খারেজি সম্প্রদায়ের উৎপত্তি
খারেজি সম্প্রদায়ের উৎপত্তি
রচনা, সংকলন ও সম্পাদনা
মুহাম্মদ আনোয়ার মাহমুদ
ও
ইশরাত জাহান
টেক্সট রেডীঃ মুহাম্মদ আব্দুল খালেক
প্রকাশকাল
প্রথম মুদ্রণ : জানুয়ারি, ২০০৩
পরিমার্জিত সংস্করণ : নভেম্বর, ২০০৯
পুনর্মুদ্রণ : আগস্ট, ২০১৮
অধ্যাপক পি. কে. হিট্টির মতে খারেজিরা হলেন ইসলামের প্রাচীনতম ধর্মীয় রাজনৈতিক সম্প্রদায় আরবি "খারাজ"। এই ক্রিয়াটি হতে খারেজি এই বিশেষ্য পদটি উদ্ভুত। "খারেজি" শব্দের অর্থ দলত্যাগী। দুমাতুল জন্দলের প্রতারণাপূর্ণ রায়কে অমান্য করে হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) এর সমর্থক ১২ হাজার সৈন্য দলত্যাগ করে হারুরা নামক গ্রামে যেয়ে মিলিত হয়েছিল। তারা মানুষের বিচার মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এ আওয়াজ তুলে যে, "লা হুকুমাহ ইল্লা লিল্লাহ" অর্থাৎ আল্লাহর আইন ছাড়া কোনো আইন নেই। তাই সিফফীনের যুদ্ধের পর দুমাতুল জন্দলের সালিসের রায়কে অমান্য করে যে দলটি হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) এর পক্ষ ত্যাগ করে তাদেরকে ইতিহাসে খারেজি বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। তারা দল ত্যাগ করে হারুরা নামক গ্রামে মিলিত হয়েছিল বলে হারুরীয়া এবং আল্লাহর হুকুমের প্রবক্তা ছিলেন বলে "মুহাককিমা" নামেও পরিচিত।
খারেজি আন্দোলনের সূচনাঃ নাহরাওয়ানের যুদ্ধ (৬৫৯ খ্রিঃ)
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু)-এর পক্ষ বর্জন করে খারেজিরা আব্দুল্লাহ ইবনে ওহাবকে তাদের নেতা নির্বাচন করে এবং তার নেতৃত্বে নাহরাওয়ানে শিবির স্থাপন করে। সালিসের সিদ্ধান্ত যখন হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) এর বিরুদ্ধে যায়, তখন তারা হযরত আলীকে যুদ্ধ ঘোষণা করতে অনুরোধ জানায়। হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) তাদের কথায় রাজি না হওয়ায় তারা খারেজিদের দলে যোগদান করে। হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) খারেজিদের আন্দোলনের সংবাদ পেয়ে নাহরাওয়ানের দিকে অগ্রসর হয়ে তাদেরকে পরাজিত করেন (৬৫৯ খ্রিঃ)। কিন্তু নহরাওয়ানের যুদ্ধে খারেজি আন্দোলনের চূড়ান্ত অবসান ঘটেনি। তারা রাজ্যের সর্বত্র গোলযোগের বীজ ছড়িয়ে দেয়।
খারেজিদের মতবাদ
রাজনৈতিক মতবাদঃ
খারেজিরা পূর্ণ গণতান্ত্রিক নীতির দ্বারা চালিত হত। তাদের মতে, খলিফাকে গোটা মুসলিম সমাজ কর্তৃক নির্বাচিত হতে হবে। প্রয়োজনবোধে অযোগ্য খলিফাকে অপসারণ করে যোগ্যতর ব্যক্তিকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করতে হবে। খলিফার পদ কোনো গোত্র বা পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। যোগ্য ব্যক্তি হলে যেকোনো মুসলমান, খলিফা পদে নির্বাচিত হতে পারবেন। যোগ্যতাই খলিফা নির্বাচনের মাপকাঠি, তবে তাঁকে খাঁটি বা প্রকৃত মুসলমান হতে হবে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করত যে, শরীয়া হতে অভিজ্ঞ জনসাধারণ ঐশী আইন কার্যে প্রয়োগ করতে সমর্থ হলে ইমাম বা খলিফার কোনো প্রয়োজন নেই। খারেজিরা হযরত আবু বকর (রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু) ও হযরত উমরকে আইনসঙ্গত খলিফা এবং অন্যান্য খলিফাকে অবৈধ দখলকারী মনে করত।
ধর্মীয় মতবাদঃ
খারেজিদের মতবাদ অনুযায়ী যে মুসলমান নিয়মিত নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় কর্তব্য পালন করে না, সে কাফেরদের সমপর্যায়ভুক্ত বা ধর্মদ্রোহী এবং তাকে ধর্মদ্রোহিতার জন্য পরিবারবর্গসহ হত্যা করা কর্তব্য। এরূপ লোক খলিফা বা ইমাম হলে তাকে খিলাফত বা ইমামতী হতে বঞ্চিত করা হবে। খারেজিরা মনে করে যে, কোনো মুসলমান গুনাহ করে বিনা তওবায় মারা গেলে তার জন্য অনন্তকাল ধরে জাহান্নামের শাস্তি নির্ধারিত থাকবে। তাদের মতে, একটি অন্যায় পদক্ষেপ কোনো মুসলমানকে ইসলামের বাইরে নিয়ে যায়।
