গেয়ারভী শরীফের ইতিহাস
গেয়ারভী শরীফের ইতিহাস
টেক্সট্ রেডীঃ মুহাম্মদ আব্দুল খালেক
গেয়ারভী শরীফের ভিত্তি ও ইতিকথা
হাকীমুল উম্মত মুফতী আহমদ ইয়ার খান নঈমী গুজরাটী রহমাতুল্লাহি আলাইহি স্বীয় রচিত তাফসীর- আহছানুত তাফাসীর-সংক্ষেপে তাফসীরে নঈমীর প্রথম পারা সুরা বাক্বারা ২৭ নম্বর আয়াত পৃষ্ঠা ২৯৭ তে হযরত আদম আলাইহিস সালামের তাওবা প্রসঙ্গে সংক্ষেপে গেয়ারভী শরীফের ভিত্তি ও ইতিকথা লিপিবদ্ধ করেছেন। সেখানে তিনি প্রসিদ্ধ আম্বিয়ায়ে কেরাম আলাইহিমুস সালামগণের গেয়ারভী শরীফ পালনের ইতিকথা বর্ণনা করেছেন। নিম্নে তা উদ্ধৃত করা হলোঃ
(১) হযরত আদম আলাইহিস সালাম কর্তৃক গেয়ারভী শরীফ পালন
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত বিবি হাওয়া আলাইহাস সালাম বেহেস্ত হতে দুনিয়াতে নিক্ষিপ্ত হওয়ার পর আল্লাহর সান্নিধ্য ও স্বর্গসুখ হতে বঞ্চিত হওয়ার কারণে এবং নিজেদের সামান্য ভুলের অনুশোচনায় তিনশত বৎসর একাধারে কেঁদে কেঁদে বুক ভাসিয়েছিলেন এবং তাওবা করেছিলেন। তাঁদের প্রথম আমল ছিল অনুতাপ ও তাওবা।তাই আল্লাহর নিকট বান্দার তাওবা ও চোখের পানি অতি প্রিয়। তিনশত বৎসর পর আল্লাহর দয়া হলো। হযরত আদম আলাইহিস সালামের অন্তরে আল্লাহ তায়ালা কতিপয় তাওবার দোয়া গোপনে ঢেলে দিলেন। হযরত আদম আলাইহিস সালাম সে সব দোয়া করে অবশেষে আল্লাহর আরশে আল্লাহরই নামের পার্শ্বে লিখা নাম "মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ" (সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উছিলা ধরে ক্ষমা ভিক্ষা করলেন। আল্লাহ্ এতে খুশী হয়ে হযরত আদম আলাইহিস সালাম-এর তাওবা কবুল করলেন। ঐ দিনটি ছিল আশুরার দিন অর্থাৎ মুহররমের ১০ তারিখ রোজ শুক্রবার। এ মহাবিপদ থেকে মুক্তি পেয়ে হযরত আদম ও হযরত হাওয়া আলাইহিমাস সালাম ঐ রাতে অর্থাৎ ১১ই রাতে তাওবা কবুল ও বিপদ মুক্তির শুকরিয়া স্বরুপ মুযদালিফায় যে বিশেষ ইবাদত করেছিলেন-তারই নাম গেয়ারভী শরীফ।
(২) হযরত নূহ্ আলাইহিস সালাম মহা প্লাবনের সময় রজব মাসের ১০ তারিখ থেকে মুহররম মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত ছয় মাস ৭২ জন সঙ্গী নিয়ে কিস্তির মধ্যে ভাসমান ছিলেন। গাছ-গাছালী, পাহাড়-পর্বত সব কিছু ছিল পানির নীচে। অতঃপর আল্লাহর রহমতে ছয়মাস পর তাঁর নৌকা জুদী পাহাড়ের চূড়ায় এসে ঠেকলো। পানি কমে গেলে তিনি দুনিয়ায় নেমে আসেন। ঐ তারিখটিও ছিল আশুরার দিবস। তিনি এই মহাবিপদের মহামুক্তি উপলক্ষে সকলকে নিয়ে ১১ই রাত্রে শুকরিয়া স্বরুপ ইবাদত করেছিলেন। এটা ছিল হযরত নূহ নবী আলাইহিস সালামের গেয়ারভী শরীফ।
(৩) হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামকে কোন রকমেই তাঁর ইসলাম প্রচার থেকে বিরত করতে না পেরে এবং সকল বাহাছ-বিতর্কে পরাজিত ও নাস্তনাবুদ হয়ে অবশেষে জালেম বাদশাহ নমরুদ হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামকে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করলো। চল্লিশ দিন পর্যন্ত তাঁকে অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে রাখা হলো। আল্লাহর অসীম রহমতে আগুনের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেলো এবং অগ্নিকুণ্ড ফুল বাগিচায় পরিণত হলো। চল্লিশ দিন পর যেদিন হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম আগুন থেকে বের হয়ে আসলেন—সে দিনটিও ছিল আশুরার দিন। তিনি এই মহামুক্তির শুকরিয়া আদায় করলেন ১১ই রাত্রে। তাই এটা ছিল হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের গেয়ারভী শরীফ।
(৪) হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালাম আপন প্রিয়তম পুত্র হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালামকে হারিয়ে চল্লিশ বৎসর একাধারে কান্নারত ছিলেন। কোরআনে বর্ণিত বহু ঘটনার পর অবশেষে তিনি হারানো পুত্রকে ফিরে পেলেন এবং তাঁর অন্ধ চক্ষু হযরত ইউসুফের জামার বরকতে ফিরে পেলেন। এই দীর্ঘ বিপদ-মুক্তির দিনটিও ছিল আশুরার দিন। তিনি ঐ রাত্রে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলেন। এটা ছিল হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালামের গেয়ারভী শরীফ।
(৫) হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালাম আল্লাহর বিশেষ পরীক্ষা স্বরুপ দীর্ঘ আঠার বৎসর রোগ ভোগ করে অবশেষে সুস্থ হয়ে উঠলেন। তাঁর এই রোগমুক্তির দিনটিও ছিল আশুরার দিন। তিনি এই রোগমুক্তি ও ঈমানী পরীক্ষা পাশের শুকরিয়া স্বরুপ ১১ই রাত্রটি ইবাদতে কাটালেন। এটা ছিল হযরত আইউব আলাইহিস সালামের গেয়ারভী শরীফ।
(৬) হযরত মুছা আলাইহিস সালাম ও বণী ইসরাঈলকে মিশরের অধিপতি ফেরাউন বহু কষ্ট দিয়েছিল। নবীর সাথে তার বেয়াদবী যখন সীমা ছাড়িয়ে যায় এবং তার খোদায়ী দাবীর মেয়াদ ফুরিয়ে যায়, তখন আল্লাহর নির্দেশে হযরত মুছা আলাইহিস সালাম শিশুসহ বার লক্ষ বণী ইসরাইলকে নিয়ে মিশর ত্যাগ করেন। সামনে নীল নদ। আল্লাহর নির্দেশে তাঁর লাঠির আঘাতে নীলনদের পানি দ্বিখণ্ডিত হয়ে দু'দিকে পাহাড়ের মত দেয়াল স্বরূপ দাঁড়িয়ে যায় এবং বারটি শুকনো রাস্তা হয়ে যায়।প্রত্যেক রাস্তা দিয়ে একলক্ষ লোক তড়িৎ গতিতে অতিক্রম করে নদীর অপর তীরে এশিয়া ভূ-খন্ডে প্রবেশ করে। ফেরাউন তাঁদের পশ্চাদ্ধাবন করতে গিয়ে দু'দিকের পাহাড়সম পানির আঘাতে স্বসৈন্যে ডুবে মরে। হযরত মুছা আলাইহিস সালাম ও তাঁর সঙ্গীদের এই মহা মুক্তির দিনটিও ছিল আশুরার দিন। তিনি সঙ্গীসহ ১১ই রাত্র শুকরিয়া স্বরুপ আল্লাহর ইবাদতে নিমগ্ন থাকেন। এটা ছিল হযরত মুছা আলাইহিস সালামের গেয়ারভী শরীফ। নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনার ইহুদী জাতিকে আশুরার দিনে রোযা পালন করতে দেখেছেন। তাই উম্মতে মোহাম্মদির জন্য আশুরার রোযা রাখা নফল করে দিয়েছেন।
(৭) হযরত ইউনুস আলাইহিস সালাম দীর্ঘ চল্লিশ দিন পর মাছের পেট থেকে মোসেলের নাইনিওয়া নামক স্থানে মুক্তি পেয়েছিলেন। সেদিনটিও ছিল আশুরার দিন। তাই তিনি ঐ রাত্রে খোদার শুকরিয়া আদায় করেছিলেন খুব দুর্বল অবস্থায়। কাজেই এটা ছিল হযরত ইউনুস আলাইহিস সালামের গেয়ারভী শরীফ।
(৮) হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম একশ'তম বৈধ বিবাহের কারণে আল্লাহর ইঙ্গিতে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে সিজদায় পড়ে তাওবা করেন। আল্লাহ্ তাঁর তাওবা কবুল করে খুশী হয়ে যায়। ঐ দিনটিও ছিল আশুরার দিন। তাই তিনি ঐ রাত্রে শুকরিয়া আদায় করেন। এটা ছিল হযরত দাউদ আলাইহিস সালামের গেয়ারভী শরীফ।
(৯) হযরত সোলায়মান আলাইহিস সালাম একবার রাজ্য ও সিংহাসন হারা হয়েছিলেন। চল্লিশ দিন পর জ্বীন জাতি কর্তৃক লুকায়িত তাঁর হারানো আংটি ফেরত পেয়ে রাজ্য ও সিংহাসন উদ্ধার করেন এবং জ্বীন জাতিকে শাস্তি প্রদান করেন। সৌভাগ্যক্রমে ঐ রাত্রেই হারানো নেয়ামতটি ফেরত পাওয়ার শুকরিয়া আদায় করেন। এটা ছিল হযরত সোলায়মান আলাইহিস সালামের গেয়ারভী শরীফ।
