের মধ্যে একটা বিরাট বিভ্রান্তির অবসান ঘটিয়েছেন। তবে এত জটিল বিষয়টি বুঝে নিতে সাধারণ মানুষতো দূরের কথা, অনেক আলেমও হিমসিম খেয়ে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় বিষয়টি অতি সহজে বুঝবার ব্যবস্থা করলে, মানুষ প্রকৃত সত্য বুঝতে পারবে।
(২) কেউ কেউ বলে বেড়াচ্ছে আমরা কি তার আক্বিদার জন্য দায়ী? আমরা তো রাজনৈতিক কারণে বা সাংগঠনিক স্বার্থে জোবাইরের সাথে আছি।
(৩) কেউ কেউ বলছে এটা প্রতিহিংসার ফল। এখানে আক্বিদাগত কোন জটিলতা নেই। থাকলেও আমাদের পীর সাহেবের মাদ্রাসা থেকে ফাতওয়া আসতে হবে, অন্য কোথাও থেকে ফাতওয়া আমরা মানি না।
সহজ উত্তরঃ বক্তা বললেন "দোয়া করার সময় রাসূলের অন্তরের নজর ছিলো মুরব্বি ওমরের দিকে। কিন্তু আল্লাহ্ কবুল করলেন জুনিয়র ওমরকে" উক্ত বক্তব্যের মধ্যে প্রথমাংশ "দোয়া করার সময় রাসূলের অন্তরের নজর ছিল মুরব্বি ওমরের দিকে............. কথাটি, বক্তা কোন্ হাদীসের কিতাবে আছে বা কোন্ হাদিস বিশ্লেষকের উক্তি আদৌ উদ্ধৃতি দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, দিতেও পারবেন না। এক্ষেত্রে তিনি রাসুলের নামে একটা ডাহা মিথ্যাচার করলেন এবং কুটবুদ্ধি দিয়ে কথাগুলো বেনামা কোন হাদীস বিশ্লেষকের কাল্পনিক নাম ভাঙ্গিয়ে বলেছেন।
ইমাম তিবরানী রাহমাতল্লাহি আলাইহি "আস্ আউসাত" কিতাবে, রাসুলের নামে মিথ্যাচার করার শাস্তি সম্পর্কে একটা হাদীস শরীফ হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণনা করেন যে, একদিন জনৈক ব্যক্তি অবিকল মহানবী সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মত পোষাক পরিধান করে মদীনায় একজন (আহলে বাইতের) বাড়ী ওয়ালার কাছে গিয়ে বললো যে, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে নির্দেশ দেন, যেন মদীনার যে কোন বাড়ী ওয়ালাকে তার জন্যে একটা গৃহ নির্মাণের কথা বলে দিই। লোকটির কথা শুনে তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট বাহক পাঠিয়ে বিষয়টি তাকে অবহিত করলো। তখন হুজুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আবু বকর ও হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমাকে বললেন যে, তোমরা তার কাছে যাও, তাকে জীবিত পেলে হত্যা করবে, আর তার মরদেহ আগুনে জ্বালিয়ে দেবে। আর যদি তোমরা গিয়ে পৌঁছতে পৌঁছতে মারা যায়, তবে আমার মতে মরাই পাবে, তাহলে মরদেহ জ্বালিয়ে দেবে। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ হযরত আবু বকর ও হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমা তাকে এমনি অবস্থায় খুঁজে পেলেন যে, পূর্ববর্তী রাত্রে লোকটি প্রশ্রাব করতে বের হলে, তাকে সর্প দংশন করলেই সে মারা যায়। ফলে তাঁরা তার মরদেহ আগুনে জ্বালিয়ে দিলেন। আর এ বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ ফিরে এসে হুযূর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানালেন। তখনই নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
"যে ব্যক্তি জেনে শুনে আমার উপর মিথ্যাচার করবে,সে যেন তার ঠিকানা দোজখেই খুঁজে নেয়"।(মৌদুয়াতে কবীর (অনুদিত) ২২ ও ২৩ পৃঃ) * ১
বক্তার কুফরীর জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। এ প্রসঙ্গে মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী রাহমাতুল্লাহি তা'আলা আলাই আরো বলেন, শাইখুল মাশায়েখ হাফেজ জালাল উদ্দীন সুয়ূতী রাহমাতুল্লাহি তা'আলা আলাই বলেছেন, এমন কোন কবিরা গুনাহ (বড় পাপ) সম্পর্কে আমি অবগত নই, যাতে লিপ্ত হলেই কাফের হবে বলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের কেউ ফাতওয়া দিয়েছেন- কিন্তু রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর কোন মিথ্যা রটালে কাফের হয়ে যাবে। (অর্থাৎ রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন কথা বলেননি অথবা কোন কাজ করেননি কিন্তু সেটা বলেছেন বা করেছেন মর্মে প্রচার করা কুফরী। এটা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের ফায়সালা) ইমাম শাফেয়ী রাহমাতুল্লাহি তা'আলা আলাইহি-এর অন্যতম সহচর (অনুসারী),যিনি ইমামুল হারামাইনের পিতা,শাইখ আল্লামা আবু মুহাম্মদ আল জুয়াইনী বলেন,যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় রাসুলের নাম দিয়ে মিথ্যা প্রচার করে তার কুফরী এমন হবে,যা তাকে দ্বীন-মিল্লাত থেকে বের করে দেবে। এ ফাতওয়ার ব্যাপারে তাঁর সাথে একদল ইমাম ঐক্যমত পোষন করেন। যাঁদের মধ্যে মালেকী মাযহাবের অন্যতম ইমাম আল্লামা নাসের উদ্দীন বিন আল মুনির রাহমাতুল্লাহি তা'আলা আলাইহিমের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
এখানে মোল্লা আলী ক্বারী আলাইহির রাহমাহ তাঁদের সাথে ঐক্যমত পোষন করেছেন। তিনি বলেন-তাদের বক্তব্যের সাথে মহানবী সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বাণীও সহায়ক হয় যে, "আমার উপর মিথ্যাচার আমি বিনে অন্য কারো উপর মিথ্যাচার এর সমান নয়। অনুরূপ তাঁর (হুযূর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পক্ষ থেকে এ নির্দেশ দেয়া "যে ব্যক্তি তাঁর উপর মিথ্যাচার করবে তাকে যেন হত্যা করা হয়, আর মৃত পাওয়া গেলে তার মরদেহ দাফন না করে জ্বালিয়ে দেয়া হয়" । এর মূল কারণ হলো -নবীর উপর কোন মিথ্যাচার করা মানে আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা উক্তি করা। কারণ নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো, নিজের মনগড়া কিছুই বলেন না বা করেন না, তিনি শুধু অহী নির্ভর উক্তি'ই করেন।
উপরোক্ত অভিমতকে নিম্নোক্ত হাদীস শরীফে আরো শক্তিশালী করছে "আমি আসমান থেকে আগত উক্তি ছাড়া কিছুই বলি না" হাদীসটি মোল্লা আলী ক্বারী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি পূর্বেও উল্লেখ করেছেন। (একই কিতাবে)। যদি ব্যাপার তাই হয়, তাহলে ওই ব্যক্তি চেয়ে অধিক জালেম কে, যে আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে? আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা তারা রটাতে পারে,যারা আল্লাহর আয়াতগুলোকে অস্বীকার করে। অর্থাৎ আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা বলা মানে আল্লাহ ও তদীয় রাসুলের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা। কারণ তাঁদের ব্যতীরেকে অন্য কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা রটানো ঈমান থেকে বহির্ভূত করে না। এটাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সর্বসম্মত (ইজমা ভিত্তিক) সিদ্ধান্ত।(এখানে কথা সুস্পষ্ট যে, রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেননি বা করেননি এমন কথা তিনি করেছেন বা বলেছেন বলে স্বচ্ছায় প্রচার করার অভিযোগে যে কোন ব্যক্তি কাফির এবং তার শরয়ী বিধান হলো তাকে হত্যা করা, মরদেহ জ্বালিয়ে ফেলা)। (মৌদুয়াতে কবীর (অনুদিত) ৪৬ ও ৪৭পৃঃ) * ২
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ!