খারেজিরা তাদের দলবহির্ভূত লোকদেরকে কাফের বা ধর্মদ্রোহী মনে করত এবং তাদের ঘোর বিরোধী ছিল। অমুসলমানদের প্রতি তারা খুব উদার ছিল। মাওয়ালীদের (অনারব মুসলিম) জন্য তাদের সহানুভূতি ছিল এবং তারা তাদেরকে আরব মুসলমানদের সমমর্যাদায় উন্নীত করার চেষ্টা করত। খারেজিদের সম্পর্কে খোদাবকস বলেন, "খারেজিরা ছিল ইসলামের বিশুদ্ধতাবাদী– ধর্মের দিক দিয়ে গোড়া এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক।"
বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্রোহঃ
মুয়াবিয়ার সৈন্যবাহিনী মক্কা ও মদিনা দখলের ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালায়। বসরাবাসীগণ বিদ্রোহ ঘোষণা করলে সেখানকার শাসনকর্তা হযরত ইবন আব্বাসের সহকারী জিয়াদ এ বিদ্রোহ কঠোর হস্তে দমন করেন। আহওয়াজ ও কিরমানে বিদ্রোহ দেখা দিলে হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) সে বিদ্রোহ দমন করতে সক্ষম হন।
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) ও মুয়াবিয়ার মধ্যে আপোষ মীমাংসাঃ
এরূপে খিলাফতের বিভিন্ন স্থানে বিদ্রোহ ও অশান্তি দেখা দিলে হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে মুয়াবিয়ার সাথে সন্ধি চুক্তি করতে সম্মত হন। সন্ধি অনুযায়ী সিরিয়া ও মিসর মুয়াবিয়ার শাসনাধীনে থাকবে এবং সাম্রাজ্যের অবশিষ্টাংশ হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু)- এর শাসনে থাকবে। এভাবে খলিফা হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) ও মুয়াবিয়ার মধ্যে সংঘটিত গৃহযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে।
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) ও মুয়াবিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফলাফলঃ
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) ও মুয়াবিয়ার মধ্যে যে নীতিগত বিরোধ ও সশস্ত্র সংঘর্ষ সংঘটিত হয় তার ফলাফল ছিল সুদূর প্রসারী। নিঃসন্দেহে এ বিবাদ ইসলামের সংহতি ও সমৃদ্ধির পক্ষে ঘোর অমঙ্গলজনক হয়েছিল।
সাম্রাজ্যের বিভক্তিকরণ সন্ধিঃ
দুমার সালিশী এবং খারিজী বিপ্লবের পরিপ্রেক্ষিতে হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) মুয়াবিয়ার সাথে ন্যক্কারজনক সন্ধি সম্পাদন করে খিলাফতকে সংকুচিত করেন। এই সন্ধির শর্ত অনুসারে সিরিয়া ও মিসরের যাবতীয় কর্তৃত্ব আমীরে মুয়াবিয়ার উপরে ন্যস্ত হয়। সাম্রাজ্যের অবশিষ্টাংশে হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু)- এর কর্তৃত্ব বজায় থাকে। ফলে খিলাফতের সংহতি বিনষ্ট হয়।
খিলাফতের মর্যাদা লোপঃ
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) এবং মুয়াবিয়ার মধ্যে সাম্রাজ্য বন্টনের ফলে খিলাফতের বৈশিষ্ট্য ও বুনিয়াদ ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে খলিফা ও খিলাফতের প্রতি জনসাধারণের ভক্তি ও শ্রদ্ধা লোপ পেতে থাকে। এক খলিফার নিয়ন্ত্রণে জাতীয় চেতনা ও ধর্মীয় ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ জনসাধারণের মনে এ যাবত খলিফার কার্যকলাপের প্রতি যে সংশয় ছিল না, তা এখন সূচিত হয়।
খারেজিদের উদ্ভব ও নাশকতামূলক তৎপরতাঃ