(১০) হযরত ঈসা আলাইহিস সালামকে ইহুদী জাতি কখনও বরদাস্ত করতে পারেনি। ইহুদী রাজা হেরোডেটাস গুপ্তচর মারফত হযরত ঈসা আলাইহিস সালামকে গ্রেফতার করার ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু আল্লাহ্ পাক ঈসা আলাইহিস সালামকে জিবরাঈলের মাধ্যমে আকাশে তুলে নেন এবং ঐ গুপ্তচরের আকৃতি পরিবর্তন করে ঈসা আলাইহিস সালামের আকৃতির অনুরূপ করে দেন। অবশেষে ঈসা আলাইহিস সালামের শত্রুই ধৃত হয়ে শুলে বিদ্ধ হয়। হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের আকাশে উত্তোলনের দিনটিও ছিল আশুরার দিন। তিনি মহাবিপদ থেকে মুক্তি পেয়ে ঐ রাত্রে আকাশে খোদার শুকরিয়া আদায় করেন। এটাই হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের গেয়ারভী শরীফ।
(১১) নবী করিম রাউফুর রাহীম হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৬ষ্ঠ হিজরীতে চৌদ্দশত সাহাবায়ে কেরামকে সাথে নিয়ে ওমরাহ্ করার উদ্দেশ্যে মক্কা শরীফ রওয়ানা দেন। কিন্তু মক্কার অদূরে হোদায়বিয়ায় পৌঁছে মক্কার কোরাইশদের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হন। ১৯ দিন পর অবশেষে একটি চুক্তির মাধ্যমে তিনি সে বৎসর ওমরাহ্ না করেই মদিনার পথে ফিরতি যাত্রা করেন। সাহাবায়ে কেরাম এটাকে গ্লানি মনে করে মনক্ষুণ্ণ হলেও রাসুলে পাকের নির্দেশ নতশীরে মেনে নেন। মদিনার পথে কুরা গামীম নামক স্থানে পৌঁছে নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশ্রামের জন্য তাঁবু ফেলেন। ঐখানে সূরা আল-ফাতাহ্- এর প্রথম কয়েকটি আয়াত নাযিল হয়। এতে মনক্ষুণ্ণ সাহাবায়ে কেরামকে শান্তনা দিয়ে আল্লাহ্ তায়ালা তাঁর প্রিয় হাবীবকে লক্ষ্য করে বলেনঃ "হে রাসুল! আমি আপনার কারণেই হোদায়বিয়ার সন্ধিকে একটি মহান বিজয় হিসাবে দান করেছি। আপনার উছিলায়ই আপনার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের গুনাহ্ আল্লাহ্ মাফ করে দিবেন।"
যেদিন এই সুসংবাদবাহী আয়াত নাযিল হয়- সেদিনটিও ছিল মুহররম মাসের ১০ তারিখ।মহা বিজয় ও গুনাহ মাগফিরাতের সুসংবাদ শ্রবণ করে সাহাবায়ে কেরাম হোদায়বিয়া চুক্তির প্রকৃত রহস্য বুঝতে পারেন। নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরাম ঐ ১১ই রাত্র আল্লাহ্ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করে কাটিয়ে দেন। এটা ছিল হুযুর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের গেয়ারভী শরীফ।
এখানে সর্বসমেত ১১ জন নবীর গেয়ারভী শরীফের দলীল পেশ করা হলো। অন্যান্য নবীগণের ঘটনাবলী এবং কারবালার হৃদয় বিদারক ঘটনাও ১০ই মুহররম তারিখে সংঘটিত হয়েছিল। গেয়ারভী শরীফের তাৎপর্যের সাথে সঙ্গতি রেখেই মাত্র ১১টি ঘটনার উল্লেখ করা হলো।
হযরত গাউসুল আ'জম আবদুল কাদের জিলানী রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু কিভাবে নবীগণের এই গেয়ারভী শরীফ পেলেন?
গেয়ারভী শরীফ মূলত খতম ও দোয়া বিশেষ। হযরত গাউসুল আ'জম রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এর ইন্তিকাল দিবসকে উপলক্ষ করে প্রতি চান্দ্র মাসের ১১ই তারিখে রাতে বা দিনে গাউসে পাকের রূহে পাকে ইছালে ছাওয়াবের উদ্দেশ্যে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আলেম উলামা ও পীর মাশায়েখগণ উক্ত গেয়ারভী শরীফ বিশেষ নিয়মে খতমের মাধ্যমে পালন করে থাকেনা। হযরত গাউসুল আ'জম রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু কিভাবে এই গেয়ারভী শরীফ পেলেন— সে সম্পর্কে "মিলাদে শায়খে বরহক" বা "ফাজায়েলে গাউছিয়া" নামক কিতাবে বর্ণিত আছেঃ
"হযরত গাউসুল আ'জম আবদুল কাদের জিলানী রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু (৪৭১-৫৬১ হিজরী) নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বেলাদত উপলক্ষে প্রতি বৎসর ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখটি নিয়মিতভাবে ও ভক্তি সহকারে পালন করতেন। এক দিন স্বপ্নের মধ্যে নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাউসে পাককে বললেনঃ "আমার ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখকে তুমি যেভাবে সম্মান প্রদর্শন করে আসছো–এর বিনিময়ে আমি তোমাকে আম্বিয়ায়ে কেরামের গেয়ারভী শরীফ দান করলাম"— মীলাদে শায়খে বরহক।
হযরত গাউসুল আ'জমের তরিকাভূক্ত পীর মাশায়েখগণ এবং অন্যান্য তরিকার মাশায়েখগণও গাউসে পাকের অনুসরণে প্রতি চন্দ্র মাসের ১১ তারিখ রাত্রে বা দিনে বিশেষ নিয়মে এই গেয়ারভী শরীফ পালন করে থাকেন এবং কেয়ামত পর্যন্ত ইহা চালু থাকবে- ইনশাআল্লাহ।
গেয়ারভী শরীফের ফজীলত
'মিলাদে শাইখে বরহক্ব' বা 'ফজায়েলে গাউসিয়া' নামক কিতাবে বর্ণিত আছে যে, গেয়ারভী শরীফের ফজিলত অগণিত; যার বর্ণনা লিপিবদ্ধ করা সম্ভব নয়। তবে মুমিন মুসলমান বিশেষ করে গাউসে পাকের আশেকানের অবগতির জন্য কয়েকটি ফজিলত নিম্নে প্রদত্ত হল:
→ যে ব্যক্তি নিয়মিতভাবে প্রতি চাঁদের ১১ তারিখে গেয়ারভী শরীফ আদায় করবে সে অল্প দিনের মধ্যে ধনী ও স্বচ্ছল হবে এবং তার দারিদ্র্য দূর হবে।যে ব্যক্তি ওটাকে অস্বীকার বা ঘৃণা করবে সে দারিদ্রের মধ্যে থাকবে।
→ "তানাযযালুর রাহমাতু ইনদা যিকরিছ সোয়ালিহীন্'র বর্ণনা অনুযায়ী, গেয়ারভী শরীফ যেখানে পালিত হয় আল্লাহর রহমত সেখানে অবতীর্ণ হয়।
→বর্ণিত আছে যে, হযরত গাউসুল আ'জম রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু ১২ই রবিউল্ আউয়ালকে খুব গুরুত্ব সহকারে পালন করতেন। একদিন স্বপ্নে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন- "আমার বারই রবিউল্ আউয়ালের প্রতি তুমি যে সম্মান প্রদর্শন করে আসছ এর বিনিময়ে আমি তোমাকে গেয়ারভী শরীফ দান করলাম।"
→যে ব্যক্তি এটা পালন করবে সে খায়র ও বরকত লাভ করবে এবং পৃথিবীর পূর্ব হতে পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত এটা ক্বিয়ামত অবধি জারি থাকবে।
→যে ব্যক্তি সব সময় এটা পালন করবে সে বিপদ হতে রক্ষা পাবে; দুঃখ ও চিন্তামুক্ত হয়ে সুখ ও শান্তিতে জীবন যাপন করবে।
অতএব, অজুর সাথে জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে সম্মান সহকারে গেয়ারভী শরীফ পালন করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।
গেয়ারভী শরীফের খতমের নিয়মঃ
(বাংলা উচ্চারণটি অনুসরণযোগ্য)
প্রথমে দুরুদে তাজ পাঠ করবে। তারপর নিম্নের প্রত্যেক তছবিহ্ এগার বার করে পড়তে হবে।
দরুদে তাজ
বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আল্লাহুম্মা ছাল্লি আলা ছাইয়্যিদিনা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিন ছাহিবিত্ তাজি ওয়াল মি'রাজি ওয়াল বুরাক্বি ওয়াল আ'লাম। দাফিইল বালাঈ ওয়াল ওয়াবাঈ ওয়াল ক্বাহ্তি ওয়াল মারাদি ওয়াল আলাম। ইছ্মুহু মাকতুবুম মারফুউম মাশফুউম মানকুশুন্ ফিল লাওহি ওয়াল ক্বালাম। ছাইয়িদিল আরাবি ওয়াল আজাম। জিছ্মুহু মুক্বাদ্দাছুম্ মুআত্তারুম মোতাহ্হারুম মুনাও ওয়ারুন ফিল্ বাইতি ওয়াল হারাম। শামছিদ্দোহা বাদরিদ্দুজা, ছাদরিল উলা নূরিল হুদা, কাহ্ফিল ওয়ারা। মিছবাহিজ জুলামি্ জামীলিশ্ শিয়াম। শাফীইল উমাম ছাহিবিল জুদি ওয়াল কারাম্। ওয়াল্লাহু আছিমুহু, ওয়া জিবরীলু খাদিমুহু, ওয়াল বুরাক্বু মারকাবুহু, ওয়াল মি'রাজু ছাফারুহু, ওয়া ছিদরাতুল্ মুনতাহা মাক্বামুহু, ওয়া ক্বাবা ক্বাওছাইনি মাতলুবুহু, ওয়াল্ মাতলুবু মাক্বছুদুহু, ওয়াল মাউজুদুহ্। ছাইয়িদিল মুরছালীনা খাতামিন্ নাবিয়্যীন। শাফী'ইল মুজনিবীনা আনীছিল্ গারিবীন। রাহমাতিল্লিল আলামীনা রাহাতিল আশিক্বীন। মুরাদিল মুশতাক্বীনা শামছিল্ আরিফীন। ছিরাজিছ্ ছালিকীনা মিছবাহিল মুক্বাররাবীন। মুহিব্বিল ফুক্বারাঈ ওয়াল গুরাবাঈ ওয়াল্ মাছাকীন। ছাইয়িদিছ্ ছাক্বালাইনি নাবিয়্যিল হারামাঈন। ইমামিল ক্বিবলাতাইনি ওয়াছিলাতিনা ফিদ্দারাঈন। ছাহিবি ক্বাবা ক্বাউছাঈন। মাহবুবি রাব্বিল মাশরিক্বাইনি ওয়াল মাগরিবাঈন। জাদ্দিল হাছানি ওয়াল হোছাঈন। মাওলানা ওয়া মাওলাছ্ ছাক্বালাঈন। আবিল্ কাছিমি মুহাম্মদ ইবনি আবদিল্লাহ্। নূরিম্ মিন্ নূরিল্লাহ্। ইয়া আইউহাল্ মুশতাক্বুনা বিনুরি জামালিহী ছাল্লু আলাইহি ওয়া ছাল্লিমু তাছলীমা। (দুরূদ শরীফ)
১। বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহীম- ১১ বার
২। আছ্তাগফিরুল্লাহাল্লাজী লাইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ুম ওয়া আতুবু ইলাইহি- ১১ বার
৩। দরূদঃ আল্লাহুম্মা ছাল্লি আলা ছাইয়িদিনা মুহাম্মাদীন ওয়া আলা আলি ছাইয়িদিনা মুহাম্মাদীন ওয়া বারিক ওয়া ছাল্লিম- ১১
৪। ছুরায়ে ফাতেহাঃ আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন (পূর্ণ)- ১১ বার
৫। ছুরায়ে এখলাসঃ ক্বুল হুয়াল্লাহু আহাদ (পূর্ণ)- ১১ বার
৬। আচ্ছালাতু আচ্ছালামু আলাইকা ইয়া রাছুলাল্লাহ্- ১১ বার
৭। আচ্ছালাতু আচ্ছালামু আলাইকা ইয়া হাবিবাল্লাহ্- ১১ বার
৮। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্- ১১ বার
৯। ইল্লাল্লাহ্- ১১ বার
১০। আল্লাহো- ১১ বার
১১। আল্লাহু- ১১ বার
১২। হু আল্লাহ্- ১১ বার
১৩। হু- ১১ বার
১৪। হুয়াল্লাহুল্লাজী লা ইলাহা ইল্লাহু- ১১ বার
১৫। আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হু- ১১ বার
১৬। আন্ লা ইলাহা ইল্লা ল্লাহ্- ১১ বার
১৭। আনতাল হাদী আনতাল হক্ব লাইছাল হাদী ইল্লা হু- ১১ বার
১৮। হাছবী রাব্বী জাল্লাল্লাহ্- ১১ বার
১৯। মা-ফী ক্বালবী গাইরুল্লাহ্- ১১ বার
২০। নূর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহ্- ১১ বার
২১। লা মাবুদা ইল্লাল্লাহ্- ১১ বার
২২। লা মাওজুদা ইল্লাল্লাহ্- ১১ বার
২৩। লা মাকছুদা ইল্লাল্লাহ্- ১১ বার
২৪। হুয়াল মুছাব্বিরুল মূহীতু আল্লাহ্- ১১ বার
২৫। ইয়া হাইয়ু ইয়া কাইউম- ১১ বার
২৬। আচ্ছালাতু আচ্ছালামু আলাইকা ইয়া রাছুলাল্লাহ্- ১১ বার
২৭। আচ্ছালাতু আচ্ছালামু আলাইকা ইয়া হাবীবাল্লাহ্- ১১ বার
২৮। ইয়া শেখ ছোলতান ছাইয়েদ আব্দুল কাদের জিলানী শাইআন্ লিল্লাহ্- ১১ বার
২৯। দরূদঃ আল্লাহুম্মা ছাল্লি আলা ছাইয়িদিনা মুহাম্মাদীন ওয়া আলা আলি ছাইয়িদিনা মুহাম্মাদিন ওয়া বারিক ওয়া ছাল্লিম- ১১ বার
৩০। কাছিদায়ে গাউছিয়া শরীফ (পূর্ণ) বর্ণিত নিয়মে- ১ বার
৩১। মিলাদ শরীফ, জিকির- আজকার ও শাজরা শরীফ পাঠ (৫২ পৃষ্ঠায়)
৩২। আখেরী মুনাজাত ও নেয়াজ বিতরণ (৬৩ পৃষ্ঠায়)
আল কাছিদাতুল গাউছিয়া
(গাউসে পাকের অমর ঘোষণা)
"আলকাছিদাতুল গাউছিয়া"-হযরত গাউসে পাকের (রাঃ) অমর কাব্য গ্রন্থ। "আল্লাহ প্রেমের অমর প্রেমসূধা আকণ্ঠ পান" করার ঘোষণার মাধ্যমে এই কাছিদার শুরু এবং "আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ" হচ্ছে কাছিদার মধ্যম স্তর ও "চিরন্তনের রহস্য উদঘাটন" হচ্ছে পূর্ণতা স্তর বা কামালাতের স্তর। এই তিনটি স্তরকে সংক্ষেপে (১) 'প্রেমাবেশ-স্তর' (২) 'সাযুজ্য-স্তর' ও (৩) 'পূর্ণতার-স্তর' বলা হয়। স্রষ্টার সাথে মহামিলনের পরম সৌভাগ্য লাভ করলে এবং সৃষ্টি রহস্য উদঘাটিত হলে বান্দাকে বলা হয় ইনছানে কামেল। ইনছানে কামেলের সর্ব উচ্চ স্তরে রয়েছেন আমাদের প্রিয় নবী ও আল্লাহর প্রিয় মাহবুব হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা﴾ﷺ﴿। রাসূলে পাকের উছিলায় তাঁর উম্মতের অলীগণের মধ্যে এই মর্তবার ঝলক পেয়েছিলেন হযরত গাউসে পাক (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু)। কাছিদাতুল গাউছিয়ায় উক্ত তিনটি স্তরের নেয়ামত প্রাপ্তির স্বীকৃতি দিয়েছেন তাঁর এই অমর কাব্যে। অহঙ্কার বা গর্বনয়- বরং শোকরে নেয়ামত প্রকাশই মূল উদ্দেশ্য।
উপকারিতা
"আল কাছিদাতুল গাউছিয়া শরীফ" ৩১টি বয়েত বা পংক্তির সমষ্টি। তরিকত জগতের অলী আল্লাহ্গণ মহব্বতের সাথে এই কাছিদা গাউছিয়া শরীফ পাঠ ও আমল করে আসছেন। ক্বাদেরিয়া তরিক্বাপন্থী মুরিদগণ গেয়ারবী শরীফে উক্ত কাছিদা পাঠ করে মিলাদ শরীফের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত করেন। এছাড়াও জ্বীন বা ভূতের আছর হলে এই কাছিদা শরীফ পাঠ করে রোগীর উপর ফুঁক দিলে জ্বীন চলে যায় এবং রোগী আরোগ্য লাভ করে। নিম্নে কাছিদা গাউছিয়া শরীফের উপকারিতা উল্লেখ করা হলোঃ
১। সর্ব প্রকার বালা মুসিবত দূর হয়।
২। যে কোন সৎ উদ্দেশ্য পূরণ হয়।
৩। ব্যবসা বাণিজ্যে ও হালাল রুজীতে বরকত হয়।
৪। কঠিন রোগ নিরাময় হয়।
৫। নিয়মিত পাঠে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
৬। মনে এশকে এলাহী জাগরিত হয়।
৭। হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)–এর দীদার নসীব হয়।
৮। প্রতি পংতি পাঠের পূর্বে নিম্নোক্ত ছালাম পেশ করতে হয়।
আচ্ছালাম আয় নূরে চশমে আম্বিয়া,
আচ্ছালাম আয় বাদশাহে আউলিয়া।
اَلٛقَصِيٛدَةُ الٛغَوٛثِيَّةُ
আল কাসিদাতুল গাউছিয়া
بِسٛمِ اللّٰهِ الرَّحٛمٰنِ الرَّحِيٛمِ
আচ্ছালাম আয় নূরে চশমে আম্বিয়া,
আচ্ছালাম আয় বাদশাহে আউলিয়া।
(প্রতি কাসিদার ফাঁকে ফাঁকে পড়বে)
(١) سَقَانِی الٛحُبُّ كَاسَتِ الٛوِصَالِ
فَقُلٛتُ لِخَمٛرَتِیٛ نَحٛوِیٛ تَعَالٖ
উচ্চরণঃ
১। ছাক্বানিল হুব্বু কা'ছাতিল বিছালী,
ফা কুলতু লিখামরাতী নাহভী তা-আলী। আচ্ছালাম-----
কাব্যানুবাদঃ
পাত্রভরা মিলন সুরা পান- করালো আমায়,
কহিনু তাই মোর মদিরায় - "মোর পানে তুই আয়রে আয়"।
সরল অর্থঃ
আল্লাহর প্রেম আমাকে মিলন মদিরাপান করিয়েছে। আমি প্রেমের গভীরতায় অতৃপ্ত হয়ে প্রেমসূধাকে আহবান জানিয়ে বললাম- এসো, পাত্র ভরে ভরে আমাকে আরও পান করিয়ে যাও- আমাকে তৃপ্ত করো।
سَعَتٛ وَ مَشَتٛ لِنَحٛوِیٛ فِیٛ كُؤُوٛسٍ(٢)
فَهِمٛتُ بِسُكٛرَتِیٛ بَيٛنَ الٛمَوَالٖ
উচ্চারণঃ
২। ছাআত্ ওয়া মাশাত্ লিনাহভী ফি কুউছিন,
ফা-হিমতু বিছুকরাতী বাইনাল মাওয়ালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
ছুটলো বেগে, চললো সে যে- পাত্রে পাত্রে মোর পানে,
ঘুরিনু আমি নেশার ঘোরে- বন্ধুজনের মাঝখানে।
সরল অর্থঃ
সে প্রেমসূধা অফুরন্ত এসেছে। আমি পেয়ালার পর পেয়ালা পান করেছি। সে প্রেমসূধার মাদকতায় আমি বন্ধুমহলে ঘুরেছি ও বিশেষ মর্যাদা পেয়েছি।
(٣) فَقُلٛتُ لِسَائِرِ الٛاَقٛطَابِ لُمُّوٛا
بِحَالِیٛ وَادٛخُلُوٛا اَنٛتُمٛ رِجَالٖ
উচ্চারণঃ
৩। ফা-কুলতু লি-ছায়িরিল আক্বতাবি লুম্মু,
বি-হালি ওয়াদখুলু আনতুম্ রিজালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
কহিনু সব ক্বুতুবদেরে - "আমার হালে হাল মেশাও,
আমার ভক্তদলের মাঝে- তোমরা এসে শামিল হও"।
সরল অর্থঃ
দুনিয়ার সব অলী-আউলিয়া এবং কুতুবগণকে বললাম,
তোমরা সবাই আমার হালের সাথে হাল মিশায়ে আমার ভক্তদলে শামিল হয়ে যাও"।
(٤) وَ هَمُّوٛا وَاشٛرَبُوٛا اَنٛتُمٛ جُنُوٛدِیٛ
فَسَاقِی الٛقَوٛمِ بِاالٛوَافِیٛ مَلَالٖ
উচ্চারণঃ