শরীয়তের এহেন স্পষ্ট সিদ্ধান্ত জানার পর যদি কেউ হট ধরে থাকে, তবে তা তার অদৃষ্টের লিখন মনে করা ছাড়া আর অন্য কোন পথ নেই।
দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরঃ- কেউ কারো আক্বীদাহর জন্য দায়ী নয়। তবে সমর্থনের কারণে শরয়ী বিধান উভয়কে সমান ভাবেই ধরবে। বনী ইসরাইল তৎকালীন সময় তেতাল্লিশ জন নবী আলাইহিমুস সালামকে হত্যা করেছিলো, তাদের পক্ষে ন্যায় সঙ্গত কথা বলার অপরাধে আরো একশত বারজন ঈমানদারকে হত্যা করেছিলো। পবিত্র ক্বোরআনের ভাষায় মদীনার ইহুদীদেরকেও সেই অপরাধে দায়ী করা হয়। তাদেরকেই শাস্তি সম্পর্কে জ্ঞাত করা হয়। যেহেতু তারা তাদের অনুসারী ও তাদের কর্মকাণ্ডে মর্মাহত নয়; বরং সমর্থক।(সুরা -ই-আলে ইমরান ও তাফসীরের কিতাবাদি দ্রঃ)
এখানে আমাদের মধ্যে বাতিল আক্বীদাহ নেই এ বলে তাদের কেউ ছাড় পাবার সুযোগ নেই। তার কুফরীকে এভাবেই সমর্থন করা হলো যে, যেখানে নবীর শানে বে'আদবী সেখানে নেতার মুহাব্বতকে প্রাধান্য দেয়া হয়। তার পরিনাম কি হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।
এটাতো জামাত পন্থীদেরইও উত্তর যে, আমরা তো মাওলানা মওদুদীর আক্বীদাহ মানি না। তার আদর্শকে মানি। আক্বীদাহর বিষয় ছাড় দেয়ার সুযোগ থাকলে আলাদা রাজনৈতিক প্লাটফর্ম প্রয়োজন নেই। ইসলামী ফ্রন্টেরও বা প্রয়োজন কি? বাতিল পন্থীদের রাজনৈতিক অঙ্গন তো অনেক আছে। কোন একটাতে যোগ দিলে ইসলামী রাজনীতি করা যায়। তবে সেটা সুন্নীয়ত ভিত্তিক রাজনৈতিক অঙ্গন নয়। এটাই স্পষ্ট কথা। যারা তার (জোবাইরের) এ বাতিল আক্বীদাহ্ সম্পর্কে জ্ঞাত হবার পরও তার সাথে থাকবে, তাদের পিছনে ইকতেদা করে নামাজ পড়ার হুকুম সে ওহাবী ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার মতই হবে,যে বলে বেড়ায় আশরাফ আলী থানভীর আক্বীদাহ্ আমি মানি না। তবে একজন বড় আলেম হিসেবে শ্রদ্ধা করি, অথবা ওই জামাতপন্থী ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার মত হবে,যে বলে মাওলানা মওদুদীর আক্বীদাহ আমি পছন্দ করি না। তবে রাজনৈতিক কারণে জামাতে ইসলামীর রাজনীতির সাথে জড়িত। মোট কথায় রাজনৈতিক কারণে আক্বীদাহ বাদ দিলে, আর সুন্নীয়ত ভিত্তিক বলার সুযোগ নেই। সেটা হবে ইসলামী ঐক্যজোট, জামাতে ইসলামী ইত্যাদির মত।
তৃতীয় প্রশ্নের উত্তরঃ- মুসলমানকে জেনে বুঝে কাফের বললে নিজেই কাফের হয়ে যায়। বিষয়টি জেনে শুনে দেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম কি নিজেদেরকে কাফের বানাবার ঝুঁকি নিলেন? এটা কোন বোকার পক্ষেও সম্ভব নয়। তাই বিষয়টি প্রতিহিংসার কারণে নয়। আক্বীদাগত কারণেই। কোন আক্বীদাহগত জটিলতা না থাকলে যুগশ্রেষ্ঠ ওলামায়ে কেরাম কলম ধরতেন না, এ কথা নিশ্চিত।
তবে ফাতওয়া অমুক পীরের মাদ্রাসা থেকে দিতে হবে, এ দাবী নিজেরা আরেক ভুল পথে পা বাড়াবার নামান্তর। কারণ সব পীরেরই কোন না কোন মাদ্রাসা আছে। সব পীরের মাদ্রাসা থেকে ফাতওয়া দেয়া হলেই, নিজ নিজ মুরিদানেরা মানবে বলে দাবী ওঠবে। এমনটা সম্ভবও নয়, সুন্দরও নয়। শরীয়তের বিষয়ে পীরের প্রশ্ন যথার্থ নয়। শরীয়তের দলীলই যথেষ্ট। ফাতওয়া শরীয়তের দলীল সম্মত না হলে তাদের পীরের মাদ্রাসার পক্ষ থেকে অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হোক। তখন আমরা চুড়ান্তভাবে কলমের জবাব কলম দ্বারা দেবো ইনশাল্লাহ তা'আলা। এখানে ওসব পীর মাশায়েখ ও তাঁদের মাদ্রাসা সম্পৃক্ত হয়েছেন, যাদেরকে বাদ দিয়ে সুন্নীয়তের দাবী করা সম্ভব নয়। সুতরাং কোন পীরের মাদ্রাসার দোহাই দেয়া সেটা যুক্তিযুক্ত কারণ নয় বলে মনে করি। শরীয়তের ফয়সালাকে মেনে যাওয়াই প্রকৃত মু'মিনের কাজ।
পরিশেষেঃ সর্বস্তরের সুন্নী মুসলমানদের খেদমতে আমার জিজ্ঞাসা, সে পোষ্টারের ইমাম,খতীব,সুন্নীয়তের কান্ডারী বা বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর দিয়ে আমাদের লাভ কি? যারা নবীর নামে মিথ্যা রটনা, নবীর শানে বে-আদবী করার পরে পক্ষপাতিত্ব ছাড়তে ব্যর্থ হয়েছে? রাজনৈতিক তখনই সুন্নীয়ত ভিত্তিক হবে যখন তা রাসুলের মান-মর্যাদাকে অক্ষুন্ন রাখতে সহায়ক ও সক্ষম হয়। দাওয়াত নির্ভর সুন্নীয়তের নাম সর্বসাধারণের কি কাজে আসবে? যারা নেতাকে নবীর চেয়ে প্রাধান্য দেয়, তাদের মূখে ওহাবী গং বাতিলপন্থীদের বিরুদ্ধে চিৎকার দেয়ার যৌক্তিকতা কোথায়? এটা তো মায়া কান্না মাত্র। যেখানে রাসুলের নামে মিথ্যা রটনা বা তোহমত দেয়া, রাসুলের দোয়া কবুল না হবার উপর বক্তব্য, সেখানে আবার নবীর চেয়ে নেতার গুরুত্ব? এটাই তাদের সুন্নীয়ত। যেখানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নামে মিথ্যাচারের অপরাধে হত্যা করে মরদেহ জ্বালিয়ে দেবার নির্দেশ দেন, তথা তা বাস্তবায়ন করা হয়, সেখানে নেতাকে বাদ দিতে না পেরেও কি সুন্নীয়তের গৌরব? বিষয়টি পাঠকদের বিবেচনায় রাখলাম। আল্লাহ! হেদায়তের উপর অটল রাখুন। আমীন!