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) এবং মুয়াবিয়ার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফলে ইতিহাসে "খারেজি" নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দলের উদ্ভব হয়। তারা সর্বদা নাশকতামূলক কার্যে লিপ্ত থেকে খিলাফতের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করে। খারেজিরা হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু)-এর খিলাফতের এবং উমাইয়া ও আব্বাসীয়া খিলাফতেও অরাজকতা সৃষ্টি করে।
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) এর মৃত্যু এবং গণতন্ত্রের পরিবর্তে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠাঃ
খলিফা হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) ৬৬১ খ্রিস্টাব্দে খারেজি সম্প্রদায়ের আবদুর রহমান ইবনে মুলজাম কর্তৃক ছুরিকাঘাতে নিহত হন। তাঁর মৃত্যুর সাথে সাথেই খিলাফতের অবসান ঘটে এবং মুয়াবিয়া খিলাফতে অধিষ্ঠিত হয়ে বংশানুক্রমিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। ফলে ইসলামের সাম্য, মৈত্রী ও ঐক্যে ফাটল ধরে। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক পি. কে. হিট্টি বলেন, বংশানুক্রমে সংঘটিত যে সংঘর্ষসমূহ ইসলামের ভিত্তিমূলকে প্রচণ্ডভাবে আন্দোলিত ও শক্তিহীন করে তার উৎপত্তি এখানেই নিহিত।
উমাইয়াদের নৃশংস কার্যাবলি ও এর প্রতিক্রিয়াঃ
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) ও মুয়াবিয়ার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফলে পরবর্তীকালে ইমাম হাসানকে বিষ প্রয়োগে হত্যা; মারজরাহিতের যুদ্ধ, আরাফাতের যুদ্ধ এবং কারবালার মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞের দ্বারা ইমাম হুসাইন পরিবারের হৃদয়বিদারক পরিসমাপ্তি ঘটে। উমাইয়াদের এ সমস্ত নৃশংস কার্যাবলি মুসলমানদের মনকে গুরুতরভাবে ক্ষত-বিক্ষত করে। এ সমস্ত নৃশংস কার্যাবলি প্রতিক্রিয়া পরবর্তীকালে উমাইয়া বংশের পতনের পটভূমি রচনা করেছিল।
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) এর ব্যর্থতার কারণ
রাজনৈতিক অদূরদর্শিতাঃ
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) যোদ্ধা ও বিদ্বান হিসেবে মুয়াবিয়া অপেক্ষা অধিকতর শ্রেষ্ঠ হলেও রাজনীতিবিদ হিসেবে তাঁর সমকক্ষ ছিলেন না। শুভাকাঙ্খীদের পরামর্শ উপেক্ষা করে তিনি মুয়াবিয়ার ন্যায় প্রভাবশালী শাসনকর্তাকে অপসারণ করে রাজনৈতিক অদূরদর্শিতার পরিচয় দেন। কিন্তু মুয়াবিয়ার মত বিচক্ষণ ও শক্তিশালী ব্যক্তির সাথে সৌহার্দ্য রক্ষা করে চললে হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) তাঁর রাজনৈতিক জীবনের দুর্যোগ এড়াতে ও খিলাফতের শক্তি সঞ্চয়ে সক্ষম হতেন। কিন্তু তিনি সিফফীনের যুদ্ধে চূড়ান্ত জয়লাভের মুহূর্তে যুদ্ধ বন্ধ করে এবং পরবর্তী সময়ে মুয়াবিয়ার সাথে অহেতুক আপোষ মীমাংসা করে নিজের পতনকে ত্বরান্বিত করেন।
হযরত উসমান (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) এর হত্যাকারীদের শাস্তি প্রদানে দীর্ঘ সুত্রীতাঃ
হযরত আলী (রাদিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) খিলাফতে অধিষ্ঠিত হওয়ার সাথে সাথে হযরত তালহা, হযরত যুবাইর, হযরত আয়েশা (রাদিআল্লাহু তা'য়ালা আনহা) ও মুয়াবিয়া হযরত উসমান (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু)- এর হত্যাকারীদের শাস্তি প্রদানের দাবি জানান। খিলাফতে শান্তি ও শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) হত্যাকারীদের শাস্তি প্রদানের ব্যাপারটি স্থগিত রেখে মারাত্মক ভুল করেন এবং পরিণামে নিজের সর্বনাশ ডেকে আনেন।
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু)- এর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের সুবিধাঃ