৪। ওয়া হাম্মু ওয়াশরাবু আনতুম জুনুদী,
ফা-ছাক্বিল্ কাওমি বিল ওয়াফী মালালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
পূর্ণ করো আর পান করো হে- তোমরা যে সব মোর সেনানী,
দলের "সাকী" মোর তরে যে- ভরছে পুরো পাত্রখানী।
সরল অর্থঃ
তোমরা হিম্মত করে উচ্চাসীন হও এবং পাত্র ভরে প্রেমসূধা পান করো। কেননা, তোমরা তো (কুতুবগণ) আমারই বীর সেনানী। প্রেমাস্পদ সাকী পাত্র ভরে ভরে আমাকে প্রেমসূধা পান করাচ্ছেন আর বিভোর করে দিচ্ছেন।
(٥) شَرِبٛتُمٛ فُضٛلَتِیٛ مِنٛۢ بَعٛدِ سُكٛرِیٛ
وَلَا نِلٛتُمٛ عُلُوِّیٛ واتِّصَالٖ
উচ্চারণঃ
৫। শারিবতুম ফুদলাতী মিম বা'দী ছুকরী,
ওয়ালা নিলতুম্ উলুব্বী ওয়াত্তিছালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
আমার নেশা শেষ হলে পর- তার তলানী করলে পান,
তাই পেলেনা মর্যাদা মোর- মোর মিলনের এই-যে মান।
সরল অর্থঃ
আমি প্রেমসূধা পান করে আল্লাহ প্রেমের এত উচ্চ মার্গে উন্নীত হয়েছি যে, তোমরা (কুতুবগণ) আমার অবশিষ্ট উচ্ছিষ্ট পান করার সুযোগ পেয়েছো। কাজেই তোমরা আমার মাকাম ও মর্যাদায় পৌঁছতে পারনি।
(٦) مَقَامُكُمُا الٛعُلٰی جَمٛعًاوَّلٰكِنٛ
مَقَامِیٛ فَوٛقَكُمٛ مَازَالَ عَالٖ
উচ্চারণঃ
৬। মাক্বামুকুমুল উ'লা জামআওঁ ওয়ালাকিন,
মাক্বামী ফাওক্বাকুম্ মা-যালা আলী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
উচ্চাসনে তোমরা সবে- কিন্তু যে মোর আসনখানি,
তার চেয়েও উচ্চতর- গৌরবে তার নেইকো হানি।
সরল অর্থঃ
তোমাদের মর্যাদা যদিও উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত, কিন্তু আমার অক্ষয় আসন তার চেয়েও উর্ধ্বে।
(٧) اَنَا فِیٛ حَضٛرَةِ التَّقٛرِيٛبِ وَحٛدِیٛ
يُصَرِّفُنِیٛ وَحَسٛبِیٛ ذُو الٛجَلَالٖ
উচ্চারণঃ
৭। আনা ফি হাদরাতিত্ তাক্বরীবি ওয়াহ্দী
ইউছাররিফুনী ওয়া হাছবী জুল্-জালালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
আমি শুধু পেলাম তাঁহার - সাযুজ্যেরি সন্নিধান,
নিত্য তিনি চালান আমায় - "হাছবী" তিনি মহীয়ান।
সরল অর্থঃ
আমিই কেবল আল্লাহর সর্বোচ্চ নৈকট্য ও সান্নিধ্য লাভে ধন্য হয়েছি। এর অন্য কোন অংশীদার নেই। তিনিই আমাকে সর্বদা পরিচালনা করেন। মহা-মহিম আল্লাহ্ই আমার জন্য যথেষ্ট।
(٨) اَنَا الٛبَازِیُ اَشٛهَبُ كُلِّ شَيٛخٍ
وَمَنٛ ذَا فِی الرِّجَالِ اُعٛطٰی مِثَالٖ
উচ্চারণঃ
৮। আনাল বাজীয়ু আশহাবু কুল্লি শায়খিন,
ওয়া মান্ যা ফিররিজালি উ'তা মিছালী। আচ্ছালাম ------
কাব্যানুবাদঃ
আমি তেজী বাজপাখী এক-সকল শায়খের উপর সে তো,
মানবকুলে আর কে পেলো-আমার মত পাওয়া এতো?
সরল অর্থঃ
বেলায়াত গগনে নেতৃস্থানীয় অলীকুলের তুলনায় আমি সর্বোচ্চ উচ্চতায় উড়ন্ত বাজপাখি সদৃশ। আমার তুল্য মর্যাদা মানবকুলে কোন অলীকেই দান করা হয়নি।
(٩) كَسَانِیٛ خِلٛعَةًۢ بِطَرَازِ عَزٛمٍ
وَتَوَّجَنِیٛ بِتِيٛجَانِ الٛكَمَالٖ
উচ্চারণঃ
৯। কাছানী খিল্আতান্ বিতোয়ারাজি আযমিন,
ওয়া তাওয়্যাজানী বিতীজানিল কামালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
পরান তিনি "খেলাৎ" আমায় - দৃঢ় পনের দীপ্ত সাজ,
দিলেন তুলে আমার শীরে-পূর্ণতার এ স্বর্ণতাজ।
সরল অর্থঃ
আল্লাহপাক আমার দেহে এরাদা ও দৃঢ়তার ভূষণ পরিয়ে দিয়েছেন এবং কামালিয়াতের মুকুট আমার মাথায় পরিধান করিয়ে দিয়েছেন।
(١٠) وَاَطٛلَعَنِیٛ عَلٰی سِرٍّقَدِيٛمٍ
وَقَلَّدَنِیٛ وَاَعٛطَانِیٛ سُؤَالٖ
উচ্চারণঃ
১০। ওয়া আতলাআনী আলা ছিররিন ক্বাদীমিন,
ওয়া ক্বাল্লাদানী ওয়া আ'তানী ছুআলী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
নিত্যকালের গুপ্ত যাহা - আমায় তিনি তাই জানালেন,
কন্ঠে দিলেন মাল্যভূষা - সব চাওয়াই মোর পুরালেন।
সরল অর্থঃ
তিনি আমাকে চিরন্তনের গুঢ়তত্ত্ব জ্ঞাত করালেন এবং মর্যাদার কন্ঠহার পরিয়ে দিলেন। আমি তাঁর কাছে যা চেয়েছি, তিনি তা-ই আমাকে দান করেছেন।
(١١) وَوَلَّانِیٛ عَلَی الٛاَقٛطَابِ جَمٛعًا
فَحُكٛمِیٛ نَافِذٌ فِیٛ كُلِّ حَالٖ
উচ্চারণঃ
১১। ওয়া ওয়াল্লানী আলাল আক্বতাবি জাম্আন,
ফা হুকমী নাফিযুন ফি কুল্লি হালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
আর যে তিনি দিলেন মোরে- কুতুব দলের করে,
সব হালেতে হুকুম আমার- থাকলো জারি অতঃপরে।
সরল অর্থঃ
দুনিয়ার সকল অলী ও কুতুবগণের উপর তিনি আমাকে শাসক নিযুক্ত করেছেন। সুতরাং তাঁদের উপর আমার নির্দেশ সর্বদাই জারি ও কার্যকর থাকবে। উল্লেখ্যঃ প্রথমে গাউসেপাক "অলী" থেকে "কুতুবে" উন্নীত হয়েছেন। তারপর সর্বোচ্চ উড়ন্ত "বাজপাখি" এবং পরিণামে কুতুবগণের শাসক বা গাউসুল আ'জমে উন্নীত হয়েছিলেন। ইহাই এই কাসিদার মর্মার্থ।
(١٢) وَلَوٛاَلٛقَيٛتُ سِرِّیٛ فِیٛ بِحَارٍ
لَصَارَ الٛكُلُّ غَوٛرًا فِیٛ زَوَالٖ
উচ্চারণঃ
১২। ওয়া লাও আলক্বাইতু ছিররি ফি বিহারিন,
লা-ছারাল কুল্লু গাওরান ফি যাওয়ালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
আমার গোপন তত্ত্ব যদি - নিক্ষেপি ঐ সাগর জলে,
শুস্ক হবেই তারা সবে - নিঃশেষে ঐ ভূতল তলে।
সরল অর্থঃ
আমি যদি আমার প্রেমের গোপন রহস্য সমুদ্রে ছেড়ে দেই,
তাহলে সমুদ্রজল সব শুকিয়ে ভূতলে নিঃশেষ হয়ে যাবে। সমুদ্রজল আমার রহস্য ধারন করতে সক্ষম হবে না।
(١٣) وَلَوٛ اَلٛقَيٛتُ سِرِّیٛ فِیٛ جِبَالٍ
لَدُكَّتٛ وَاخٛتَفَتٛ بَيٛنَ الرِّمَالٖ
উচ্চারণঃ
১৩। ওয়া লাও আলক্বাইতু ছিররি ফি জিবালিন,
লা-দুক্কাত ওয়াখ্তাফাত্ বাইনার রিমালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
আমার গোপন তত্ত্ব যদি - নিক্ষেপি ঐ পাহাড় পানে,
চূর্ণ হবেই লুপ্ত হবে- বালিরাশির মধ্যিখানে।
সরল অর্থঃ
আমি যদি আমার প্রেমের গোপন রহস্য পর্বতসমূহে নিক্ষেপ করি, তাহলে তা চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে ধূলার ন্যায় উড়ে যাবে।
(١٤) وَلَوٛ اَلٛقَيٛتُ سِرِّیٛ فَوٛقَ نَارٍ
لَخَمَدَتٛ وَانٛطَفَتٛ مِنٛ سِرِّ حَالٖ
উচ্চারণঃ
১৪। ওয়ালাও আলক্বাইতু ছিররি ফাওক্বা নারিন,
লা খামাদাত্ ওয়ানতাফাত্ মিন্ ছিররি হালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
আমার গোপন তত্ত্ব যদি - নিক্ষেপি ঐ অগ্নিপানে,
নিভবেই সে, বিলীন হবে- আমার হালের গুপ্ত "শানে"।
সরল অর্থঃ
আমি যদি আমার গোপন প্রেম-তত্ত্ব আগুনের উপর নিক্ষেপ করি, তাহলে সে আগুন আমার গোপন রহস্যের প্রভাবে নিভে যাবে এবং তার দাহিকা শক্তি হারিয়ে ফেলবে।
(١٥) وَلَوٛ اَلٛقَيٛتُ سِرِّیٛ فَوٛقَ مَيٛتٍ
لَقَامَ بِقُدٛرَةِ الٛمَوٛلٰی تَعَالٖ
উচ্চারণঃ
১৫। ওয়া লাও আলক্বাইতু ছিররি ফাওক্বা মাইতিন,
লা-ক্বামা বিকুদরাতিল্ মাওলা তা'আলী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
আমার গোপন তত্ত্ব যদি মুর্দা 'পরে ছেড়ে,
মহা প্রভুর কুদরতে সে - ঠিক দাঁড়াবে জিন্দা হয়ে।
সরল অর্থঃ
যদি আমি আমার প্রেম রহস্য কোন মৃতের নিকট ব্যক্ত করি, তাহলে সে মহাপ্রভূর কুদরতে তৎক্ষণাৎ জিন্দা হয়ে উঠে দাঁড়াবে।
(١٦) وَمَا مِنهَا شُهُوٛرٌ اَوٛ دُهُوٛرٌ
تَمُرُّ وَتَنٛقَضِیٛ اِلَّا اَتَالٖ
উচ্চারণঃ
১৬। ওয়ামা মিনহা শুহুরুন আও দুহুরুন,
তামুররু ওয়া তানক্বাদী ইল্লা আতা লী। আচ্ছালাম ------
কাব্যানুবাদঃ
কালের মাঝে নেইতো কোনো-এমন মাস কি যুগ এমন,
হচ্ছে গত আর বিগত - আসেনা যে মোর সদন!