(মুহাম্মদ ইব্রাহিম আল-ক্বাদেরী)
শায়খুল হাদীস
গহিরা এফ,কে,জামেউল উলুম (কামিল) মাদ্রাসা, গহিরা, রাউজান, চট্টগ্রাম।
(١)
و للطبرانی فى الاوسط عن عبد الله بن عمر و ان رجلا ليس حلة مثل حلة النبى صلى الله عليه وسلم ثم اتى اهل بيت من المدينة فقال انه عليه السلام امرنى اى اهل بيت من المدينة شئت استطعت فاعد واله بيتا وارسلوا رسولا الی رسوله صلی الله عليه وسلم فاخبره فقال لابی بكر و عمر رضی الله عنهما انطلقا اله فان وجدتماه حيا فاقتلاه ثم حرقاه بالنار و ان وجدتماه قد كفتماه و لااراكما الا وقد كفيتماه فحرقاه فاتياز فوجداه قد خرج من الليل يبول فلدغته حية افعی فمات فحرقاه بالنار ثم رجعا اليه صلی الله عليه وسلم فاخبرابه فقال عليه السلام من كذب علی متعمدا فليتبوأ مقعده من النار كذا فی۔موضوعات كبير۔صفحه۔٢٢۔٢٣
(٢)
قال شيخ مشائخنا الحافظ جلال الدين السيوطی لا اعلم شيئا من الكبائر قال احد من اهل السنة بتكفير مرتكبة الا الكذت علی رسول الله صلی الله عليه وسلم فان الشيخ ابا محمد الحرينی من اصحاب الشافعی و هو والد امام الحرمين قال ان من تعمد الكذب علی رسول الله صلی الله عليه وسلم مكفر كفرا يخرجه عن الملة و تبعه علی ذالك طابفة منهم الامام ناصر الدين بن المنير من ابمة المالكية۔قلت ويؤيدهما قوله عليه السلام ليس الكذب علی ككذب علی غيری و كذا امره بقتل من كذب عليه و احراقه بعد موته و ذالك ان الافنراء عليه افتراء علی الله فانه ما ينطق عن الهوی ان هو الا وحی يوحی او يقويه قوله فی ما تقدم؛ما اقول الا ما نذل من السماء؛فاذا كان كذالك فمن اظلم من من افتری علی الله كذب وانما يفتری الكذب الذين لا يؤمنون بايات الله ای الكذب علی الله ورسوله فان الكذب علی غيرهما لا يخرجه عن الايمان باجماع اهل السنة و الجماعة كذافی موضوعان كبير۔صفحه۔٤٧۔٤٧
وكذلك يكفر بقوله ((ان العالم قديم)) و هو ما سوی الله لأنه يستلزم عدم و جود الصانع أو يقول ((ان العالم باق علی الدوام فلايفني)) لأنه يستلزم انكار القيامة۔
وأيضا ذكر العلامة علي القاري الحنفي في خلافةالصديق۔ أما من أنكر صحبة أبي بكر فيكفر لكونه انكارا النص القرأن حيث قال الله تعالی ((اذ يقول لصاحبه لا تحزن)) و اجماع المفسرين علی أنه المراد به كما في شرح الفقه الأكبر۔ (صفحة ۔٢٠٠
আল্লাহর সৃষ্টি জগতকে চিরন্তন বলা অথবা এটা 'ফানা' (বিলীন) হবেনা বলে দাবী করাও কুফরী। কারণ, তাতে স্রষ্টার অস্থিত্ব ও ক্বিয়ামত কায়েম হওয়াকে অস্বীকার করা হয়। সুতরাং বিশ্বজগতকে চিরন্তন বলা কুফরী। অনুরূপভাবে, সেটা ফানা হবেনা বলে উক্তি করাও (কুফরী)।
সুতরাং যেহেতু, কুফরীকে অনিবার্য (لازم) করে এমন উক্তি কুফরীর শামিল, সেহেতু রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দো'য়া কবূল হয়নি বলে আকীদা পোষণ করাও কুফরী। উক্ত বক্তার উপরোক্ত বক্তব্যে নবীকে যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে মেনে নেয়া হয়নি। কারণ, তিনি বলেছেন, "নবীর অন্তরের নজর ছিলো মুরব্বী ওমরের দিকে; কিন্তু আল্লাহ কবুল করলেন জুনিয়র ওমরকে।" কথাটি এমন হলো- 'আমি একজন বয়স্ক লোকের চাকুরী কামনা করে দো'য়া করেছি; চাকুরী হয়ে গেলো অন্য একজন তরুণ প্রভাবশালী ব্যক্তির।' তাহলে আমার দো'য়া যে কবূল হলোনা তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। অনুরূপভাবে, বক্তার কথাও এমনি হলো যে, 'রসূলে পাকের পবিত্র অন্তরের নজর যে লোকটির দিকে ছিলো আল্লাহ ঐ লোকটির ইসলাম কবূল করলেন না; বরং তার বিপরীত ব্যক্তিটির 'ইসলাম' কবুল করেছেন।'(নাঊযু বিল্লাহ্!) যদি এ ধরনের আক্বীদা হয়, তাহলে সেটা নিশ্চয় কুফরী। কারণ, শরীয়তে যে বিষয়টি 'খবরে মুতাওয়াতির' (এমন হাদীস, যার বর্ণনাকারী প্রতিটি যুগে অগণিত, তথা এতো বেশী যে, তাঁদের সবার কোন অবাস্তব কথার উপর একমত হওয়ার কল্পনাও করা যায়না।) পর্যায়ের দলীল দ্বারা প্রমাণিত, তা অস্বীকার করা কুফরী। শানে রেসালতের ক্ষেত্রে এহেন মন্তব্য নবীর মান ক্ষুন্ন করার শামিল। নবীকে যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে মানতে হবে। নবূয়তের যোগ্যতার মধ্যে কোনরূপ কমতি করা যাবেনা। এমনকি কোন নবীর দেহের পর্যন্ত কোন ত্রুটি দেখালে দেখালে তাও কুফরী হয়। এখানে 'দো'য়া কবূল হওয়া'র বিষয়টিতো নবূয়তের মর্যাদার সাথে সম্পৃক্ত বিষয়। সুতরাং 'রসুলে পাকের দো'য়া কবূল হয়নি' বললে তা কুফরী না বলার কোন উপায়ই নেই।
উল্লেখ্য যে, উক্ত বক্তার বক্তব্যে রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর 'ইলমে মা-কা-না ওয়ামা ইয়াকূনু' (ইলমে গায়ব)-কেও অস্বীকার করা হয়েছে। হযরত ওমর ফারূক্ব (রাদ্বিয়াল্লাহ আনহু)'র ইসলাম গ্রহণ করা সম্পর্কে হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পূর্বেই অবগত ছিলেন। আবূ জাহলের দিকে তাঁর অন্তরের নজর থাকার কোন কারণ নেই। যেহেতু, ক্বিয়ামত পর্যন্ত যারা ঈমান আনবেন আর যারা কুফরী করবে সবার ব্যাপারে জ্ঞাত বলে হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই ঘোষণা দিয়েছেন। এটাই আহলে সুন্নাত ওয়া জমা'আতের আক্বীদা। এ'ছাড়া, আঁ-হযরত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো আবূ জাহলের বিপক্ষে বিচার প্রার্থনা করে ফরিয়াদ করেছেন বিধায় তার দিকে হুযূরের অন্তর মুবারকের দৃষ্টি থাকার প্রশ্নই ওঠেনা।
..... كما روي : اللهم عليك بابي جهل بن هشام الخ
وروی عن ابن عمر رضي الله عنهما ان رسول الله صلی الله عليه وسلم قال اللهم اعز الاسلام باحب هذين الرجلين اليك بابي جهل أو بعمر بن الحطاب قال وكان احبهما اليه عمر۔قال الترمذي هذا حديث حسن صحيح غريب من حديث ابن عمر۔
অর্থাৎঃ হযরত ইবনে ওমর (রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমা) থেকে বর্ণিত,রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এভাবে বললেন, "হে আল্লাহ! এ দু'জন লোকের মধ্যে আপনার পছন্দনীয় ব্যক্তি দ্বারা ইসলামকে শক্তিশালী করুন!" তিনি আরো বলেন, "উক্ত দু'জনের মধ্যে হযরত ওমর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু)ই তাঁর নিকট প্রিয় ব্যক্তি।"
তাছাড়া, হযরত আয়েশা (রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা)'র বর্ণনায়, হুযূর (সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিশেষভাবে হযরত ওমর (রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু)'র পক্ষেই দোয়া করেছেন।
(সুতরাং 'হযরত ওমর' ছাড়া রসূলে পাকের অন্তর মুবারকের দৃষ্টি অন্য কারো দিকে থাকার প্রশ্নই আসেনা।)
وكما في كتاب الفقه علی المذاهب الأربعة تحت مبحث حكم المرتد
..............