উষ্ট্রের যুদ্ধের মর্মান্তিক পরিণতির জন্য প্রকৃতপক্ষে হযরত উসমান (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) এর হত্যার অপরাধীরাই ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে অবস্থার চাপে পড়ে অথবা ঘটনাচক্রে হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু)-কে তাদের উপর নির্ভর করতে হয়। অন্য কথায় তারা হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু)- এর প্রধান সমর্থক হয়। এতে মুয়াবিয়া হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু)- এর বিরুদ্ধে দুষ্কৃতকারীদের প্রশ্রয় ও আশ্রয়দানের অভিযোগ আনার সুযোগ পান। এ অপপ্রচার সাধারণ মানুষের মনে খলিফার প্রতি বিষিয়ে তুলে এবং তারা খলিফার আন্তরিকতায় সন্দিহান হয়ে ওঠে। এটিও হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু)-এর ব্যর্থতার গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
হযরত তালহা ও হযরত জুবাইয়ের মৃত্যুতে হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু)-এর ক্ষতি
খিলাফতের উপর স্বীয় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার সময় খলিফা হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) পাননি। কেননা হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু)- এর খিলাফত প্রাপ্তির চতুর্থ মাসে সংঘটিত উষ্ট্রের যুদ্ধে হযরত তালহা, হযরত জুবাইর ও হযরত আয়েশা (রাদিআল্লাহু তা'য়ালা আনহা)-এর সম্মিলিত সৈন্য বাহিনীর বিরুদ্ধে তাঁকে অবতীর্ণ হতে হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে এ যুদ্ধে জয়লাভের ফল হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু)-এর কোনো লাভ হল না। কারণ যুদ্ধক্ষেত্রে দুষ্কৃতিকারীগণ কর্তৃক হযরত তালহা ও হযরত জুবাইরের হত্যার ফলে হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) এর শক্তি হ্রাস পায়। অপরদিকে হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) উষ্ট্রের যুদ্ধে ব্যস্ত থাকার সুযোগে মুয়াবিয়া যথেষ্ট শক্তি সঞ্চয় করে। অধিকন্তু; হযরত আয়েশা (রাদিআল্লাহু তা'য়ালা আনহা) এর সাথে হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) প্রকাশ্য সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ায় মহানবী (সাল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম)- এর ধর্মভীরু অনুসারীদের সাহায্য ও সহানুভূতি লাভে হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) ব্যর্থ হন। এই পরিস্থিতিও মুয়াবিয়ার জন্য বিশেষ সুযোগের সৃষ্টি হয়েছিল।
হযরত আবু মুসা আল-আশআরী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) এর অদূরদর্শিতাঃ
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) দুমার মীমাংসায় তাঁর পক্ষে বয়োবৃদ্ধ ও সরলমনা হযরত আবু মুসা আল-আশআরীকে সালিস নিয়োগ করে মারাত্মক ভুল করেন। কারণ আবু মুসা (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) মুয়াবিয়ার ধূর্ত সালিস আমর ইবন আল-আসের সূক্ষ্ম দাবার চালের অন্তর্নিহিত গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারেন নি। কাজেই চরম সমস্যাপূর্ণ ব্যাপারে এহেন সরলমনা ব্যক্তির উপর নির্ভরশীলতা হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) এর পতনকে ত্বরান্বিত করেছে।
কুফাবাসীদের বিশ্বাসঘাতকতাঃ