সরল অর্থঃ
অসীম কালের বুকে এমন কোন মাস বা যুগ গত হয় না, যা আমার কাছে আসেনা।
(١٧) وَتُخٛبِرُنِیٛ بِمَا يَأٛتِیٛ وَيَجٛرِیٛ
وَتُعٛلِمُنِیٛ فَاَقٛصِرٛ عَنٛ جِدَالٖ
উচ্চারণঃ
১৭। ওয়া তুখবিরুনী বিমা ইয়া'তী ওয়া ইয়াজরী,
ওয়া তু'লিমুনী ফা আকছির্ আন জিদালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
আমায় তারা যায় যে বলে - আসছে কী আর ঘটবে পরে,
মোর সাথে তাই তর্ক ছাড়ো - দূর তফাতে যাওরে সরে।
সরল অর্থঃ
ঐ মাসসমূহ ও যুগসমূহ বর্তমানে কি ঘটছে এবং ভবিষ্যতে কি ঘটবে, তা আমাকে বলে যায়। সুতরাং এ বিষয়ে আমার সাথে তর্ক ছাড়ো। অবনত মস্তকে মেনে নাও।
(١٨) مُرِيٛدِیٛ هِمٛ وَ طِبٛ وَاشٛطَحٛ وَ غَنِّ
وَافٛعَلٛ مَا تَشَاءُ فَالٛاِسٛمُ عَالٖ
উচ্চারণঃ
১৮। মুরিদী হীম্ ওয়া তীব্ ওয়াশতাহ্ ওয়া গান্নী,
ওয়া ইফ্আল মা তাশাউ ফাল্ ইছমু আলী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
মুরিদ আমার সাহস রাখো - তুষ্ট থাকো, ঘুরো, গাও,
নাম-যে আমার উচ্চ মহান - যেমন খুশী করে যাও।
সরল অর্থঃ
হে আমার মুরিদ! সাহস ও দৃঢ়তা অর্জন করো, আনন্দিত হও, নির্ভয়ে চলো এবং গুণগানে মত্ত থাকো। ইচ্ছা মাফিক নির্ভয়ে কাজ করে যাও। কেননা আমার নাম ও মর্যাদা অতি উচ্চ ও মহান। তোমরা তো আমারই মুরিদ।
(١٩) مُرِيٛدِیٛ لَاتَخَفٛ وَاشٍ فَاِنِّی
عَزُوٛمٌ قَاتِلٌ عِنٛدَ الٛقِتَالٖ
উচ্চারণঃ
১৯। মুরিদী লা তাখাফ্ ওয়াশিন্ ফা-ইন্নী,
আযুমুন্ ক্বাতিলুন্ ইনদাল্ ক্বিতালী।
কাব্যানুবাদঃ
মুরিদ আমার ভয় করো না - যত সে হোক কুৎসাগীর,
যুদ্ধকালে অটল আমি - হত্যাকারী যুদ্ধবীর।
সরল অর্থঃ
হে আমার মুরিদ! তুমি কুৎসা রটনাকারী ভীষণ শত্রুকেও ভয় করো না। কেননা, আমি দৃঢ়চেতা যুদ্ধবীর। যুদ্ধকালে আমি তাকে হত্যাকারী। আল্লাহর প্রেমের পথে হিংসাকারী ও কুৎসা রটনাকারীর জন্য আমিই যথেষ্ঠ। তোমাদের কোন চিন্তা নেই। নির্ভয়ে চলো।
(٢٠) مُرِيٛدِیٛ لَاتَخَفٛا اَللّٰهُ رَبِّیٛ
عَطَانِیٛ رِفٛعَةً نِلٛتُ الٛمَنَالٖ
উচ্চারণঃ
২০। মুরিদী লাতাখাফ্ আল্লাহু রাব্বী,
আতালী রিফ্আতান নিলতুল্ মানালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
মুরিদ আমার, ভয় করো না- আল্লাহ প্রতিপালক মম,
উর্দ্ধে আমায় দিলেন ঠাঁই- পেলাম পাওয়া উচ্চতম।
সরল অর্থঃ
হে আমার মুরিদ। তোমার কোন ভয় নেই। আল্লাহ্ আমার রব। তিনি অনুগ্রহ করে আমাকে অতি উচ্চমান দান করেছেন। আমি দুনিয়া ও আখেরাতের উচ্চতর নেয়ামত লাভ করেছি।
(٢١) طُبُوٛلِیٛ فِی السَّمَاءِ وَلٛاَرٛضِ دُقَّتٛ
وَشَاؤُسُ السَّعَادَةِ قَدٛ بَدَالٖ
উচ্চারণঃ
২১। তুবুলী ফিচ্ছামায়ি ওয়াল আরদি দুক্কাত্,
ওয়া শাউছুচ্ ছাআদাতি ক্বাদ্ বাদা-লী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
বাজিছেরে মোর দামামা- আসমানে আর ভূবন ভরে,
সৌভাগ্যেরই উচ্ছলতা - উঠলো ফুঠে আমার তরে।
সরল অর্থঃ
আসমান ও জমিনে আমার মর্যাদার ডঙ্কা বাজছে। সৌভাগ্য আর মর্যাদার উচ্ছলতা আমার আগে আগে চলছে।
(٢٢) بِلَادُ اللّٰهِ مُلٛكِیٛ تَحٛتَ حُكٛمِیٛ
وَوَقٛتِیٛ قَبٛلَ قَبٛلِیٛ قَدٛ صَفَالٖ
উচ্চারণঃ
২২। বিলাদুল্লাহি মুলকী তাহতা হুকমী,
ওয়া ওয়াক্তি ক্বাবলা ক্বাবলী ক্বাদ ছাফা-লী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
খোদার রাজ্য মুলুক্ আমার - মোর হুকুমের সব তাবেদার,
মোর জনমের পূর্ব থেকে - "সাফ" ছিল হাল্ মোর যামানার।
সরল অর্থঃ
আল্লাহর সমগ্র রাজ্য আমার মুলুক এবং আমারই হুকুমের অধীন। আমার জন্মের পূর্ব হতেই আমার হাল ও অবস্থা পরিস্ফুট ছিল। (দিন, সপ্তাহ, মাস, বৎসর - সূর্য সবকিছুই আমাকে সালাম করে এবং পরিক্রমা শুরু করে - বাহজাতুল আসরার)
(٢٣) نَظَرٛتُ اِلٰی بِلَادِ اللّٰهِ جَمٛعًا
كَخَرٛدَلَةٍ عَلٰی حُكٛمِ التِّصَالٖ
উচ্চারণঃ
২৩। নাজারতু ইলা বিলাদিল্লাহি জামআন্,
কাখারদালাতিন্ আলা হুকমিত্তিছালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
আল্লাহর এ যে নিখিল ধরা - ক্ষুদ্র হেরি সর্ষে সম,
মিলন ক্ষণের আবেশ বশে - যখন ক্ষেপি দৃষ্টি মম।
সরল অর্থঃ
আল্লাহর রাজ্যসমূহের প্রতি আমি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে দেখলাম- এটা আমার কাছে একটি ক্ষুদ্র সরিষার দানার মত মনে হচ্ছে। বারি বিন্দু সাগরে পতিত হয়ে যেমন সাগর রূপ ধারণ করে, বান্দাগণ তেমনি আল্লাহতে লীন হয়ে সব কিছুকে ক্ষুদ্র মনে করে।
(٢٤) دَرَسٛتُ الٛعِلٛمَ حَتّٰی صِرٛتُ قُطُبًا
وَنِلٛتُ السَّعٛدَ مِنٛ مَّوٛلَی الٛمَوَالٖ
উচ্চারণঃ
২৪। দারাছতুল ইলমা হাত্তা ছিরতো কুতুবান,
ওয়া নিলতুছ্ ছা'দা মিম্ মাওলাল মাওয়ালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
জ্ঞান সাধনায় মগ্ন ছিনু- তৎপরেতে "কুতুব" হলাম,
সকল প্রভুর প্রভু হতে - "খুশ্ নসিবীর" এ-দান পেলাম।
সরল অর্থঃ
"জাহেরী বাতেনী জ্ঞানার্জন করে আমি কুতুব হয়েছি। মহাপ্রভুর পক্ষ হতেই আমি এ সৌভাগ্য লাভ করেছি"। (পরে কুতুবগণের শাসক বা গাউসুল আ'জমে উন্নীত হয়েছি- ১১ নং কাসিদার)।
(٢٥) فَمَنٛ فِیٛ اَوٛلِيَاءِ اللّٰهِ مِثٛلِیٛ
وَمَنٛ فِیٛ الٛعِلٛمِ وَالتَّصٛرِيٛفِ حَالٖ
উচ্চারণঃ
২৫। ফামান ফি আউলিয়া ইল্লাহি মিছলী,
ওয়া মান্ ফিল্ ইলমি ওয়াত্ তাছরীফি হালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
আল্লাহ্ তায়ালার ওলী-কুলে- তূল্য কে আর আমার সনে?