ويكفر إن عرض في كلامه بسب نبي أو ملك بأن قال عند ذكره أما أنا فلست بزان أو بساحر أو الحق بنبي أو ملك نقض ولو ببدنه كعرج و شلل أو طعن في وفور علمه اذ كل نبي أعلم أهل زمانه و سيدهم صلی الله عليه وسلم أعلم الخلق أجمعين۔ ((الجزء۔٥ : الصفحة
((٤٢٣
(এখানে ইলমের বিষয়টিও রয়েছে। তাই বলে উক্ত অংশটি লিপিবদ্ধ করা হলো।)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দো'আ কবুল হওয়া নিশ্চিত। এটা 'খবর-ই-মুতাওয়াতির' পর্যায়ের বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত মু'জিযা; অথচ আলোচ্য বক্তার বক্তব্যে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দো'আ কবূল না হওয়ারই আকীদা ব্যক্ত করা হয়েছে। তার বক্তব্যে বলা হলো - "দো'আ করার সময় রসূলের অন্তরের নজর ছিল মুরব্বী ওমরের দিকে; কিন্তু আল্লাহ্ কবূল করলেন 'জুনিয়র ওমর'-কে।" এখানে সুস্পষ্টভাবে বলা হলো যে, রসূলের দো'আ কবূল হলোনা; অথচ আল্লামা শায়খ ইউসুফ বিন ইসমাঈল নাবহানী বলেন-
الباب الثامن في المعجزات المتعلقة باستجابة دعائه صلی الله عليه وسلم (( اعلم أن أحاديث استجابة دعائه صلی الله عليه وسلم كثيرة جدا لايمكن حصرها، قال القاضي عياض في الشفاء اجابة دعوة النبي صلی الله عليه وسلم لجماعة دعالهم أو عليهم متواترة معلومة ضرورةَ۔
((حجة الله علی العالمين في معجزات سيد المرسلين۔ص ٤١٠
যে কারো ব্যাপারে যে কোন বিষয়ে রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দো'আ নিশ্চিতভাবে কবূল হওয়া তাঁর অন্যতম মু'জিযা। সুতরাং নবীর কোন মু'জিযাকে স্বীকার না করা মানে তাঁকে ত্রুটি সহকারে মান্য করা।
হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা দ্বীন সম্পর্কে যে বিধান বা তথ্য 'মুতাওয়াতিরাহ্-ই- মা'লূমাহ্ যরুরাতান' (متواترة معلومة ضرورة) পর্যায়ের হয়, সেই বিধান বা তথ্যকে অস্বীকার করা কুফরী। যেমন মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি)'র স্বরচিত কিতাব 'শরহুল ফিক্বহিল আকবার' -এ লিখেছেন-
قال القاضي عضد الدين في المواقف و لا يكفر احد من اهل القبلة الا فيما فيه نفي الصانع القادر العليم او شرك او انكار للنبوة او ما علم مجيئه بالضرورة او المجمع عليه الخ.......((الصفح١٩٩
وأيضا فيه فلاخلاف بين المسلمين ان الرجل لو اظهر انكار الواجبات الظاهرة المتواترة او المحرمات الظاهرة المتواترة فانه يستتاب فان تاب فبها و الا قتل كافرا مرادا. ((الصفحة ٢٠٠
২) হযরত ওমর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু)'র ইসলাম কবূল করার বিষয়টি সম্পর্কে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পূর্বেই জানতেন। আবু জাহল যে কাফির অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে তাও হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিশ্চিতভাবে জানতেন। শুধু তাই নয়, বরং ক্বিয়ামত পর্যন্ত যারা ঈমান আনবেন আর যারা কুফরী করবে সবার ব্যাপারে আঁ-হযরত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে অবগত করানো হয়েছে। সুতরাং তিনি তা জানেন। মুনাফিক্বগণ এ' সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করার কারণে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর 'ইলমে গায়ব'-(অদৃশ্য জ্ঞান)' এর সমর্থনে আয়াত নাযিল হলো। সুতরাং এটা পবিত্র ক্বোরআন দ্বারা প্রমাণিত একটা মাসআলা বা মু'জিজা। এটাকে অস্বীকার করা কুফরী। ওহাবী ও মওদুদী সম্প্রদায় দু'টির সাথে আমাদের বিরোধপূর্ণ মাসআলগুলোর মধ্যে 'ইলমে গায়ব'-এর বিষয়টিও অন্যতম। সুতরাং আলোচ্য বক্তার বক্তব্য ও বাতিলপন্থীদের আক্বীদার মধ্যে পার্থক্য রইল কোথায়?
ঈমানের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি অনেক। একটা কুফরীই কাফির হবার জন্য যথেষ্ট। মুনাফিক্বরা হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর 'ইলমে গায়ব' সম্পর্কে উপহাস করার কারণে রইলো কোথায়?
مَا كَانَ اللهُ لِيَذَرَ الْمُؤْمِنِيْنَ عَلی مَآ أنْتُمْ عَلَيْهِ حَتّی يَمِيْزَ الْخَبِيْث مِنَ الطَّيِّبِ ط وَمَا كَانَ اللهُ لِيُطْلِعَكُمْ عَلی الْغَيْبِِ وَلَكِنَّ اللهَ يَجْتَبِيْ مِنْ رُّسُُلِه مَنْ يَّشاءُ ص فَآمِنُوْا بِاللهِ وَ رُسُلِه..... الآية
سبب نزول هذه الآية : قال الكلبي في سبب نزول هذه الآية: ((قالت قريش يا محمد تزعم أن من خالفك فهو في النار و الله عليه غضبان و ان من أطاعك و تبعك على دينك فهو في الجنة و الله عنه راض، فأخبر ما بمن يؤمن بك و بمن لا يؤمن بك: فأنزل الله تعالى هذه الآية)) و قال السدي : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : ((عرضت علىَّ أمتي في صورها في الطين كما عرضت على آدم و أعلمت من يؤمن بي و من يكفر بي)). فبلغ ذلك المنافقين فقالوا استهزاء : زعم محمد أنه يعلم من يؤمن به و من يكفر ممن لم يخلق بعد و نحن معه وما يعرفنا. فبلغ ذلك رسول الله صلى الله عليه وسلم فقام على المنبر فحمد الله و أثنى عليه ثم قال : ((ما بال أقوام طعنوا في علمي، لا تسألوني عن شيء فيما بينكم و بين الساعة الا نبَّأتكم به)) فقام عبد الله بن حذافة السهمي فقال : من أبي يا رسول الله ! فقال : ((حذافة)). فقام عمر فقال : ((يا رسول الله رضينا بالله ربا و با لاسلام دينا و بالقران اماما و بك نبيا فاعف عنا عفا الله عنك.)) فقال النبي صلى الله عليه وسلم: ((فهل انتم منتهون؟ فهل انتم منتهون؟)). ثم نزل عن المنبر فأنزل الله هذه الاية. كذا في الخازن. ((الجزء الصفحة ٣٠٨–
আয়াতের বিবরণ থেকে পরিস্কারভাবে প্রমাণিত হয় যে, হযরত ওমর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) যে ইসলাম গ্রহণ করবেন, সে সম্পর্কে হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জ্ঞাত ছিলেন।
সুতরাং তিনি আবূ জাহলের দিকে অন্তরের নজর রেখেছেন বলার মধ্যে হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে منَّهم করা হয়েছে, অর্থাৎঃ হুযূরের প্রতি অপবাদই দেয়া হয়েছে।
ফিক্বহ্ শাস্ত্রের নির্ভরযোগ্য কিতাবগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, উল্লেখিত বক্তব্য প্রদানকারীর অন্তরে যাই থাকুক না কেন, বক্তব্যের আলোকে তাকে 'কাফির' বা 'মুরতাদ্দ্' না বলার কোন অবকাশ ইসলামী শরীয়তে নেই। কারণ, 'কিতাবুল ফিক্বহে আলাল মাযাহিবিল আরবা'আহ্'র উদ্ধৃতি দিয়ে পূর্বেই বলা হয়েছে যে, أو طعن في وفور علمه; অর্থাৎঃ যে কোন নবীর ইলমকে যথাযোগ্যভাবে মেনে না নিলে কাফির হয়ে যাবে।
মোটকথা, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, এমনকি, যে কোন নবীর মর্যাদায় ত্রুটি দেখিয়ে কেউ বক্তব্য রাখলে কিংবা আক্বীদা পোষণ করলে সে কাফির হয়ে যাবে। অনুরূপভাবে, যে বিষয়টি শরীয়তে 'কিতাবুল্লাহ্' বা 'খবরে মুতাওয়াতির' দ্বারা প্রমাণিত, সে বিষয়টি কেউ অস্বীকার করলেও কাফির হয়ে যাবে। যেমনটি ইতোপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। (আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি 'শরহে ফিক্বহে আকবার'-এর মধ্যে লিখেছেন-
قال القاضي عضد الدين في المواقف و لا يكفر احد من اهل القبلة
َّ(كما مرّ و أيضا فلا خلاف بين المسلمين.... كما مر
'বাহরুর রাইক্ব'-এর 'হামেশ' (বা পার্শ্বে সংযুক্ত কিতাব) 'মিনহাতুল খালিক্ব আলাল বাহরির রাইক্ব' (منحة الخالق على البحر الرائق) কিতাবে 'কুফরী কালাম সম্পর্কে' উল্লেখ রয়েছেঃ
وروي مثله الوليد بن مسلم عن مالك و حكمى الطبري مثله عن أبي حنيفة و أصحابه فيمن ينقصه صلى الله عليه وسلم أو بريء منه أو كذبه اه ((الجزء– ٥ :الصفحة ١٣٥
এখানে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে কুফরী বলে ফতোয়া দেয়া হয়েছে। উল্লেখিত বক্তার বক্তব্যে পরিষ্কার ভাষায় নবীর মান ক্ষুন্ন করা হয়েছে। কারণ, তিনি রসূলের দো'আ কবূল হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন। তদুপরি, তিনি এর মাধ্যমে হুযূরে পাকের 'ইলমে গায়ব'কেও অস্বীকার করেছেন। বক্তা তার বক্তব্যে কথাগুলো স্বেচ্ছায় বলেছেন, অনিচ্ছাকৃতভাবে নয়। বলার পর অনিচ্ছাকৃতভাবে বলেছেন কিনা তা বুঝার জন্য তাকে পত্র দিয়ে, বাহক পাঠিয়ে অবহিত করা হয়েছে যে, তার বক্তব্যে 'কুফরী শব্দাবলী' রয়েছে। কিন্তু এরপরও তিনি একই বক্তব্যের উপর হঠ ধরে থাকেন। তাছাড়া, তার বক্তব্যের তা'ভীল কিংবা ভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করারও অবকাশ নেই। সুতরাং তিনি কী আক্বীদা অন্তরে রেখে স্বেচ্ছায় উক্ত বক্তব্য পেশ করছেন, তা এখন বিবেচ্য নয়; বরং কথাগুলো স্বেচ্ছায় বলার বিষয়টিই এখানে প্রাধান্য পাবার যোগ্য। যেমন 'আল-বাহরুর রাইক্ব' নামক ফতোয়ার কিতাবে উল্লেখিত আছেঃ
و في الجامع الاصغر اذا أطلق الرجل كلمة الكفر عمدًا لكنه لم يعتقد الكفر، قال بعض اصحابنا لا يكفر لان الكفر يتعلق بالضمير و لم يعقد على الكفر و قال بعضهم يكفر و هو الصحيح عندي لأنه استخف بدينه اه و الحاصل أن من تكلم بكلمة الكفر هازلاً أو لاعباً كفر عند الكل و لا اعتبار باعتقاده كما صرح به قاضيخان في فتاواه – و من تكلم بها مخطأ أو مكرهاً لا يكفر عند الكل و من تكلم بها عالماً عمداً كفر عند الكل و من تكلم بها اختياراً جاهلاً بانها .