মদিনা হতে কুফায় রাজধানী পরিবর্তন করে হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) মারাত্মক ভুল করেন। এর ফলে তিনি মক্কা-মদিনার প্রভাবশালী কুরাইশদের আস্থা হারান। কেননা কুফাবাসীরা কুরাইশ আভিজাত্যের পরিপন্থী ছিল। তাছাড়া তাদের কোনো চারিত্রিক দৃঢ়তা ছিল না। তারা ছিল অত্যাধিক চপলমতি ও আবেগপ্রবণ। গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে তিনি তাদের নিকট হতে আশানুরূপ সাহায্য ও সহানুভূতি লাভে ব্যর্থ হন। অন্যদিকে মুয়াবিয়ার শক্তির উৎস সিরিয়ার জনগণ সকল অবস্থায় তাঁর পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছিল।
বিভিন্ন স্থানে বিদ্রোহঃ
সাম্রাজ্যের বিভিন্ন প্রদেশ বিশেষ করে মিসর, বসরা, পারস্যে বিদ্রোহ দেখা দেওয়ায় হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হন। এ বিদ্রোহের সুযোগ নিয়ে মুয়াবিয়া মিসর দখল করে নিজের বিজয়ের পথকে সুপ্রশস্ত করেছিলেন।
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) এর শাহাদাত, ২৭ জানুয়ারি, ৬৬১ খ্রিঃ
বিদ্রোহ খারেজিগণ হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু), মুয়াবিয়া ও আমর ইবন আল-আসকে ইসলামের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনাশের কারণ বলে দায়ী করে। তাই তারা এ তিনজনকে একই দিনে হত্যা করার গোপন ষড়যন্ত্র করে সিদ্ধান্ত নেয় যে, কুফা, দামেস্ক ও ফুসতাতের মসজিদ হতে নামাজের ইমামতি শেষে ফেরার পথে তিনজন আততায়ী তাদের প্রাণ সংহার করবে। সৌভাগ্যক্রমে আমর নির্দিষ্ট দিনে মসজিদে অনুপস্থিত ছিলেন। মুয়াবিয়া সামান্য আহত হলেও প্রাণে রক্ষা পেলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে আব্দুর রহমান ইবন মুলজামের বিষাক্ত ছুরির অব্যর্থ আঘাতে হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) গুরুতররূপে আহত হন (২৪ জানুয়ারি, ৬৬১ খ্রিঃ)। ৬৬১ খ্রিঃ ২৭ জানুয়ারি হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) শাহাদাত বরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর সাথে সাথে ধর্মীয় সারল্যের উপর প্রতিষ্ঠিত খুলাফায়ে রাশেদিনের পবিত্র খিলাফতের পরিসমাপ্তি ঘটে।
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) এর চরিত্র ও কৃতিত্ব
আদর্শ চরিত্রঃ
ঐতিহাসিক মাসুদীর বর্ণনা মতে, মুসলিম জাহানের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) রক্তিম বর্ণবিশিষ্ট, দীর্ঘশ্মশ্রু, ঘনভ্রূসহ প্রশস্ত নেত্র ও উজ্জ্বল টাকবিশিষ্ট মধ্যম আকৃতির দেহের অধিকারী ছিলেন। আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের একনিষ্ঠ প্রেমিক, বিশ্বাসে দৃঢ়, রণক্ষেত্রে সাহসী, ব্যক্তিগত আচরণে ন্যায়পরায়ণ এবং আলোচনায় সুবিজ্ঞ হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) ইসলামী গুণাবলীর মহান আদর্শ স্থাপন করেছিলেন। তিনি ছিলেন সকল যুদ্ধে নবীর বিশ্বস্ত সঙ্গী, পূর্ববর্তী খলিফাদের সুহৃদ ও পরামর্শদাতা, রিক্তের বন্ধু, ধর্মের অনুসারী এবং ন্যায়পরায়ণতার ধ্বজাধারী।
সরল ও অনাড়ম্বর জীবনঃ
মহানবী (সাল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও ইসলামের আদর্শসমূহের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ভালোবাসা হিসেবে হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু)-এর জীবন সরলতা ও সংযমে বিভূষিত ছিল। তিনি ছিলেন সরলতা ও আত্মত্যাগের মূর্ত প্রতীক। মুসলিম জাহানের খলিফা হয়েও তিনি এবং তাঁর স্ত্রী হযরত ফাতেমা (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) স্বহস্তে সংসারের কাজ করতেন। দরিদ্রতা ছিল তাঁর নিত্য সঙ্গী। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি থাকা-খাওয়া, বেশভূষা ইত্যাদিতে মহানবী (সাল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও পূর্ববর্তী খলিফাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করতেন। স্বচ্চ, সরল, অনাড়ম্বর ও নিষ্কলুষ জীবন যাপন করতে তিনি গর্ববোধ করতেন। কর্ণেল ওসবর্ণ তাঁকে "সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ আত্মবিশিষ্ট মুসলমান" বলে অভিহিত করেছেন।