আর কে এমন তত্ত্ব-জ্ঞানে? আর কে হালের নিয়ন্ত্রণে?
সরল অর্থঃ
"অলীকুলে কে আছে আমার সমকক্ষ? তত্ত্ব-জ্ঞানে ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতায় আমার সমকক্ষ দ্বিতীয় কে আছে? - নেই"। (সে জন্যই তিনি অলীকুল সম্রাট ও সব অলীদের নিয়ন্ত্রণকারী)।
(٢٦) وَكُلُّ وَلِیٍّ عَلٰی قَدَمٍ وَّاِنِّیٛ
عَلٰی قَدَمِ النَّبِیِّ بَدٛرِ الٛكَمَالٖ
উচ্চারণঃ
২৬। ওয়া কুল্লু অলিয়্যিন আলা ক্বাদামিন্ ওয়া ইন্নী,
আলা ক্বাদামিন্ নাবী বাদরিল কামালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
সব ওলী মোর পথে চলে - আর যে আমি চলছি ওরে,
কামালাতের পূর্ণ শশী - মোর নবীজির কদম পরে।
সরল অর্থঃ
"সকল অলীগণই আমার পদাঙ্ক অনুসারী, আর আমি হলাম পূর্ণ চন্দ্রের ন্যায় পরিপূর্ণ নবীজির পদাঙ্ক অনুসরণকারী"। (নবীজী হলেন আম্বিয়াদের সর্দার, আর গাউসেপাক (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) হলেন আউলিয়াদের সর্দার - লেখক)
(٢٧) كَذَا اِبٛنُ الرِّفَاعِیٛ كَانَ مِنِّیٛ
فَيَسٛلُكُ فِیٛ طَرِيٛقِیٛ وَاشٛتِغَالٖ
উচ্চারণঃ
২৭। কাজা ইবনুর রিফায়ী কানা মিন্নী,
ফা ইয়াছ্লুকু ফি তরিক্বী ওয়াশতিগালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
এই ভবেতে মোর দলেতে - ভূক্ত হলেন 'ইবনে রএফআঈ'
মোর তরিকায় চলেন তিনি - নেন্ মেনে মোর কর্মধারাই।
সরল অর্থঃ
"ইরাকের বিখ্যাত অলী সৈয়দ আহমদ ইবনে রেফায়ীও আমারই দলভুক্ত হয়ে আমাকে স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি আমারই তরিকা মতে এবং শোগল আশগালে আমার পথেই চলছেন"। (তিনি গাউসেপাকের ইন্তিকালের পরে ৫৬৪ হিজরী হতে ৫৭৮ হিজরী পর্যন্ত মোট ১৫ বৎসর গাউস পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন- লেখক)।
(٢٨) رِجَالٌ فِیٛ هَوَاجِرِهِمٛ صِيَامٌ
وَفِیٛ ظُلَمِ اللَّيَالِیٛ كَا للَّاٰلٖ
উচ্চারণঃ
২৮। রিজালুন্ ফি হাওয়াজিরিহিম্ ছিয়ামুন্,
ওয়া ফি জুলামিল লায়ালী কাল্ লাআলী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
গ্রীষ্ম তাপের তপ্ত দিনে - ভক্তেরা মোর "রোযা রাখে,
রাত্রে ওরা অন্ধকারে - মুক্তা সম জ্বলতে থাকে।
সরল অর্থঃ
আমার ভক্ত মুরিদগণের রিয়াজতের অবস্থা এই যে, তারা কঠিন গ্রীষ্মের খরতাপেও দিনের বেলায় রোজা পালন করতে কুণ্ঠিত হয় না এবং রাত্রের গভীর অন্ধকারেও তারা আল্লাহর ইবাদতে (তাহাজ্জুদ) মশগুল থাকে। এ কারণে তারা আধ্যাত্মিক জ্যোতি লাভ করে মুক্তার মত জ্বলতে থাকে।
(٢٩) اَنَا الٛحَسَنِیٛ وَالٛمَخٛدَعٛ مَقَامِیٛ
وَاَقٛدَامِیٛ عَلٰی عُنُقِالرِّجَالٖ
উচ্চারণঃ
২৯। আনাল্ হাছানী ওয়াল মাখ্দা মাক্বামী,
ওয়া আক্বদামী আলা উনুক্বির্ রিজালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
বংশে আমি "হাসানী" যে- মকাম আমার মাখ্দায়ায়,
সর্বজনের গ্রীবা পরে - কদম আমার আসন পায়।
সরল অর্থঃ
আমি সৈয়দ বংশজাত হাসানী। "মাখ্দা" আমার আধ্যাত্মিক মকাম। এ কারণেই আমার চরনযুগল সকল অলীর গ্রীবাদেশে। (ক্বাদামী হাজিহী আলা রাক্বাবাতি কুল্লি অলীয়্যিল্লাহ্)।
(٣٠) وَعَبٛدُ الٛقَادِرِ الٛمَشٛهُوٛرُ اِسٛمِیٛ
وَجَدِّیٛ صَاحِبُ الٛعَيٛنِ الٛكَمَالٖ
উচ্চারণঃ
৩০। ওয়া আব্দুল ক্বাদিরিল্ মাশহুরু ইছমী,
ওয়া জাদ্দী ছাহিবুল আইনিল্ কামালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
বিখ্যাত যে ভুবন মাঝে - আব্দুল কাদের নামটি আমার
মোর দাদাজী উৎস-ধারী - কামালাতের ঝর্ণাধারার।
সরল অর্থঃ
আমার প্রকাশ্য নাম আব্দুল কাদের। আমার প্রপিতামহ হচ্ছেন সমস্ত কামালতের উৎস ও ঝর্ণাধারা-হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।
(٣١) اَنَا الٛجِيٛلِیٛ مُحِیُ الدِّيٛنِ اِسٛمِیٛ
وَاَعٛلَامِیٛ عَلٰی رَأٛسِ الجِبَالٖ
উচ্চারণঃ
৩১। আনাল্ জিলী মুহিউদ্দীন ইচমি,
ওয়া আ'লামী আ'লা রা'ছিল জিবালী। আচ্ছালাম -----
কাব্যানুবাদঃ
আমি হলাম "জিলান" বাসী- মুহিয়ুদ্দীন খেতাব আমার,
উচ্চ গিরির চূড়ায় চূড়ায় - চিহ্ন শোভে মোর পতাকার।
সরল অর্থঃ
জিলান আমার জন্মভূমি। উপাধী আমার মুহিউদ্দীন। পর্বতের সর্বোচ্চ চূড়ায় আমার গৌরব ও মর্যাদার পতাকা উড্ডীয়মান।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ
১। জনাব মুহাম্মদ ফেরদাউস খান (কাব্যানুবাদে)
২। জনাব চৌধুরী নুরুল আজিম কাদেরী (সরল অর্থে)
খতমে গাউছিয়া শরীফ
উপকারিতাঃ
রোগ শোক, বিপদ, আপদ, বালা মুসিবত থেকে উদ্ধার ও রোজী রোজগারে বরকত, ব্যবসা বাণিজ্যে উন্নতি এবং দুনিয়া ও আখেরাতের আমলকৃত এ খতম অত্যন্ত বরকতময় এবং পরিক্ষীত।
নিয়ম ও তারতীব
১। দরূদে তাজঃ -১ বার (পৃষ্ঠা ১১ দেখুন)
২। আছতাগফিরুল্লাহাল্লাজী লা-ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইউমু ওয়া আতুবু ইলাইহি- ১ বার
৩। দরূদ শরীফঃ আল্লাহুম্মা ছাল্লি আলা ছাইয়িদিনা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা আলি ছাইয়িদিনা মুহাম্মাদিউ ওয়া বারিক ওয়া ছাল্লিম- ১১১ বার
৪। ছুরা ফাতিহাঃ -১১ বার
৫। ছুরা আলাম নাশরাহঃ (আলাম নাশরাহলাকা ছাদরাকা; ওয়া ওয়া দা'না আনকা বিজরাকাল্লাজী আনক্বাদা জাহরাকা; ওয়া রাফা'না লাকা জিকরাকা; ফাইন্না মাআল উছরি ইউছরান; ইন্না মাআল উছরি ইউছরা; ফা-ইজা ফারাগতা ফানছাব; ওয়া ইলা রাব্বিকা ফারগাব। -১১১ বার
৬। ছুরা ইখলাসঃ ক্কুল হুয়াল্লাহু আহাদ।
আল্লাহুছ ছামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ। ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু কুফুআন আহাদ। -১১১১ বার
৭। ছোবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লাইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার। ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজীম -৫৫৫ বার
৮। হাছবুনাল্লাহু ওয়া নি'মাল ওয়াকীল। নি'মাল মাওলা ওয়া নি'মাল নাছীর -৫৫৫ বার
৯। সূরা ফাতিহাঃ -১১ বার
১০। দরূদ শরীফঃ আল্লাহুম্মা ছাল্লি আলা ছাইয়িদিনা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলা আলি ছাইয়িদিনা মুহাম্মাদিউ ওয়া বারিক ওয়া ছাল্লিম -১১১ বার
১১। ছাহহিল ইয়া ইলাহী আলাইনা কুল্লা ছাবিম বিহুরমাতি ছাইয়িদিল আবরার -১১১ বার
১২। ইলাহী বিহুরমাতি হযরত খাজা শেখ ছুলতান ছাইয়িদ আব্দুল কাদির জিলানী রাদিয়াল্লাহু আনহু -১১১ বার
১৩। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন -১১১ বার
১৪। আল্লাহুম্মা আমীন -১১১ বার
১৫। ইয়া রাব্বাল আলামীন -১ বার
নিম্নের তিনটি তসবিহ অতিরিক্ত পাঠ করা উত্তম।
১। আছতাগ ফিরুল্লাহাল্লাজী লাইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইউল কাইয়ুম ওয়া আতুবু ইলাইহি -১১১ বার
২। ছোবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী ছোবহানাল্লাহিল আজীম ওয়া বিহামদিহী আছতাগ ফিরুল্লাহ -১১১ বার
৩। বিছমিল্লাহিল্লাজী লা ইয়াদুররু মা'আইমিহি শাইউন ফিল আরদি ওয়ালা ফিছ ছামায়ি ওয়া হুয়াছ ছামীউল আলীম -১১১ বার
শাজরা শরীফ পাঠ (মুনাজাত আকারে)
(সিলসিলা কাদেরিয়া ছিরিকোটিয়া)
১। ইয়া এলাহী আপনি জাতে কিবরিয়া কে ওয়াস্তে,
খোলদে দরওয়াজায়ে রহমত গদা কে ওয়াস্তে। আমিন
২। রাহমাতুল্লিল আলামীন খতমে রুছুল জানে জাহাঁ,
আহমদ ও হামেদ মুহাম্মদ মোস্তফা কে ওয়াস্তে। আমিন
৩। মুশকিলে আছান ফরমা রঞ্জ ও গম ছব দূর কর,
ছাহেবে জুদ ও ছখা শেরে খোদা কে ওয়াস্তে। আমিন
৪। নূরে চশমে ফাতেমা ইয়ানে হোছাইন ইবনে আলী,
ছাইয়েদুশ শোহাদা শহীদে কারবালা কে ওয়াস্তে। আমিন
৫। মাল ও দৌলত জাহের ও বাতেন আতা কর গায়ব ছে,
শাহে জয়নুল আবেদীন শময়ে হুদা কে ওয়াস্তে। আমিন
৬। হযরতে বাকের ইমামে আরেফীন ও কামেলীন,
জাফরোছ ছাদেক ও পেশোয়া কে ওয়াস্তে। আমিন
৭। উহ আমল ছারজাদ হো মুঝ ছে জিসমে হো তেরী রেজা,
মুছা কাজেম আওর শাহ মুছা রেজা কে ওয়াস্তে। আমিন
৮। হযরতে মারুফ কারখী ছাহেবে এলম ও আমল,
ছিররি উছ ছকতী ছেরাজে আউলিয়া কে ওয়াস্তে। আমিন
৯। রিজক ওয়াফের কর আতা মোহতাজ গায়রোকা না কর,
হযরতে জুনায়েদ ছবকে রাহনুমা কে ওয়াস্তে। আমিন
১০। খাজায়ে বু'বকর ইয়ানী জাফরুশ শিবলী অলী,
আবদে ওয়াহেদে তামিমী পারছা কে ওয়াস্তে।
১১। ফরহাতে দিল বখশ ইলমে মারেফাত ছে শাদ কর,
বুল ফারাহ তরতুছিয়ে বদরুদ্দোজা কে ওয়াস্তে। আমিন
১২। ক্বারশীয়ে হানক্বারীয়ে আউর মোবারক বু ছায়ীদ,
হো ছায়াদাত জাদে রাহ ইয়াওমে জায কে ওয়াস্তে। আমিন
১৩। ছাইয়েদ হাছানী হোছাইনী ইয়াজদাহ ইছমে আজীম,
আব্দুল কাদের বাদশাহে দোছরা কে ওয়াস্তে। আমিন
১৪। বে নেয়াজুমে মুঝে কর ছরফরাজ ও বে নেয়াজ,
শাহে জীলা মহিউদ্দিন কদমূল উলা কে ওয়াস্তে। আমিন
১৫। কেবলায়ে ওশশাক হযরত ছাইয়েদী আব্দুর রাজ্জাক,
খাজা বু ছালেহ নজর গাউছুল ওয়ারা কে ওয়াস্তে। আমিন
১৬। হযরতে ছাইয়েদ শেহাবুদ্দিন আহমদ জুল করম,
শরফুদ্দিন ইয়াহ্ইয়া বুজরগো পারছা কে ওয়াস্তে। আমিন
১৭। খাজা সৈয়দ সামছুদ্দীন মুহাম্মদ বা ওয়াকার,
শাহ আলাউদ্দিন আলীয়ে মাহলেকা কে ওয়াস্তে। আমিন
১৮। শাহে বদরুদ্দিন হোসাইন-আরেফে আকমল তরীন,
শরফুদ্দীন ইয়াহইয়ায়ে ফারুকে ছফা কে ওয়াস্তে। আমিন
১৯। খাজা ছৈয়দ শরফুদ্দীন ক্বাছেম বাক্বা বিল্লাহ মকাম,
ছৈয়দ আহমদ ছরগোরোহে আতক্বিয়া কে ওয়াস্তে। আমিন
২০। খাজা ছৈয়দ হোছাইনে-নূরে জানে আরেফাঁ,
ছৈয়দ আবদুল বাছেতে শাহ্ আছখিয়া কে ওয়াস্তে। আমিন
২১। ছৈয়দ আবদুল ক্বাদেরে ছানী অলীয়ে নামদার,
ছৈয়দে মাহমুদে ছাহেব বা হায়া কে ওয়াস্তে। আমিন
২২। ফানি ফিল্লাহ বাক্বী বিল্লাহ শাহে আব্দুল্লাহ্ অলী,
শাহ এনায়াতুল্লাহ্ ছাহেব বা ওয়াফা কে ওয়াস্তে। আমিন
২৩। হাফেজ আহমদ বারামূলী শায়খুনা আবদুছ ছবুর,
গুল মুহাম্মদ খাছ্ মাহবুবে খোদা কে ওয়াস্তে। আমিন
২৪। ওরফ্ হায় কাঙ্গাল আওর ছারী খোদায়ী হাথ মে,
এক নেগাহে মেহরে বছ্ হায় দোছরা কে ওয়াস্তে। আমিন
২৫। খাজা মুহাম্মদ রফিক, আলেমে এলমে খোদা,
শেখে আবদুল্লাহ্ অলিয়ে বা ছফা কে ওয়াস্তে। আমিন
২৬। শাহ মুহাম্মদ আন্ওয়ারে শায়খে আকাবের নূর ও নূর,
আঁ শাহে এয়াকুব মুহাম্মদ জুল্ আতা কে ওয়াস্তে। আমিন
২৭। কুতবে আলম গাউছে দওরাঁ আবদুর রহমান চৌহরভী,
উনকা ছদক্বা হাত উঠাতা হোঁ দোয়া কে ওয়াস্তে। আমিন
২৮। মাফ করদে আয় খোদায়ে দোজাহাঁ মেরে গুনাহ,
ছৈয়দ আহমদ শাহে কুতুবুল আউলিয়া কে ওয়াস্তে। আমিন
২৯। পাক্ তীনত্ পাক্ বাতেন পাক্ দিল করদে মুঝে,
হযরতে তৈয়্যব শাহে শাহ্ ও গদা কে ওয়াস্তে। আমিন
৩০। জিসমে তাহের ক্বলবে তাহের রুহে তাহের দে মুঝে,
হযরতে শাহ্ পীরে তাহের বা - খোদা কে ওয়াস্তে। আমিন
৩১। জিছনে ইয়ে শাজরা ছুনা,
বখ্শ্ দে ছবকো তু জুমলা পেশোয়া কে ওয়াস্তে। আমিন
ইয়া এলাহী .........................
মিলাদ ও কিয়াম
আউযু বিল্লাহি মিনাশশাইতানির রাজিম।
বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
লাকাদ জাআকুম রাছুলুম মিন আনফুছিকুম আজিজুন আলাইহি মাআনিত্তুম হারিছুন আলাইকুম বিল মুমিনিনা রাউফুর রাহিম। ওয়া ক্বালাল্লাহু তায়ালা ফি শানি হাবীবিহী ওয়া মাহবুবিহী ও মাসুকিহি মুখবিরাও ওয়া আমিরা। ইন্নাল্লাহা ওয়া মালায়িকাতাহু ইউছাল্লুনা আলান নাবিয়্যি। ইয়া আইয়্যুহাল্লাজিনা আমানু ছাল্লু আলাইহি ওয়া ছাল্লিমু তাছলিমা।
বাংলা দরূদ শরীফঃ (সকলে মিলে)
আল্লাহুম্মা ছাল্লে আলা ছাইয়েদেনা মাওলানা মুহাম্মদ ওয়াআলা আলি ছাইয়েদেনা মাওলানা মুহাম্মদ।
০১। প্রেমাগুণে জ্বলে মরি, ওহে খোদা রাব্বানা।।
আমি যার প্রেমের পাগল, সে তো সোনার মদিনা।। ঐ
০২। ওগো খোদা দয়া কর, নছিব কর মদিনা।।
নবীজীকে না দেখাইয়া, কবরেতে নিওনা।। ঐ
০৩। কোথায় রইলেন দয়াল নবীজী, আমাদেরকে ছাড়িয়া।।
আপনার এতিম উম্মত কান্দে, নবী নবী বলিয়া।। ঐ
০৪। কোথায় রইলেন দয়াল নবীজী, আমাদেরকে ছাড়িয়া।।
আপনি বিনে কি লাভ হবে, এই ধরাতে বাঁচিয়া।। ঐ
০৫। মদিনা মদিনা বলে, কান্দি আমি জারজার-
দেখা দেন গো দয়াল নবী, ডাকি আপনায় বারেবার।। ঐ
০৬। মদিনা মদিনা বলে, কান্দে মন পাপিয়া।।
মদিনা নামের তছবিহ, ফিরি গলে লইয়া।। ঐ
০৭। আমরা সবাই অধম পাপী, আপনাকেতো চিনলাম না-
সেই কারণে রোজ হাশরে, আমাদেরকে ভুইলেন না।। ঐ
০৮। মদিনাতে শুয়ে আপনি, মোদের সালাম শুনতে পান-
কেমনে যাব মদিনাতে, সে পথ আমায় বলে দেন।। ঐ
০৯। মন কে কাবা বানাইয়া, দিলকে বানাও মদিনা-
দিলের আয়নায় দিবেন দেখা, নূর নবী মোস্তফা।। ঐ
লুরীঃ
আল্লাহ্ আল্লাহ্ আল্লাহু- লাইলাহা ইল্লা হু (২ বার)।
০১। আপনার তরে পয়দা হলো তামাম সংসার-
কে আছে আর আপনার মত দুনিয়ার মাঝার-নবীজী। ঐ
০২। মেরাজেতে গেলেন আপনি, বোরাকে সাওয়ার-
বিনা পর্দায় লা মকানে মা'বুদের দীদার-নবীজী।। ঐ
০৩। কাউছারের মালিক আপনি, নবীদের ছরদার-
রোজ হাশরে পিলাইবেন হাউজে কাউছার-নবীজী।। ঐ
০৪। আপনাকে দেখলে একবার, দোজখ হয় হারাম-
দয়া করে দিবেন দেখা, স্বপনে আমার-নবীজী।। ঐ
০৫। মউতের তুফান আসবে যখন, নবীগো আমার-
দুই নয়নে দেখি যেন চেহরায়ে আনোয়ার-নবীজী। ঐ
০৬। গুনাহ্গারের গুনাহ্ ঝরে, দরদে আপনার-
দয়া করে কবুল করেন, দরূদ আমার-নবীজী। ঐ
০৭। গুনাহ্গারের মুক্তিদাতা, হাবীব আল্লাহর-
তাঁর উপরে পড় দরূদ, হাজার হাজার-নবীজী। ঐ
০৮। পাপী-তাপী তরাইতে নবী-আসলেন এ ধরায়,
আসুন সবে দাঁড়াইয়া ছালাম জানাই-নবীজী।। ঐ
(সবাই উঠে দাঁড়িয়ে কিয়াম-এর কাসিদা পাঠ করতে হবে)
কিয়ামের কাসিদা (বাংলা)
ইয়ানবী সালাম আলাইকা-ইয়া রাসুল সালাম আলাইকা!