كفر. ((البحر الرائق- الجزء–٥: الصحفة ١٣٤
وفي الخانية رجل كفر بلسانه طائعاً و قلبه على الايمان يكون كافراً و لا يكون عند الله مؤمناً ، كذا في هامش الهندية. ((الجزء–٣: الصحفة ٥٧٢
وأيضا فيها من رضى بكفر الغير يصير كافراً. الصفحة- ٥٧٢))
وأيضا فيها : الرضا بالكفر كفر ((الصفحة ٥٧٣)) و في منحة الخالق على البحر الرائق : ان الرضا بكفر الغير كفر من غير تفصيل. ((الصفحة ٤٤٨
وفي ما لا بد منه (باب كلمة الكفر از فتاوى بر هانى :
4 1/2"
:(وفی مالا بد منہ (باب کلمة الكفر از فتاوى بر هانى
مسئلہ در مضمرات از نصاب و جامع اصغر گفتہ کہ اگر کے کلمہ کفر عمدا گفت لیکن اعتقاد کفر ندارد بعضی گفتہ اند کہ کافر نشود کہ کفر از اعتقاد تعلق دارد و بعضے گفتہ اند کہ کافر شد کہ رضاست بکفر،وفی الحاشیہ : اگر کوئی شخص قصداً کلمہ کفر کا تلفظ کرے، تو وہ کافر ہونا ہی اصح ہے، کیونکہ وہ کفر کے ساتھ راضی ہوا ہے، بحر الرائق) صفحہ ١٩٤) وایضا فیہ : اگر کلمہ کفر باختیار خور گوید ونہ داند کہ ایں کلمہ کفراست، اکثر علماء بر آنند کہ کافر شود و معذور نباشد، اگر بے قصد بر زباں رود کافر نشود، صفحہ ١٨٦،
قال القونوي و لو تلفظ بكلمة الكفر طائعا غير معتقد له يكفر لأنه راضٍ بمباشرته وان لم يرض بحكمه كالهازل فانه يكفر و ان لم يرض بحكمه و لا يعذر بالجهل و هذا عند عامة العلماء خلافا للبعض
-شرح الفقه الاكبر- الصفحة-)١٩٩))
الواقعة المتعلقة باسلام سيدنا عمر بن الخطاب رضى الله عنه
হযরত ওমর ফারূক্ব রাদ্বিয়াল্লাহ তা'আলা আনহু ইসলাম গ্রহণ করেছেন- পুরুষদের মধ্যে মতান্তরে ঊনচল্লিশ জনের পর। অর্থাৎ হযরত হামযা বিন আবদিল মুত্তালিব (রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু)'র ইসলাম গ্রহণ করার তিন দিন পরেই। হযরত হামযা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু 'দ্বার-ই-আরক্বাম'- এ গিয়ে ইসলাম গ্রহণের দু'দিন পর বুধবার বিকাল বা সন্ধ্যায় হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত ওমর ফারূক্ব (রাদ্বিয়াল্লাহ আনহু)'র জন্য দো'আ করেন। বৃহস্পতিবার সকালেই হযরত ওমর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) এসে ইসলাম কবুল করলেন। পক্ষান্তরে, 'সূরা-ই-লাহাব' নাযিল হবার পর পরই আবূ জাহলের বিচার আল্লাহর হাতে ন্যাস্ত করে হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করেন।যে সব হাদীসের মধ্যে আবূ জাহল বিন হিশাম কিংবা ওমর বিন খাত্তাবের জন্য দো'আ করেছেন মর্মে বর্ণিত আছে, সেসব হাদীসের ব্যাখ্যায় হাদীস বিশারদদের অভিমত হলো- "আবূ জাহলকে আলাদা করে বাদ দেয়ার জন্য তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে; দু'জনের মধ্যে যে কোন একজনের ইসলাম গ্রহণ কামনার্থে নয়; তা'ছাড়া, 'আবূ জাহল কাফির হয়ে মরবে, আর ওমর বিন খাত্তাব আমীরুল মু'মিনীন হবেন,' এ বিষয়ে সন্দেহ থাকার ভিত্তিতেও নয়।
كما روى عن ابن عباس رضى الله عنهما عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: اللهم اعز الاسلام بابي جهل بن هشام او بعمر بن الخطاب (قال العلامة الملا علي القارى الحنفي في المرقاة او للتنويع لا للشك و لا يبعد ان تكون بل للاضراب) فاصبح عمر اي دخل في الصباح بعد دعائه صلى الله عليه وسلم قبله) فغدا (اي اقبل غاديا اي ذاهبا في أول نهاره) على النبي صلى الله عليه وسلم ثم صلى في المسجد ظاهراً - رواه أحمد و الترمزي– و روي عن ابن عمر رضي الله عنهما ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: ((اللهم اعز الاسلام باحب هذين الرجلين اليك بابي جهل او بعمر بن الخطاب))، قال وكان احبهما اليه عمر.)) قال الترمزي : هذا حديث حسن صحيح غريب من حديث ابن عمر. ففي تحفة الاحوذي: ((اللهم اعز الاسلام اي قوة و انصره و اجعله غالباً على الكفر بابي جهل او بعمر بن الخطاب اي للتنويع لا للشك))، و روي الحاكم في مستدركه عن ابن عباس رضى الله تعالى عنهما اللهم ايد الدين بعمر بن الخطاب)). و في لفظ ((بعمر)). و قال انه صحيح الاسناد . و فيه عن عائشة رضي الله عنها: ((اللهم اعز الاسلام بعمر بن الخطاب خاصة)). و قال انه صحيح على شرط الشيخين و لم يخرجاه. كذا في المرقاة. و أيضا قال على القاري في المرقاة: قلت و أما ما يدور على الالسنة من قوله ((اللهم ايد الاسلام بأحد العمرين فلا أعلم له أصلا ((الجزء–١١ : الصفحة ٣٠٠
وفي المواهب للقسطلاني : اما قال عليه السلام و دعا على قريش : اللهم عليك بقريش و ابي جهل بن هشام و عقبة بن ابي معيط الخ.. بعد نزول سورة لهب و دعا باسلام عمر بن الخطاب خاصة بعد اسلام حمزة بن عبد المطلب بثلثة أيام ملخصاً
فلا احتمال لنظر رسول الله صلى الله عليه وسلم قلبا الى ابي جهل بن هشام
উপরোক্ত বিবরণের আলোকে পরিস্কারভাবে প্রমাণিত হলো যে, মৌখিক ও আন্তরিকভাবে রসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নজর মুবারক ওমর বিন খাত্তাবের দিকেই ছিলো। আলোচ্য বক্তার ভাষায়, 'মুরব্বী ওমর' তথা 'আবূ জাহল' বা অন্য কারো দিকে আদৌ হুযূরের লক্ষ্য ছিলোনা। সুতরাং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্ত দো'আর মধ্যে আবূ জাহল্ কিংবা অন্য কারো প্রতি নজর ছিলো বলা হুযূরের প্রতি একটা অপবাদ রচনা বা ভিত্তিহীন কথা রটানো বৈ-আর কিছুই নয়, যা নিশ্চিত জাহান্নামী হবার মতোই অপরাধ।