ইসলামের সেবাঃ
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) মাত্র দশ বছর বয়সে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। বালকদের মধ্যে তিনিই প্রথম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। মহানবী (সাল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর বীরত্বে মুগ্ধ হয়ে 'আসাদুল্লাহ' (আল্লাহর সিংহ) উপাধিতে ভূষিত করেন। তাঁর সামরিক দক্ষতা ও দূরদর্শিতার কারণেই ইসলামী রাষ্ট্রের সামরিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বহু নতুন পরিকল্পনা সংযোজিত হয়েছিল।
তাঁর পান্ডিত্যঃ
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) অসাধারণ পান্ডিত্য, স্মৃতি শক্তি ও জ্ঞান-গরিমার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তিনি কুরআন, হাদিস, কাব্য দর্শন ও আইনশাস্ত্রে প্রগাঢ় ব্যুৎপত্তি অর্জন করেছিলেন। কুরআনের ব্যাখ্যাকারী হিসেবেও তিনি উচ্চ মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। হাদিস বা সুন্নাহ সংরক্ষণেও তাঁর যথেষ্ট অবদান ছিল। তাঁর লিখিত 'দীওয়ানে আলী' আরবি সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ। তাঁরই তত্ত্বাবধানে আবুল আসওয়াদ সর্বপ্রথম আরবি ব্যাকরণ রচনা করেন। এ সমস্ত কারণে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু তা'য়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, "আমি জ্ঞানের নগরী এবং আলী এর দ্বারস্বরূপ।"
দূরদর্শিতা ও কঠোরতার অভাবঃ
হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) মহানুভব, দয়ালু, সহিষ্ণু ছিলেন। তাঁর চরিত্রের বহু গুণের সমাবেশ থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, সতর্কতা ও সময়োপযোগী তৎপরতার অভাব দেখা যায়। সমঝোতা এবং আপোষের মাধ্যমে সকল সমস্যার সমাধান করতে চেয়ে তিনি মারাত্মক ভুল করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে উইলিয়ম মূইর বলেন, "সমঝোতা এবং দীর্ঘসূত্রতা তাঁর পতনের অনিবার্য কারণ হয়েছে।" বস্তুত তাঁর সদাশয়তা ও উদারতার সুযোগ গ্রহণ করে স্বার্থন্বেষী মহল তাঁর চরম সর্বনাশ করে। ঐতিহাসিক আমীর আলী বলেন, তাঁর চরিত্রে যদি উমরের কঠোরতা থাকত তবে তিনি দুর্দান্ত আরব জাতিকে আরও কৃতকার্যতার সাথে শাসন করতে সমর্থ হতেন। কিন্তু তাঁর ক্ষমাশীলতা ও উদারতাকে ভুল বুঝা হল এবং তাঁর সদাশয়তা ও সত্যপ্রিয়তাকে শত্রুগণ নিজেদের সুবিধার্থে ব্যবহার করল।" ফলে তাঁকে খিলাফত ও নিজের জীবন বিসর্জন দিতে হয়।
ইমাম হাসান (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) ৬৬১ খ্রিঃ
খলিফা হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) এর ইন্তেকালের পর তাঁর জ্যৈষ্ট পুত্র ইমাম হাসান (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) কুফাবাসীগণ কর্তৃক খলিফা মনোনীত হন। মক্কা ও মদিনার অধিবাসীগণ তাঁর আনুগত্য স্বীকার করে নেন। তিনি ছিলেন রাজনীতি ও সমরনীতিতে অনভিজ্ঞ। রাজনীতি অপেক্ষা ধর্মচর্চায় তাঁর বেশি আগ্রহ ছিল। প্রকৃতপক্ষে, খিলাফতের চরম সংঘাতের দিনে তিনি মুসলিম জাহানের রাজনৈতিক দায়িত্ব গ্রহণের অনুপযোগী ছিলেন। ইমাম হাসানের (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) ন্যায় সরল