ইয়া হাবীব ছালাম আলাইকা-ছালাওয়াতুল্লাহ্ আলাইকা।
০১। তুমি যে নূরের রবি-নিখিলের ধ্যানের ছবি।
তুমি না এলে দুনিয়ায়- আঁধারে ডুবিত সবি!! -ইয়ানবী
০২। তোমারি নূরের আলোকে জাগরণ এলো ভূলোকে
গাহিয়া উঠিল বুলবুল- হাসিল কুসুম পুলকে!! -ইয়ানবী
০৩। চাঁদ সুরুজ আকাশে আসে- সে আলোয় হৃদয় না হাসে।
এলে তাই হে নব রবি- মানবের হৃদয় আকাশে!! -ইয়ানবী
০৪। নবী না হয়ে দুনিয়ার- না হয়ে ফেরেস্তা খোদার!
হয়েছি উম্মত তোমার- তার তরে শোকর হাজার বার!! -ইয়ানবী
০৫। হে রাসুল ছালাম হাজার বার- মোরা যে উম্মত গুনাহ্গার।
কে আছে মোদের তরাবার- হাশরে ভরসা আপনার!! -ইয়ানবী
০৬। হে রাসুল মদিনা হইতে- সব কিছু পারেন দেখিতে।
মোদের লাশ কবরে রাখিলে- লইবেন আপন কোলে!! -ইয়ানবী
০৭। দোজখে পাপীরে দিলে- আপনার দীদার পেলে!
তখন কি দোজখ রবএ- দোজখ যে জান্নাত হবে!! -ইয়ানবী
বাংলা কাসিদার পর - লাখো ছালাম
মোস্তফা জানে রহমত পে লাখো ছালাম!
শাময়ে বজমে হেদায়াত পে লাখো ছালাম!!
০১। মেহরে চরখে নবুয়্যত পে রৌশন দরূদ!
গুলে বাগে রিছালাত পে লাখো ছালাম!! - মোস্তফা
০২। জিছ্ ছোহানী ঘড়ি চমকা তায়বা কা চাঁদ!
উছ্ দিল্ আফরোজে চা'আত পে লাখো ছালাম!! - মোস্তফা
০৩। জিনকে সেজদে কো মেহরাবে কাবা ঝুকি!
উন্ ভউ কি লাতাফাত পে লাখো ছালাম!! - মোস্তফা
০৪। খালেক নে আপনে নূর ছে মাহবুব কা নূর বানায়া!
উছি নূরে মুহাম্মদী পে লাখো ছালাম!! - মোস্তফা
০৫। আরশ ছে জেয়াদা রোতবা-রওজা রাছুলুল্লাহ্ কা!
উছি রওজায়ে আন্ওয়ার পে লাখো ছালাম!! - মোস্তফা
০৬। শবে আছরা কে দুলা পে দায়েম দরূদ!
নওশায়ে বজ্মে জান্নাত পে লাখো ছালাম!! - মোস্তফা
০৭। কিছকো দেখা ইয়ে মুছা ছে পূছে কুই!
আখোঁ ওয়ালো কি হিম্মত পে লাখো ছালাম!! - মোস্তফা
০৮। ছাইয়িদা ফাতেমা জওজায়ে মুর্তজা!
ইয়ানে খাতুনে জান্নাত পে লাখো ছালাম!! - মোস্তফা
০৯। শহীদে কারবালা হুছাইনে মুজতবা
বে-কছে দশত গোরবত পে লাখো ছালাম!! - মোস্তফা
১০। গাউছে আজম ইমামুত তুক্কা ওয়ান নুক্কা!
জালওয়ায়ে শানে কুদরত পে লাখো ছালাম!! - মোস্তফা
১১। ছানজারী আজমিরী খাজা গরীবে নাওয়াজ!
উছ্ মুঈনুদ্দিন ও মিল্লাত পে লাখো ছালাম!! - মোস্তফা
১২। নকশায়ে নকশে বন্দ খাজা বাহাউদ্দিন!
আওর মুজাদ্দেদে আলফেছানি পে লাখো ছালাম!! - মোস্তফা
১৩। কামেলানে ত্বরিকত পে- কামেল দরূদ!
হামেলানে শরীয়ত পে লাখো ছালাম!! - মোস্তফা
১৪। ছাইয়িদী হযরতে কেবলা আহমদ রেজা!
ইমামে আহলে ছুন্নাত পে লাখো ছালাম!! - মোস্তফা
১৫। ডাল দি কলব্ মে আজমতে মোস্তফা!
হেকমতে আ'লা হযরত পে লাখো ছালাম!! - মোস্তফা
১৬। বে হিছাব ও কিতাব ও আজাব ও ইতাব!
তা আবাদ্ আহলে ছুন্নাত পে লাখো ছালাম!! - মোস্তফা
মদিনে কে চাঁদ হাজারো ছালাম........................ বেহদ ছালাম।
মুনাজাত
হে আল্লাহ! হে রহমানু, হে রহীম। আমরা এতক্ষণ তোমার হাবীবের শানে মিলাদ ও কিয়াম করেছি। সালাত ও সালাম পাঠ করেছি। আয়োজনকরী ও উপস্থিত সকলের পক্ষ হতে তুমি মেহেরবানী করে এই পবিত্র মিলাদ মাহফিলকে কবুল ও মঞ্জুর করে নাও। হে আল্লাহ! আমরা তোমার রহমতের ভিখারী। তুমি দাতা। ভিখারী ঘরের দরজায় এসে প্রথমে মালিকের প্রিয় সন্তানাদির জন্য দোয়া করে পরে ভিক্ষা চায়। পিতা-মাতার মনে ভিখারীর প্রতি স্নেহের উদ্রেক হয়। তারা ভিখারীকে খালী হাতে বিদায় দিতে পারে না। তোমার শাহী দরবারে রহমতের ভিক্ষা চাওয়ার পূর্বে তোমার প্রিয় হাবীবের গুণগান করেছি। দরূদ ও সালাম আরজ করেছি। তুমি ওয়াদা করেছো- তোমার হাবীবকে একবার সালাত ও সালাম জানালে তুমি তার উপর দশবার রহমত নাজিল কর। হে মাওলা! আমরা তোমার হাবীবের উছিলায় তোমার রহমত চাই। তুমি আমাদেরকে বঞ্চিত করোনা মাওলা!
হে আল্লাহ আজকের মিলাদ শরীফের সওয়াব সর্বপ্রথম তোমার প্রিয় হাবীবের খেদমতে পৌঁছিয়ে দাও। তাঁর আহলে বাইত, আজওয়াজে মোতাহহারাত, সাহাবায়ে কেরাম, খোলাফায়ে রাশেদীন ও শহীদানে কারবালার রুহে পাকে মিলাদ শরীফের হাদিয়া পৌঁছিয়ে দাও। চার মাজহাবের চার ইমাম, চার তরিকার চার ইমাম এবং তামাম বুজুর্গানে দ্বীন ও সলফে সালেহীনের রূহে পাকে এর সওয়াব বখ্শীষ করে দাও। আমাদের পিতা-মাতা, ওস্তাদ, পীর-মুর্শেদ, দাদা-দাদী, নানা-নানী, ময়-মুরুব্বী ও আত্মীয়-স্বজনদের রুহে পাকে এই মিলাদ শরীফের সওয়াব রেছানী করে দাও। খাছ করে এই মাহফিলের আয়োজনকারীদের পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের রুহে পাকে এর সওয়াব পৌঁছিয়ে দাও। হে আল্লাহ! তুমি মেহেরবানী করে আমাদের গুনাহ খাতা মাফ করে নেক কাজ করার তৌফিক দাও। রুজী-রোজগারে বরকত দাও। বালামুসিবত দূর করে দাও। খাতেমা বিল খায়ের নসিব কর। মউতের সময় নবী করিম (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) - এর জামালে মোবারক দেখাইও। হাশরের দিনে তাঁর শাফায়াত আমাদের সকলকে নসিব করিও। ওয়া সাল্লাল্লাহু আলা খাইরে খালকিহি ওয়া নূরে আরশিহি সাইয়িদিনা মুহাম্মদিও ওয়া আলিহী ওয়া আসহাবিহী আজমাইন। আমীন! বিহক্বে লাইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।
---------- সমাপ্ত ----------
__________________
Comments
Post a Comment