كما قال العلامة الشيخ يوسف بن اسماعيل النبهاني في كتابه ((حجة الله على العلمين في معجزات سيد المرسلين)) صلى الله عليه وسلم ((ختم الكتاب)) المبحث الثاني في ذم الكذب على الله و رسوله، قال الزواجر ايضا قال تعالى ((وَ يَوْمَ القيامة تری الذين كذبوا على الله وجوههم مسودة الزمر :٦٠ و أخرج الشيخان و غير هما عن أبي هريرة رضي الله تعالى عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : ((من كذب على متعمدا فليتبوأ مقعده من النار)). قال ابن حجر المذكور : و لهذا الحديث طرق كثيرة صحيحة بلغت التواتر — و مسلم وغيره : من حدث عني بحديث يرى أنه كذب فهو احد الكاذبين. و مسلم ايضا : ((ان كذباً علي ليس ككذب على احد فمن كذب علي متعمدا فليتبوأ مقعده من النار)). و الطبراني عن واثلة رضي الله عنه : ((أن من اكبر الكبائر ان يقول الرجل عليَّ مالم أقل)) - قال : و قال الجلال البلقيني : جاء الوعيد في أحاديث كثيرة بان من كذب علي النبي صلى الله عليه وسلم متعمدا فليتبوأ مقعده من النار و قال العلماء انها بلغت حدا التواتر و قال البزاز رواه مرفوعاً نحو سبعين صحابيا و قال ابن الصلاح انه حديث بلغ التواتر رواه الجم الكثير من الصحابة قيل انهم يبلغون ثمانين نفسا - و جمع الحافظ ابن حجر العسقلاني في طرقه في جزء ضخم قيل رواته فوق سبعين صحابيا و ذكر من جملة من رواه العشرة الا عبد الرحمن بن عوف و بلغ بهم الطبراني و ابن منده سبعة و ثمانين منهم العشرة- انتهت عبارة الزواجر باختصار. ((الصفحة ٦٢٦
__________________________________
:المجيب
الأحقر محمد ابراهيم القادري عفي عنه
شيخ الحديث
،جامع العلوم مدرسة ايف ك كامل العالية
راؤجان شيتاغونغ في: ٢٠٠٢/١١/٢٠م
উত্তরদাতাঃ
[ মুহাম্মদ ইব্রাহীম আল-ক্বাদেরী ]
শায়খুল হাদীস
গহিরা এফ. কে. জামেউল উলুম (কামিল) মাদরাসা, গহিরা, রাউজান, চট্টগ্রাম
--------------------------------------------------
উক্ত বক্তা (আলেম) হচ্ছেন- মাওলানা জয়নুল আবেদীন জুবাইর, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট থেকে বদ-আক্বীদাসহ বিভিন্ন কারণে বহিষ্কৃত, আগ্রাবাদ আবাসিক কলোনী , চট্টগ্রাম।
__________________________________
قد حصحص الحق فما ذا بعد الحق الا الضلال
نمقه / قاضي محمد نور الاسلام هاشمي
كل گاؤن، جلال آباد، بايزيد ، شيتاغونغ
সত্য সুস্পষ্ট হলো। তবুও না মানলে গোমরাহী ছাড়া আর কী হতে পারে?
(দস্তখত/কাজী মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম হাশেমী)
ইমামে আহলে সুন্নাত, শায়খে ত্বরীক্বত
ঠিকানা:
কুলগাওঁ, জালালাবাদ, বায়েজিদ, চট্টগ্রাম।
তারিখঃ ০৫.০১.২০০৩ইং
--------------------------------------------------
قد أصاب من أجاب
توقيع/علامة محمد مصلح الدين
غفر له و لو الديه المتين
مدير المدرسة السبحانية العالية، فتهر غاته
شيتاغونغ، بنغلاديش. في ٢٠٠٢/١١/٢٥م
উত্তরদাতা দাতা সঠিক উত্তরই দিয়েছেন।
(দস্তখত/ মুহাম্মদ মুসলেহ উদ্দীন)
গাযযালী-ই-যামান
অধ্যক্ষ, ছোবহানিয়া আলীয়া মাদরাসা, পাথরঘাটা, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
তারিখঃ ২৫.১১.২০০২ইং
--------------------------------------------------
الجواب صوتي
توقيع/محمد موسى المجددي
المدير السابق لمدرسة شاه شاند أولياء
العالية، بتية ، شيتاغونغ. في : ٢٠٠٣/٠٢/٠١م
উত্তরটি যথাযথ হয়েছে।
(দস্তখত / মুহাম্মদ মূসা মুজাদ্দেদী)
সাবেক অধ্যক্ষ,
শাহচান্দ আউলিয়া আলীয়া মাদরাসা, পটিয়া, চট্টগ্রাম
০১.০২.২০০৩ইং
---------------------------------------------------
ان كانت الواقعة واقعة فالجواب صواب
و المجيب مصيب و الله تعالى أعلم بالصدق
و الصواب و اليه المرجع و المأب. اللهم ارنا الحق
حقا و ارزقنا اتباعه و ارنا الباطل باطلا و ارزقنالجتنابه. و صلى الله على النبي الكريم و اله و اصحابه و بارك وسلم
نمقة / قاضي محمد أمين الاسلام هاشمي
احسن منزل ، كل كاؤن، شيتاغونغ
ঘটনা যদি বাস্তব হয়, তবে জবাব বিশুদ্ধ, জবাবদাতা
সঠিক জবাবই দিয়েছেন।
(দস্তখত/ কাজী আমীনুল ইসলাম হাশেমী)
ঠিকানাঃ আহসান মঞ্জিল, কুলগাওঁ, চট্টগ্রাম।
--------------------------------------------------
الجواب حق
توقيع / محمد انعام الحق
المدير السابق،المدرسة الواجدية العالية
شيتاغونغ. في ٢٠٠٢/٠١/٠٦م
জবাবটি বিশুদ্ধ।
(দস্তখত/মোহাম্মদ এনামুল হক)
সাবেক অধ্যক্ষ,
ওয়াজেদিয়া আলিয়া মাদরাসা, চট্টগ্রাম
তারিখঃ ০৬.০১.২০০৩ইং
---------------------------------------------------
لله در المجيب
توقيع / محمد عبيد الحق النعيمي القادري
شيخ الحديث / الجامعة الأحمدية السنية العالية،
شيتاغونغ. في ٢٠٠٣/٠١/٣٠م
আল্লাহর তৌফিকক্রমে জবাবদাতা সঠিক-সুন্দর জবাবই দিয়েছেন।
(দস্তখত /মুহাম্মদ ওবাইদুল হক নঈমী ক্বাদেরী)
শাইখুল হাদীস,
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা, চট্টগ্রাম
---------------------------------------------------
الجواب حق بلاارتياب و الله موفق الحق و الصواب
توقيع / محمد ادريس الرضوي
شيتاغونغ. في ٨ ذي قعده ١٢٢٣ه
জবাবটা যে শুদ্ধ হয়েছে তাতে সন্দেহ নেই। আল্লাহই সত্য ও সঠিক জবাব দানের শক্তিদাতা।
(দস্তখত/মোহাম্মদ ইদ্রীস রেজভী)
চট্টগ্রাম
তারিখ : ০৮ই যিলক্বদ, ১২২৩ হিঃ
---------------------------------------------------
قد اصاب فيما أجاب
توقيع / محمد صغير عثماني
نائب مدير الجامعة الأحمدية السنية العالية،
شيتاغونغ. في ٢٠٠٣/٠٢/١٨م
তিনি সঠিক উত্তরই দিয়েছেন।
(দস্তখত/ মোহাম্মদ সগীর ওসমানী)
উপাধ্যক্ষ,
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা, চট্টগ্রাম
তারিখঃ ১৮.০২.২০০৩ইং
---------------------------------------------------
الجواب صحيح موافق للادلة الاربعة
توقيع / محمد عبد المالك
محدث أحسن العلوم الجامعة الغوثية
العالية ، شيتاغونغ. في ٢٠٠٣/٠١/٠٢م
জবাবটি বিশুদ্ধ, ইসলামের চার দলীলের
অনুরূপই।
(দস্তখত/ মোহাম্মদ আবদুল মালেক)
মুহাদ্দিস,
আহছানুল উলুম জামেয়া গাউছিয়া আলিয়া মাদরাসা,
-------------------------------------------------
الجواب صحيح
توقيع / ابو المنصور محمد نور العالم
حجازي
المدير السابق/ مدرسة رانغاماتي الاولى
জবাবটি বিশুদ্ধ।
(দস্তখত/ আবূল মানসুর মুহাম্মদ নূরুল আলম হেজাযী)
সাবেক অধ্যক্ষ,
রাঙ্গামাটী সিনিয়র মাদরাসা
--------------------------------------------------
جوابش صحیح و دلیلش قوی
خلافش نباشد بجز کجروی
توقيع/ محمد عبد المنان عفي عنه
شيتاغونغ-بنغلاديش . في ٢٠٠٣/٠٢/٢١م
দলীল তাঁর মজবুত, জবাব হলো শুদ্ধ,
বিরোধিতা করবে কে? হৃদয় যার অসুস্থ।
(দস্তখত/ মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান)
চট্টগ্রাম। তারিখঃ ২১.০২.২০০৩ইং
--------------------------------------------------
الجواب صحيح و الفتواى صواب ان كان كذا.