ও দুর্বল ব্যক্তিকে খলিফা নিযুক্ত করা উচ্চাভিলাসী মুয়াবিয়ার পথ পরিষ্কার হয়ে ওঠে। ইতোপূর্বে তিনি শুধু সিরিয়া ও মিসরের অধিপতি ছিলেন। এখন নিজেকে সমগ্র মুসলিম জাহানের একচ্ছত্র খলিফা বলে ঘোষণা করেন। ফলে আরব জাহানের দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী খিলাফতের সূত্রপাত হল এবং ইমাম হাসানের (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) সাথে তাঁর সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে ওঠে।
মুয়াবিয়া খিলাফতের এই অনিশ্চয়তা দূরীকরণার্থে বিপুল সৈন্যসহ কুফা আক্রমণ করেন। ইমাম হাসান (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) তাঁর ৪০,০০০ সৈন্যবাহিনীকে দুই ভাবে বিভক্ত করে মুয়াবিয়ার সিরিয়া বাহিনীর গতিরোধের জন্য সেনাপতি কায়েসের নেতৃত্বে ১২,০০০ সৈন্যসহ একটি দল প্রেরণ করেন এবং প্রধান সৈন্যদলসহ তিনি মাদায়েনের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। সেনাপতি কায়েস প্রাণপণে সিরীয় বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে তাদের প্রতিরোধ করতে থাকেন। এদিকে স্বভাব সুলভ কূটনীতিবিদ মুয়াবিয়া গুজব ছড়ালেন যে, কায়েস যুদ্ধক্ষেত্রে পরাজিত ও নিহত হয়েছেন। এতে ইমাম হাসানের (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) সৈন্য দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিল। ইমাম হাসান (রাদ্বিআল্লাহু তাআলা আনহু) সৈন্যবাহিনীকে এ গুজবে বিশ্বাস না করে সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে নির্দেশ প্রদান করলে তারা বিদ্রোহ ঘোষণা করে এবং লুটতরাজ শুরু করে। কুফাবাসীদের বিশ্বাসঘাতকতায় ইমাম হাসান বিচলিত হয়ে পড়লেন এবং ভগ্ন হৃদয়ে কুফা ত্যাগ করে পারস্যের রাজধানীতে আশ্রয় গ্রহণ করেন।
অবশেষে ইমাম হাসান (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) মুয়াবিয়ার নিকট বশ্যতামূলক এক সন্ধিপত্র স্বাক্ষর করেন। সন্ধির শর্তানুসারে ইমাম হাসান (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) অনুকূলে খিলাফত ত্যাগ করতে এবং মুয়াবিয়া খুৎবায় হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) এর প্রতি অভিসম্পাত বর্ষণ বন্ধ করতে সম্মত হন। সৈয়দ আমীর আলী উল্লেখ করেছেন যে, মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর হযরত আলী (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু)-এর দ্বিতীয় পুত্র হযরত হুসাইন (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) খিলাফত লাভ করবেন- এরূপ একটি শর্তও মুয়াবিয়া মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু অধ্যাপক পি. কে. হিট্টি, উইলিয়াম, মূইর, তাবারী প্রমুখ বিজ্ঞ ঐতিহাসিকদের বর্ণনায় এ শর্তের কোনো উল্লেখ নেই।
এরপর ইমাম হাসান (রাদ্বিআল্লাহু তা'য়ালা আনহু) সপরিবারে মদিনায় প্রত্যাবর্তন করে রাজকোষ হতে বৃত্তি ভোগ করতে থাকেন এবং রাজনীতি হতে সম্পূর্ণ অবসর গ্রহণ করেন। অবশেষে ৬৬৯ খ্রিস্টাব্দে মুয়াবিয়ার পুত্র ইয়াজিদের প্ররোচনায় স্বীয় স্ত্রী কর্তৃক বিষ প্রয়োগে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
*বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা কর্তৃক ২০০৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রবর্তিত ও প্রকাশিত "ইসলামের ইতিহাস" দাখিল নবম-দশম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকরূপে নির্ধারিত হতে সংগৃহীত হয়েছে।
--------------- সমাপ্ত ---------------
Comments
Post a Comment