توقيع / سيد محمد وصي الرحمن القادري
فقيه الجامعة الاحمدية السنية العالية،
شيتاغونغ. في ٢٠٠٣/٠١/٠٣م
জবাবটি বিশুদ্ধ ও ফাত্ওয়াটি সঠিক যদি ঘটনা তাই হয়
(দস্তখত /ছৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়র রহমান আলক্বাদেরী)
ফক্বীহ,
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা, চট্টগ্রাম
---------------------------------------------------
المجيب مصيب
توقيع / القاضي محمد معين الدين الاشرفي
شيخ الحديث للمدرسة السبحانية العالية،
شيتاغونغ. في ٢٠٠٣/٠٢/٠١م
জবাবদাতা সঠিক জবাবই দিয়েছেন।
(দস্তখত/কাজী মুহাম্মদ মঈন উদ্দীন আশরাফী)
শায়খুল হাদীস,
ছোবহানিয়া আলীয়া মাদরাসা, চট্টগ্রাম।
তারিখঃ ০১.০২.২০০৩ইং
---------------------------------------------------
ان كانت الواقعة هكذا فحكمها ما حرره
فضيلة المفتي المؤقر بضوء نصوص
الشرع المطهر.
توقيع /محمد عبد الواجد
فقيه الجامعة الاحمدية السنية العالية،
شيتاغونغ. في ٢٠٠٣/٠١/٠٢م
ঘটনা যদি বাস্তবিকই অনুরূপ হয়, তবে শ্রদ্ধাভাজন মুফতী সাহেবের জবাব পবিত্র শরীয়তের দলীলাদির আলোকে বিশুদ্ধ।
(দস্তখত/ মুহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ)
ফক্বীহ,
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা, চট্টগ্রাম
---------------------------------------------------
قد اجاد من اجاب
توقيع / محمد سليمان الانصاري
محدث الجامعة الاحمدية السنية العالية،
شيتاغونغ، في : ٢٠٠٢/١١/٢١م
উত্তরদাতা উন্নত মানের জবাব দিয়েছেন।
(দস্তখত / মুহাম্মদ সুলায়মান আনসারী)
মুহাদ্দিস,
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা, চট্টগ্রাম
তারিখঃ ২১.১১.২০০২ইং
---------------------------------------------------
شکے نیست لا ریب اندر جواب
اجاب المجیب کما فی الکتاب
امضاء / محمد عبد النور
نائب مدير الامين البارية، شيتاغونغ.
في ٢٠٠٣/٠١/١٢م
সন্দেহ বা সংশয় পাবে নাকো জবাবে,
দলীল মুফতীর মওজুদ আছে কিতাবে।
(দস্তখত/ মুহাম্মদ আবদুন নূর)
উপাধ্যক্ষ,
আল-আমীন বারিয়া সিনিয়র (ফাযিল) মাদরাসা, চট্টগ্রাম
---------------------------------------------------
الجواب صحيح و المجيب نجيح و خلافه قبيح
كتبة / الحافظ محمد اشرف الزمان القادري
محاضر الجامعة الاحمدية السنية العالية،
شيتاغونغ. في : ٢٠٠٣/٠١/١٨م
উত্তরটি বিশুদ্ধ, উত্তরদাতা সফলকাম ও এর বিরোধিতা করা গর্হিত কাজ।
(দস্তখত / হাফেজ মুহাম্মদ আশরাফুজ্জামান আলক্বাদেরী)
আরবী প্রভাষক,
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা, চট্টগ্রাম।
১৮.০১.২০০৩ইং
----------------------------------------------------
نعم المفتي في اصابة رأية
توقيع / محمد فضل الحق الاسلام آبادي
نائب مدير جامع العلوم مدرسة ايف كى،
العالية، بغهيرة ، راوجان، شيتاغونغ،
মুফতী সাহেব সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।
(দস্তখত/ মোহাম্মদ ফজলুল হক ইসলামাবাদী)
উপাধ্যক্ষ,
---------------------------------------------------
نعم المجيب في فتواء
توقيع / الحافظ القاضي عبد العليم الرضوي
مفسر الجامعة الاحمدية السنية العالية،
شيتاغونغ.
জবাবদাতার ফাত্ওয়াটা উত্তমই হয়েছে।
(দস্তখত/ হাফেজ কাজী আবদুল আলীম রেজভী)
মুফাসসির,
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা, চট্টগ্রাম
---------------------------------------------------
احسن الجواب هذا
توقيع / ابو القاسم نوري
محدث مدرسة أحسن العلوم الجامعة الغوثية
العالية شيتاغونغ. في ٢٠٠٣/٠١/٠٢م
সুন্দরতর জবাব এটাই।
(দস্তখত/ আবুল কাসেম নূরী)
মুহাদ্দিস,
আহছানুল উলুম জামেয়া গাউছিয়া মাদরাসা, চট্টগ্রাম
তারিখঃ ০২.০১.২০০৩ইং
---------------------------------------------------
الجواب صحيح الفتوى صواب
توقيع / محمد أمين الكريم
محاضر الجامعة الاحمدية السنية العالية-
شيتاغونغ. في ٢٠٠٣/٠١/١٢م
জবাব সঠিক, ফাত্ওয়া শুদ্ধ।
(দস্তখত/ মোহাম্মদ আমিনুল করীম)
আরবী প্রভাষক,
জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা, চট্টগ্রাম
তারিখঃ ১২.০১.২০০৩ইং
---------------------------------------------------
نعم المفتي في فتواه
توقيع / محمد جسيم الدين الرضوي
محاضر/ مدرسة دار الاسلام، راؤجان
شيتاغونغ.
মুফতী সাহেবের ফতোয়া উত্তম হয়েছে।
(দস্তখত / মুহাম্মদ জসীম উদ্দীন রজভী)
আরবী প্রভাষক,
রাউজান দারুল ইসলাম সিনিয়র (ফাযিল) মাদরাসা, চট্টগ্রাম।
----------------------------------------------------
نعم الجواب هذا
توقيع / محمد جشيم الدين القادري
محاضر / المدرسة الغوثية بنانوبور،
فتكشري، شيتاغونغ. ٢٠٠٣/٠١/٠٢م
সঠিক জবাব এটাই।
(দস্তখত/ মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন)
আরবী প্রভাষক,
নানুপুর, গাউছিয়া মাদরাসা, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম
----------------------------------------------------
মাওলানা মুহাম্মদ ইব্রাহীম আলকাদেরী
প্রধান মুহাদ্দিছ.গহিরা এফ, কে, জামেউল উলুম আলীয়া মাদ্রাসা।
ডাকঘরঃ গহিরা, রাউজান চট্টগ্রাম।
প্রেরকঃ (মাওলানা) মুহাম্মদ ইব্রাহিম আলকাদেরী
প্রধান মুহাদ্দিছ.গহিরা এফ, কে, জামেউল উলুম আলীয়া মাদ্রাসা।
চট্টগ্রাম শহরস্থ বাড়ী
ডাকঘর-জালালাবাদ
কুলগাঁও মাদ্রাসা সড়ক,
পাঁচলাইশ, চট্টগ্রাম।
প্রাপকঃ জনাব আলহাজ্ব মাওলানা জয়নুল আবেদীন জুবাইর।
মুহাদ্দিস, চট্টগ্রাম নেছারীয়া আলীয়া মাদ্রাসা।
বিষয়ঃ আপনার বক্তব্য সম্পর্কে অভিমত প্রদানের অনুরোধ প্রসঙ্গে।
আচ্ছালামু আলাইকুমঃ
জনাব,
বিগত ৫/৯/০২ ইং তারিখ হাটহাজারী থানাধীন ফরহাদাবাদ এলাকায় অনুষ্ঠিত মাহফিলে আপনার বক্তব্য সম্বলিত ক্যাসেট সহকারে লিখিতভাবে ফতোয়া তলব করা হয়েছে এবং নিম্নোক্ত বক্তব্যের আলোকে শরয়ী দলীল মোতাবেক বক্তার (ঈমান কুফরী) সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। যেই বক্তব্যের মধ্যে নবীর (দঃ) মানহানিসহ কতিপয় আপত্তিকর উক্তি রয়েছে মর্মে তারা অভিযোগ করেছে। সুতরাং এক্ষেত্রে বক্তার উদ্দেশ্য সহ একটা ব্যাখ্যা পাওয়া গেলে, বিষয়টি সহজে নিস্পত্তি করা যাবে মনে করতঃ আপনার খেদমতে পেশ করছি।
বক্তব্যঃ আমীরুল মু'মেনীন,খলিফাতুল মোসলেমীন হযরত ওমর ফারুক (রাঃ) সম্পর্কে আল্লাহর রাসুল (দঃ) দু'হাত তোলে আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন- "আল্লাহুম্মা আয়্যিদিল ইছলামা বে -ওমরাইন" আল্লাহ! দুই ওমরের এক ওমরকে দিয়ে ইসলামের সাহায্য করুন।" এখানে আল্লাহর রাসুলের (দঃ) অন্তরের নজর ছিল মুরব্বি ওমরের দিকে। কিন্তু আল্লাহ কবুল করলেন, জুনিয়র ওমরকে। আল্লাহ মুরব্বি ওমরকে সিনিয়র নেতা ওমরকে কবুল করলেন না। তরুণদের নেতা ওমরকে কবুল করেছেন।
উল্লেখিত বক্তব্যে কতিপয় আপত্তিকর উক্তি রয়েছে।যথা-
(১) আল্লাহ্ তাঁর রাসুলের (দঃ) দোয়া কবুল করলেন না। আল্লাহ কবুল করলেন, রসুলের (দঃ) দোয়ার বিপরীত ব্যক্তিকে।
(২) কোন্ ওমর ইসলাম কবুল করবেন, আল্লাহর নবীর (দঃ) অজানা ছিল। সুতরাং "ইলমে মা কানা ওয়ামা ইয়াকুন" (ইলমে গায়েব) এর বিষয়ে রাসুল (দঃ) জ্ঞাত নন্ বুঝানো হয়েছে।
(৩) আবু জাহালকে হযরত ওমর (রাঃ) এর উপর ফযিলত বা প্রাধান্য হয়েছে।
এমতাবস্থায় রাসুলের (দঃ) দোয়া কবুল না হওয়ার উপর আক্বীদাহ্ পোষন করা রাসুলের (দঃ) এলমকে যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে স্বীকার না করা এবং হযরত ওমর (রাঃ) এর উপর আবু জাহালকে প্রাধান্য দেয়া কুফরীর শামিল।
আপনার বক্তব্যের পক্ষে শরয়ী দলীলসহ নির্ভরযোগ্য উদ্ধৃতি জানালে আগত প্রশ্নের উত্তর দেয়া সহজ হবে বলে মনে করি।
পক্ষান্তরে বলা বাহুল্য যে, তিরমিজি শরীফ, ইবনে মাজা শরীফ, মোসতাদরাক ইত্যাদি হাদীছ গ্রন্থে বর্ণিত আছে যে, হুজুর (দঃ) ওমর বিন খাত্তাবের জন্যই দোয়া করেছেন। আল্লাহর কাছে ওমরই প্রিয় ছিলেন। দোয়া করার পরদিনই সকালে এসে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেছেন। আল্লাহ্ তা'য়ালা, রাসুলের (দঃ) দোয়া কবুল করার পক্ষে যথেষ্ট দলীল রয়েছে। হুজুর (দঃ) এর অন্তরের ইচ্ছা ও দৃষ্টির বিপরীত আল্লাহ্ কাজ করলেন, এমন কথা তো পাওয়া যাচ্ছে না। আপনার জানা থেকে লিখে জানালে বিভ্রান্তির অবসান ঘটবে।
(চলমান)
মাওলানা মুহাম্মদ ইব্রাহীম আলকাদেরী
প্রধান মুহাদ্দিছ.গহিরা এবং, কে, কে জামেউল উলুম আলীয়া মাদ্রাসা।
ডাকঘরঃ গহিরা, রাউজান, চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রাম শহরস্থ বাড়ী
ডাকঘর-জালালাবাদ
কুলগাঁও মাদ্রাসা সড়ক,
পাঁচলাইশ, চট্টগ্রাম।
লোকে বলে, "বে আহাদিল ওমরাইন"। আর আপনি পড়লেন - বেওমরাইন। এটা পড়তে ভুল হতে পারে। তবে হাদীছটা কোন্ হাদীছের কিতাবে বর্ণিত আছে, তাও জানালে খুশী হবো।
আল্লাহ্,রাসুল (দঃ) ও হযরত ওমরের (রাঃ) বিষয়ে এহেন মন্তব্য সত্যই দুঃখজনক। আপনার পক্ষ থেকে এটা সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত। তাই তাদেরকে জবাব দেয়ার বিষয়ে আপনার সহযোগিতা আমি আন্তরিকভাবে কামনা করি। আবু জাহাল বা ওমর বিন খাত্তাবের (রাঃ) জন্য যেখানে দোয়া করেছেন, সেখানে হুজুর (দঃ) সন্দেহের ভিত্তিতে উভয়ের নাম উল্লেখ করেননি। বরং আবু জাহালকে ভিন্ন করে দেয়ার লক্ষ্যেই তার নাম আবু জাহাল বলে আখ্যায়িত করেই দোয়া করেছেন।
আশা করি পত্র পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে লিখিত উত্তর ও ফতোয়া প্রদানের ক্ষেত্রে আন্তরিক সহযোগিতা পাবো।
সালামান্তে-
(মাওলানা) মুহাম্মদ ইব্রাহিম আল-কাদেরী
প্রধান মুহাদ্দিছ, গহিরা এফ, কে. জামেউল উলুম আলীয়া মাদ্রাসা।
গহিরা, রাউজান, চট্টগ্রাম।
মতামতের জন্য অবগতি কপি প্রেরিত..........
(১) অধ্যক্ষ আল্লামা মোছলেহ উদ্দীন- ছোবহানিয়া আলীয়া মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম।
(২) অধ্যক্ষ আল্লামা আজিজুল হক আলকাদেরী- ছিপাতলী আলীয়া মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম।
(৩) অধ্যক্ষ আল্লামা জালাল উদ্দীন আলকাদেরী-জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া, চট্টগ্রাম।
(৪) অধ্যক্ষ আল্লামা মুফতি ইদ্রিস রজভী-চরন্দীপ।
(৫) অধ্যক্ষ আল্লামা সাখাওয়াত হোসেন - নেছারিয়া আলীয়া মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম।
(৬) উপাধ্যক্ষ আল্লামা মুহাম্মদ ছগির ওচমানী-জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া, চট্টগ্রাম।
(৭) অধ্যক্ষ আল্লামা মোসলেহ উদ্দীন আহমদ মাদানী- নানুপুর গাউছিয়া মাদ্রাসা।
(৮) উপাধ্যক্ষ আল্লামা খাইরুল্লাহ, শাহচান্দ আউলিয়া আলীয়া মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম।
(৯) আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ-জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া, চট্টগ্রাম।
(১০) আল্লামা রফিক উদ্দীন ছিদ্দিকী - নেছারিয়া আলীয়া মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম।
_______________________
জয়নুল আবেদীন জুবাইরের ঈমান বিধ্বংসী কুফরি বক্তব্য। এটার জন্য তাকে মুরতাদ ফতোয়া দেয়া হয়েছে।
মুরতাদ জয়নাল আবেদীন জুবাইর দুই ওমরের কথা বলতে গিয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের শানে কটুক্তি ও কুফরী বক্তব্য।
জোবাইরের মাহফিলের সেই রেকর্ডকৃত ক্যাসেটের কুফরী বক্তব্যের রেকর্ডটি শুনতে এই YouTube link- এ যান-
https://youtu.be/38hr8hxmz2U
অথবা
এই Facebook page link-এ যান এবং শুনুন জোবাইরের সেই বক্তব্যটি।https://www.facebook.com/maqnoori17Official/videos/1202039143267700/
Comments
Post a Comment